ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি : বয়সের ভারে নুয়ে পড়েছেন কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার সাবেক ছিটমহল দাসিয়ারছড়া মধ্য সমন্বয়টারী গ্রামের বৃদ্ধ আব্দুল জলিল। ৬৫ পেরিয়ে গেলেও ন্যাশনাল আইডি কার্ডে তার বয়স মাত্র ৩৮ বছর হওয়ায় সমাজসেবা অধিদপ্তরের বয়স্ক ভাতার তালিকা থেকে তার নামটি বাদ দেয়া হয়েছে।
আব্দুল জলিল ক্ষণে ক্ষণে আইডি কার্ড দেখিয়ে কান্না জড়িত কন্ঠে সবাইকে বলছেন, মোর আইডি কার্ডটা ঠিক করে দ্যাও বাহে। আইডি কার্ডটা ঠিক হলে মুই বয়স্ক ভাতা পাইম। সেই টাকা দিয়া হামরা দুই স্বামী স্ত্রী কোনরকমে চলতে পারমো। আব্দুল জলিলের শারীরিক অবস্থা এতই খারাপ যে সামান্য হাঁটলেই একটু বসে যেতে হয় দম ফেরাতে। মাঝে মাঝে স্ত্রীর সহযোগিতা নিয়েও চলাফেরা করতে হয় তাকে। আব্দুল জলিল খোকার দুই ছেলে থাকলেও এখন বড় ছেলের বাড়িতে কোনরকমে জীবন যাপন করছেন তারা।
এলাকাবাসী আব্দুল খালেক ও মকবুল মিয়া জানান, আব্দুল জলিলের কোন সম্পত্তি নেই। তাই বড় ছেলের বাড়িতে তার স্ত্রীকে নিয়ে কোনরকমে জীবন যাপন করছেন। আগে বয়স্ক ভাতা পেতো কিন্তু আইডি কার্ডের ভুলের কারণে সেটি থেকেও বাদ পড়েছে।
বৃদ্ধ আবদুল জলিলের কাছ থেকে জানা যায়, আইডি কার্ডের ভুলের জন্য বয়স্ক ভাতা থেকে নাম বাদ পড়েছে। তার কোন জমা জমিও নেই। আব্দুল জলিলের স্ত্রী জানান, বৃদ্ধ স্বামীকে নিয়ে খুব কষ্টে আছি। স্বামীর বয়স্ক ভাতা করে দেয়ার জন্য আকুতি করেন তিনি।
বাংলাদেশ ভারত ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটির দাসিয়ার ছড়া ইউনিটের সভাপতি আলতাফ হোসেন জানান, আব্দুল জলিল খুব গরীব মানুষ। তার বয়স ৬৫ বছরেরও বেশি, তাই আমি সরকারকে অনুরোধ জানাবো দ্রুত আইডি কার্ডটি ঠিক করে দেয়ার জন্য যাতে তিনি বয়স্ক ভাতা পান।
এ ব্যাপারে ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাচন অফিসার মাহবুবা রহমান জানান, ভোটার হওয়ার সময় তিনি ১৯৮৭ সালের একটি জন্ম নিবন্ধন কার্ড সাবমিট করেছিলেন। সেই কারণেই তার বয়স ৩৮ বছর হয়েছে। এখন আইডি কার্ডটি সংশোধনের জন্য জন্ম নিবন্ধন কার্ড সংশোধন করে আবেদন করলে বিষয়টি দেখা হবে।