নিউজ ডেস্ক: আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল জানিয়েছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের শাসনামলে শহীদ আবু সাঈদ হত্যার বিচার করা হবে। বুধবার (১৬ জুলাই) দুপুরে শহীদ আবু সাঈদের শাহাদতবার্ষিকী ও ‘জুলাই শহীদ দিবস’ উপলক্ষ্যে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
আইন উপদেষ্টা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেই আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডের বিচার সম্পন্ন হবে। আমরা এমন বিচার করতে চাই যা সারা পৃথিবীর কাছে গ্রহণযোগ্য হবে।
আসিফ নজরুল বলেন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা আছে। আমি বলতে পারি না যে এই সময়ের মধ্যে বিচার হবে। এতে হস্তক্ষেপ করা হয়। কিন্তু আমি যতটুকু জানি আমার সঙ্গে প্রসিকিউশন টিমের কথা হয়, আমি নিশ্চিত এবং আমার দৃঢ়বিশ্বাস আমাদের সরকারের শাসনামলে আপনারা আবু সাইদ হত্যাকাণ্ডের বিচার দেখে যাবেন।
বিচারে একটু দেরি হলেও অপরাধীদের শাস্তি হবে বলে জানান আইন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, একটি বিচারকার্য সুষ্ঠুভাবে এবং সারা পৃথিবীর কাছে গ্রহণযোগ্য করতে আমাদের সবকিছু চিন্তা করতে হয়। শেখ হাসিনা কথায় কথায় তার বাবার মৃত্যুর কথা বলতেন। এরপরও তার বাবার হত্যার বিচার করতে সাড়ে তিন বছর সময় লেগেছে। আমরা সেই শেখ হাসিনার আমলে বিচার করতে আসিনি। শেখ হাসিনার আমলের মতো যারে-তারে ধরে ফাঁসি দিয়ে দিলাম! আমরা আশাবাদী, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শাসনামলে আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডের বিচার আপনারা দেখে যাবেন।
আসিফ নজরুল তার বক্তব্যে আবু সাঈদের বীরোচিত ভূমিকার কথা স্মরণ করেন।আবু সাঈদের আদর্শ ছিল, সত্য, ন্যায় ও আদর্শের পক্ষে। তার মৃত্যুবরণ হাজার হাজার অন্যায়কারীর বেঁচে থাকার চেয়ে সম্মানের ও শ্রদ্ধা।
আবু সাঈদের বীরত্ব নিয়ে আসিফ নজরুল বলেন, এত বড় বীরত্ব এটা রিয়ালাইজ করতে আমাদের অনেক বছর লাগবে। আবু সাঈদের ঘটনার দিনে প্রতিবাদ করে আরও পাঁচজন প্রাণ হারিয়েছে। চট্টগ্রাম কলেজের একজন ছাত্র ছিল ওয়াসিম। ততক্ষণে সবাই জেনে গেছে এভাবে দাঁড়ালে পুলিশ গুলি করবে তারপরও দেশের শত শত তরুণ গুলির সামনে দাঁড়িয়ে আত্মাহুতি দিয়েছে।
এদিকে চীনের অর্থায়নে উত্তরাঞ্চলে প্রস্তাবিত হাসপাতাল নিয়েও আসিফ নজরুল কথা বলেন। চায়নার যে হাসপাতালটি এখানে (রংপুরে) নির্মাণ করার কথা আছে, সেটিকে ঘিরে একটি সর্বাধুনিক হেলথ সিটি নির্মাণ করার পরিকল্পনা আমাদের প্রধান উপদেষ্টা রয়েছে। লালমনিরহাটে যে বিমানবন্দর আছে, সেটিকে সর্বাধুনিক করে গড়ে তোলার চেষ্টা করা হচ্ছে। আপনাদের সন্তানেরা আমাদের চিরঋণী করে রেখেছেন। আমরা আপনাদের মনে রাখবো।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন শহীদ আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা স্মারক মাঠে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শওকত আলী। এ সময় বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এসএমএ ফায়েজ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়ের ও মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য প্রফেসর ড. তানজীমউদ্দীন খান উপস্থিত ছিলেন।