নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশে নির্বিচারে গণ গ্রেফতার ও প্রতিশোধমূলক সহিংসতা বন্ধের জন্য অর্ন্তবর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেআন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।
এ ছাড়া অন্তর্বর্তী সরকারকে দ্রুত গুম বিষয়ক অনুসন্ধান কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) বিলুপ্ত করারও জোর দাবি জানিয়েছে সংস্থাটি। বিতর্কিত সাইবার নিরাপত্তা আইনের পরিবর্তে অন্তর্বর্তী সরকার যে নতুন অধ্যাদেশ চালু করেছে দুর্ভাগ্যজনকভাবে তাতে আগের আইনের মতো বেশ কিছু ক্ষতিকর ধারা-উপধারা রাখা হয়েছে বলেও প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
জুলাই গণঅভ্যুত্থান এবং বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে প্রকাশিত হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ৫০ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে এসব বলা হয়েছে।
‘আফটার দ্য মুনসুন রেভল্যুশন: আ রোডম্যাপ টু লাস্টিং সিকিউরিটি সেক্টর রিফর্ম ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এ প্রতিবেদনে অন্তর্বর্তী সরকারকে আটকের ক্ষেত্রে আইন অনুসরণ ও সমালোচকদের দমনের জন্য ব্যবহৃত আইন বাতিলের সুপারিশ করা হয়েছে। সংস্কারের ক্ষেত্রে ক্ষমতার পৃথকীকরণ এবং জনপ্রশাসন, পুলিশ, সামরিক, বিচার বিভাগসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্ব দিতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে এই প্রতিবেদনে।
বাংলাদেশে স্থায়ী সংস্কার নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তী সরকারকে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তর এবং জাতিসংঘের মানবাধিকার বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে কারিগরি সহায়তা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশে নির্বিচারে গ্রেপ্তার এবং প্রতিশোধমূলক যে সহিংসতা তৈরি হয়েছিল, গত বছরের অগাস্টে গণ বিক্ষোভের মুখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী সরকারের পতনের পর তাতে একটি স্থায়ী সংস্কার করা জরুরি হয়ে পড়েছে।দীর্ঘমেয়াদী পরিবর্তন নিশ্চিত করতে জাতিসংঘের সমর্থনকে অন্তর্বর্তী সরকারের স্বাগত জানানো উচিত বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়ার পরিচালক এলেইন পিয়ারসন বলেন, প্রায় এক হাজার বাংলাদেশি গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছে, শুরু হয়েছে একটি যুগান্তকারী অধ্যায়ের। বাংলাদেশে একটি অধিকার ও সম্মানজনক ভবিষ্যত গড়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে।
ভবিষ্যতের সরকারের যে কোন দমন পীড়নকে প্রতিহত করতে দ্রুত ও কাঠামাগত সংস্কার করতে না পারলে অন্তর্বর্তী সরকারের কষ্টে অর্জিত অগ্রগতি সফল হবে না” বলে উল্লেখ করেছেন পিয়ারসন। মার্চ মাসে অনুষ্ঠিতব্য মানবাধিকার কাউন্সিলের অধিবেশনে একটি ঐকমত্য প্রস্তাব আনতে অন্তর্বর্তী সরকারকে আহ্বান জানানো হয়েছে। যাতে সংস্কার প্রক্রিয়াকে সমর্থন করার জন্য জাতিসংঘের অব্যাহত পর্যবেক্ষণ ও প্রতিবেদন নিশ্চিত করা যায় এবং সরকারকে মূল কাঠামোগত সংস্কারের উপর জোর দেয়া উচিত বলেও উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।