নিউজ ডেস্ক: ভারতীয় নতুন প্রজন্মের কাছে দেশের সামরিক ইতিহাস ও বীরত্বগাঁথা তুলে ধরতে পাঠ্যক্রমে যুক্ত হলো তিন সমরনায়কের জীবন ও কৃতিত্ব। এখন থেকে ফিল্ড মার্শাল স্যাম মানেকশ, মহাবীরচক্র খেতাবপ্রাপ্ত বিগ্রেডিয়ার মোহাম্মদ উসমান এবং পরমবীরচক্র প্রাপ্ত মেজর সোমনাথ শর্মার কর্ম নিয়ে অবগত হবে দেশটির শিক্ষার্থীরা।
ভারতীয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অন্তর্ভুক্ত সংস্থা জাতীয় শিক্ষা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ পরিষদের (ন্যাশনাল কাউন্সিল অব এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং বা এনসিইআরটি) উদ্যোগে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেছেন, শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেশপ্রেম, সাহসিকতা এবং জাতীয় গৌরবের বোধ জাগ্রত করার উদ্দেশ্যে এই তিন কিংবদন্তি সেনানায়কের জীবন, বিভিন্ন যুদ্ধে তাদের অবদান এবং দেশের প্রতি তাদের আত্মত্যাগের কাহিনি ইতিহাসের অংশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
সপ্তম শ্রেণীর উর্দু এবং অষ্টম শ্রেণীর উর্দু ও ইংরেজি পাঠ্যপুস্তকে নতুন পাঠ্যক্রম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা এবং সে বছরের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে ভারতীয় সেনাবাহিনীকে অসামান্য নেতৃত্ব দেন ফিল্ড মার্শাল স্যাম মানেকশ ওরফে স্যাম বাহাদুর।
১৯১২ সালে উত্তর প্রদেশে জন্মগ্রহণকারী উসমান ভারতীয় সেনাবাহিনীর সবচেয়ে সিনিয়র মুসলিম অফিসারদের মধ্যে একজন ছিলেন যারা দেশভাগের পর পাকিস্তানে যেতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন। ১৯৪৭-৪৮ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময়, উসমানের নেতৃত্ব ঝাঙ্গার পুনরুদ্ধার এবং জম্মু ও কাশ্মীরের নওশেরা প্রতিরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণিত হয়েছিল। ওই যুদ্ধে অসীম সাহসিকতা দেখিয়ে প্রাণ উৎসর্গ করেন তৎকালীন ব্রিগেডিয়ার মোহাম্মদ উসমান। তাকে ‘লায়ন অব নওশেরা’ বলা হয়।
নয়াদিল্লিতে তার রাষ্ট্রীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় লর্ড মাউন্টব্যাটেন, প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু এবং অন্যান্য জাতীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন, যা একজন সামরিক কর্মকর্তার জন্য একটি বিরল সম্মান।
স্বাধীন ভারতের প্রথম পরমবীরচক্র খেতাবপ্রাপ্ত মেজর সোমনাথ শর্মা ১৯৪৭ সালের কাশ্মীর যুদ্ধে শেষ নিশ্বাস পর্যন্ত লড়াই করেন।
শিক্ষাবিদদের মতে, এই উদ্যোগ কেবল ইতিহাস শেখানোর জন্য নয়, বরং তরুণ প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করার জন্যও তাৎপর্যপূর্ণ।




