ঢাকা  মঙ্গলবার, ৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ; ২০শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ          সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

spot_img
Homeআইন ও আদালতআন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারকাজ শুরু

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারকাজ শুরু

নিউজ ডেস্ক : জুলাই ও আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে সংঘটিত গণহত্যার বিচার কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল জানায়, জুলাই- আগস্ট গণহত্যায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা চাইবে প্রসিকিউশন।

সকাল ১০টার পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারপতিরা এ নিয়ে বিচারকাজ শুরু করেন। গণহত্যার হুকুম ও সরাসরি জড়িতদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করবেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা ও প্রসিকিউশন টিম।

জানা গেছে, এদিন আসামিদের বিরুদ্ধে আবেদন করবেন রাষ্ট্রপক্ষের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। কিন্তু এবার গণহত্যার প্রথম অভিযোগ কার এবং কত জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হবে সেটি এখন দেখার বিষয়।

চিফ প্রসিকিউটর সাংবাদিকদের জানান, জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় গণহত্যার ঘটনায় করা মামলার বিচার করতে নিয়োগ পাওয়া ট্রাইব্যুনালের তিন বিচারপতি যোগ দিয়েছেন। অভিযোগ যাচাই-বাচাই ও তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনার প্রয়োজনে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আর্জিও জানানো হবে।

তাজুল ইসলাম ১৫ অক্টোবর আরও বলেছিলেন, আমরা বিচারের শুরুর দিন কয়েকটি আবেদন করবো।

১৬ অক্টোবর ট্রাইব্যুনালের এজলাস কক্ষে বিচারপতিদের সংবর্ধনা দেয়া হয়। এ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন বিচারপতির বেঞ্চ এজলাসে বসবেন।

১৫ অক্টোবর নিয়োগের পর প্রথম কর্মদিবসে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আসেন ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদার। এছাড়া ট্রাইব্যুনালের দুই সদস্য বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী এদিন ট্রাইব্যুনালে আসেন। এ সময় ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার ও অন্য কর্মকর্তারা তাদের অভ্যর্থনা জানান।

১৪ অক্টোবর রাতে হাইকোর্টের বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান করে প্রজ্ঞাপন জারি করে আইন মন্ত্রণালয়। আইন সচিব শেখ আবু তাহেরের সই করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ (১৯৭৩ সালের আইন নং ২১)-এর ধারা ৬-এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান নিয়োগ দেয়া হলো। এছাড়া হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মোহিতুল হক এনাম চৌধুরীকে ওই ট্রাইব্যুনালের সদস্য হিসেবে নিয়োগ দেয়া হলো।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কেন্দ্র করে গত জুলাই ও আগস্টে সংঘটিত গণহত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলার বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে করার সিদ্ধান্ত নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। এরই অংশ হিসেবে নতুন প্রসিকিউশন টিম ও তদন্ত সংস্থা গঠিত হয়েছে। বিচারের জন্য আইন সংশোধন ও ভবন মেরামতের কাজও চলমান। গণঅভ্যুত্থানের পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের নেতা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাবেক শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত গুম, হত্যা, গণহত্যাসহ ৭০টির বেশি অভিযোগ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জমা পড়েছে।

স্বাধীনতার দীর্ঘ ৩৯ বছর পর একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্তদের বিচারের মুখোমুখি করতে ২০১০ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে। ওই বছরের ২৫ মার্চ ট্রাইব্যুনালের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। পরে ২০১২ সালের ২২ মার্চ ট্রাইব্যুনাল-২ নামে আরেকটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। তবে ২০১৫ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর দুটি ট্রাইব্যুনালকে একীভূত করা হয়। ফলে একটি ট্রাইব্যুনালে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারকার্য চলমান ছিল। আগের ত্রিশটি মামলা এখনও ট্রাইব্যুনালে চলমান রয়েছে।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular