স্পোর্টস ডেস্ক: বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলে প্রথম প্রবাসী ফুটবলার হিসেবে ২০১৩ সালে অভিষেক হয়েছিল জামাল ভূঁইয়া। ডেনমার্ক থেকে লাল-সবুজের জার্সি গায়ে জড়াতে এসেছিলেন তিনি। সে সময় তাকে নিয়ে দেশের ফুটবল সমর্থকদের বেশ উন্মাদনা ছিল। তবে তারপর একে একে তার পথ ধরে এসেছেন তারিক কাজী, শাহ কাজেমসহ আরও কয়েকজন। সবার ক্ষেত্রেই সমর্থক ও গণমাধ্যমে উচ্ছ্বাস ছিল বেশ।
তবে এবার হামজা চৌধুরী আসার পর যেমনটা দেখা গেল তেমনটি আগে কোনো সময় দেখা যায়নি। হামজা বাংলাদেশের মাটিতে পা দেওয়ার পর থেকে কোনো বিশ্রাম নেই। সিলেটে নিজের গ্রামের বাড়ি, তারপর ঢাকা গণমাধ্যম আর ফুটবল সমর্থকরা তার পিছুই ছাড়ছে না। যা দেখে নিজের অতীতের কথা মনে পড়েছে জামাল ভূঁইয়ার। তবে উন্মাদনায় গা ভাসিয়ে নিজেদের লক্ষ্য ভুলে যাননি তিনি।
দেশের প্রথম প্রবাসী ফুটবলার হিসেবে খেলতে আসা জামাল বর্তমানে দলের অধিনায়ক। গতকাল বুধবার ইংল্যান্ড প্রবাসী ফুটবলার হামজাকে পাশে নিয়ে নিজের অতীতে ফিরে গেছেন তিনি। জামাল বলেন, ‘যখন আমি এসেছিলাম তখনও একই রকম পরিবেশ ছিল। আমাকে নিয়েও উন্মাদনা ছিল। আর এখন একজন প্রিমিয়ার লিগের খেলোয়াড় হিসেবে হামজার দলে আসা যেন আমাদের মেসি আসার মতো ব্যাপার। প্রত্যেকেরই (দলের) তার প্রতি অনেক শ্রদ্ধা রয়েছে। তারা জানে হামজা দলকে কী এনে দিতে পারে।’
নিজের দেখানো পথ ধরে যেভাবে একের পর এক প্রবাসীরা আসছে বিষয়টি উপভোগ করছেন জামাল। তিনি বলেন, ‘(আমার দেখানো পথে প্রবাসীদের আসা দেখে) অবশ্যই ভালো লাগে। যেভাবে হামজাকে স্বাগত জানানো হয়েছে, সেটা অসাধারণ। আমি আগে শুরু করেছি, আমি মনে করি, এটা বিশ্বের নানা প্রান্তের ফুটবলারদের বাংলাদেশের হয়ে খেলার জন্য অনুপ্রাণিত করেছে, একজন ফুটবলার হিসেবে সর্বোচ্চ প্রাপ্তি আপনি দেশকে প্রতিনিধিত্ব করেই পেতে পারেন। আমি মনে করি, ২৫ মার্চে সে যখন জাতীয় সংগীত শুনবে, তখন তার লোম কাঁটা দিয়ে উঠবে। এটা আমারও হয়েছিল, আমি মনে করি, হামজারও একই অনুভূতি হবে।’
এ সময় ভারতের বিপক্ষে নিজেদের ম্যাচকে এই অঞ্চলের সবচেয়ে হাইভোল্টেজ ম্যাচ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন লাল-সবুজের অধিনায়ক। তিনি বলেন, ‘আমাদের ম্যাচ তো ভারতের সঙ্গে, তো অবশ্যই সেটি ঘিরে উত্তেজনা রয়েছে। তবে হামজার অন্তর্ভুক্তির কারণে এটি আরও আকর্ষণীয় হবে, বিশেষ করে বাংলাদেশের জন্য। কারণ সবাই চায় আমরা যেন জিতি। আমি মনে করি, প্রতিটি ভারত-বাংলাদেশ ম্যাচেই একটা আলাদা উত্তেজনা থাকে, সবাই আগ্রহী থাকবে। এমনকি ভারতীয় সাংবাদিকদের সংখ্যাও দ্বিগুণ হবে, তাদেরও আকর্ষণ থাকবে। তাই এটি স্বাভাবিক ব্যাপার। যদি আমরা পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলি, তখনও একই রকম পরিবেশ হবে, কারণ বাংলাদেশ, ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে ঐতিহাসিক এক প্রতিদ্বন্দ্বিতা রয়েছে। এই ম্যাচটি বেশ হাই-ভোল্টেজের হতে যাচ্ছে এবং আমার মতে, এটি এই অঞ্চলের সবচেয়ে বড় লড়াই হতে চলেছে। তাই এটি খুব স্বাভাবিক ঘটনা। হামজা আসাতে সবাই খুশি। এটা দেখে আমারও ভালো লাগছে। সবারই ভালো লাগছে তবে আমাদের লক্ষ্য থাকবে শুধু ম্যাচ নিয়েই।’
এদিকে বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের বিপক্ষে ম্যাচ সামনে রেখে আন্তর্জাতিক ফুটবলের চতুর্থ সর্বোচ্চ গোলদাতা সুনীল ফিরেছেন ভারতের আক্রমণভাগে। ভারত-বাংলাদেশ ম্যাচে সুনীল বনাম হামজা দ্বৈরথ কি না, এমন প্রশ্নে কোনো তুলনায় যেতে রাজি নন জামাল। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি না, সুনীল ও হামজার তুলনা করা ঠিক। সুনীল খুবই ভালো খেলোয়াড় এবং তার দেশের জন্য সে অসাধারণ কিছু করেছে, কিন্তু বাস্তব কথা হলো, হামজাও প্রিমিয়ার লিগের খেলোয়াড়।’