ঢাকা  মঙ্গলবার, ৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ; ২০শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ          সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

spot_img
Homeঅপরাধআরাকান আর্মির হাতে অপহরণ ২৪ জেলের পরিবারের কান্না থামছে না

আরাকান আর্মির হাতে অপহরণ ২৪ জেলের পরিবারের কান্না থামছে না

টেকনাফ প্রতিনিধি : মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির হেফাজতে থাকা কক্সবাজারের টেকনাফের জেলেদের ফেরত দেয়নি। ফলে জেলেদের পরিবারের মাঝে থামছে না কান্না। এছাড়া গত এক সপ্তাহে রোহিঙ্গাসহ ২৪ জেলেকে জিম্মি করে ট্রলারসহ ধরে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় জেলেরা আতঙ্কের মধ্য আছেন।

সরেজমিনে একের পর এক জেলে অপহরণের ঘটনায় শাহপরীর দ্বীপের জেলেদের মাঝে ভীতি কাজ করছে। অনেকে অপহরণের নাফনদ-সাগরে নামছেন না। দ্বীপের জেটি ঘাট, মিস্ত্রিপাড়া ঘাট, দক্ষিণ পাড়া ঘাট ও পশ্চিম পাড়া ঘাটে সারি সারি অনেক নৌকা ও ট্রলার নোঙরে দেখা গেছে।

শুক্রবার বিকেলে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ পশ্চিম পাড়ার বেড়ি বাধেঁ বল্কে দু:চিন্তায় অপেক্ষা করছিলেন বৃদ্ধ নারী সালেহা বেগম।

তিনি বলেন,‘আমার এগার বছরে নাতি পাশের এক মাঝির সাথে সাগরে মাছ শিকারে বের হয়েছিল। এখনও কোন খোজঁ খবর পায়নি। এখানে বসে তার অপেক্ষা করছি, কখন ফিরবে সে। এখন শুনেছি তাদের মিয়ানমারের ধরে নিয়ে গেছে। কি হবে তাদের কিছু বলতে পারছিনা। খুব ভয়ের মধ্য আছি।’
চোখের পানি মুচতে মুচতে সালেহা জানালেন, ‘অনলাইনে এক জোড়া কাপড় অর্ডার দিয়েছিল সে। সেটার টাকার জোগাড় করতে, মূলত সাগরে মাছ শিকারে শ্রমিক হিসেবে গিয়েছিল। তার খুব শখ ঈদের অনলাইনের কাপড় পরবে। কিন্তু সে কি আর ফিরবে না? সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি দ্রæত তাদের ফেরত আনার উদ্দ্যোগ গ্রহনের।’

নৌঘাটের জেলেরা জানান, মাদকের পাশাপাশি রোহিঙ্গা অবুপ্রবেশ রোধে বন্ধ থাকা গত ১৩ ফেব্রæয়ারী প্রায় ৮ বছর পর জেলেদের শর্ত দিয়ে তিন মাসের জন্য নাফনদীতে মাছ শিকার খোলে দেয়া হয়েছে। এতে জেলেদের মাঝে আনন্দ জোয়ার বইছে। কিন্তু যেতে না যেতে মিয়ানমারের আরাকান আর্মি জেলেদের ধরে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় জেলেদের মাঝে আবার হতাশা দেখা দিয়েছে। যদিও তাঁরা বলছে শর্ত মেনে জেলেরা মাছ শিকার করছে, এরপরও জেলেদের নিয়ে যাচ্ছে। তবে জেলেরা নাফনদ-সাগরের জলসীমানা অতিক্রম করা কারনে এ ধরনের ঘটনা ঘটছে।

টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপ নৌঘাটে সাধারন সম্পাদক আবদুল গফুর বলেন, ‘গতকালও শাহপরীর দ্বীপসহ ১৯ জেলেকে ধরে নিয়ে যাওয়ার খবর পেয়েছি। এদের মধ্য আমার ঘাটে দুই নৌকার দশ জেলে রয়েছে। এদের পরিবারে কান্না থামছে না। নাফনদ-সাগর থেকে মিয়ানমারের আরাকান আর্মি জেলেদের ধরে নিয়ে গেলেও এটার কোন সমাধান হচ্ছে না। তাই জেলেরা খুব ভয়ের মধ্য আছে। যার কারনে আমার ঘাটের অনেকে নৌকা আরাকান আর্মির ভয়ে মাছ শিকারে যায়নি। তাদের মধ্য দু:চিন্তায় রয়েছে। কেননা এখানকার মানুষ মাছ শিকারে যেতে না পারলে না খেয়ে থাকতে হবে।’

এ বিষয়টি নিশ্চিত করে টেকনাফ উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, ‘ধরে নিয়ে যাওয়া জেলেদের ফেরত আনতে আমাদের আইনশৃঙ্খলাবাহিনী তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি সকল জেলেরা যাতে বাংলাদেশ জল সীমানা অতিক্রম না করে সেজন্য সর্তক করা হয়েছে।’

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular