ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধিঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ তারুয়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর মোঃ মোতালিবের পরিবারের উপর ভূমিদস্যুদের চরম অসনীয় হয়রানি ও চরম নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মোতালিব উপজেলার দক্ষিণ তারুয়া গ্রামে ১৯৫২ সালের ২০ জুন এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম হাজী মোহাম্মদ আলী, মাতার নাম ছইদুন্নেসা। তিনি ৬ ভাই বোনের মধ্য পিতা মাতার দ্বিতীয় সন্তান। তিনি খলাপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষাজীবন শুরু করে তৎকালীন সময়ে পঞ্চম শ্রেণীতে বৃত্তি পেয়ে ৫ টাকা পুরস্কার পান।
তিনি তৎকালীন আইয়ুব খানের শাসন আমলে তালশহর এ এ আই উচ্চ বিদ্যালয় থেকে কুমিল্লা বোর্ডে তৃতীয় স্থান পেয়ে এসএসসি পাস করে ২০ টাকা পুরস্কার পান। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজে এইচ এস সি পাস করার পরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ইকোনমিক্সে অনার্স মাস্টার্স অধ্যায়নকালে বর্তমান প্রধান উপদেষ্টা ডক্টর ইউনুস স্যারের ছাত্র ছিলেন বলে সূত্রে জানা যায়। বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ মোতালিব ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে সেক্টর কমান্ডার মেজর শফিউল্লার অধীনে অংশগ্রহণ করে বীরত্বের সাথে ৩ নম্বর সেক্টরে যুদ্ধ করেছেন। তিনি লালপুর উচ্চ বিদ্যালয় শিক্ষকতা করেন। তিনি পরে আখাউড়া শহীদ স্মৃতি ডিগ্রী কলেজে প্রফেসর হিসেবে দায়িত্ব পালন করা অবস্থায় পরবর্তীতে এই বীর মুক্তিযোদ্ধা মোতালিব ধীরে ধীরে আধ্যাত্মিক পথে গমন করেন বলে এলাকাবাসী এবং উনার কন্যা সন্তান কান্তা ইসলাম, জামাতা মোতাহার হোসেনের বক্তব্য মতে জানা যায়।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মোতালিব ২০১৯ সালের ৩ জুন দিবাগত রাতে মৃত্যুবরণ করলে ৪ জুন ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের ট্যাংকের পাড় মাঠে তাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা শেষে দক্ষিণ তারুয়া গ্রামে উনার দাফন সম্পন্ন করা হয়। মৃত্যুকালে কান্তা ইসলাম ও শান্তা ইসলাম নামে ২ কন্যা সন্তান রেখে যান। তিনি মৃত্যুর পরে উনার মেয়ে কান্তা ইসলাম ও জামাতা মোতাহার হোসেন স্বপ্নে দেখার পর উনার মরদেহ একই গ্রামে কিছুটা দূরে স্থানান্তর করা হয়। সরেজমিনে ঘুরে জানা যায়, তারপর থেকেই ভালো নেই উনার কন্যা কান্তা ইসলাম ও জামাতা মোতাহার হোসেন। এই বীর মুক্তিযোদ্ধার দাফনের জায়গাসহ আশেপাশের জায়গা সম্পত্তি গ্রাস করার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে, তারই ছোট ভাই আলিমের বিরুদ্ধে। বীর মুক্তিযোদ্ধা মোতালিবের দাফনের স্থান পরিষ্কারসহ বিভিন্ন তদারকি কাজে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে তারই আপন ছোট ভাই আলিম। এলাকাবাসীর বক্তব্য মতে জানা যায়, আদম ব্যবসার নামেও বিভিন্ন প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে এই আলিমের বিরুদ্ধে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কিছু ব্যক্তির বক্তব্য মতে জানা যায়, আলী আজম নামের এক ব্যক্তিকে দিয়ে কেবা কারা এই বীর মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন চক্রান্ত ষড়যন্ত্র ও ভূমি দখলের পায়তারা চালিয়ে যাচ্ছে। বীর মুক্তিযোদ্ধার কন্যা কান্তা ইসলাম জানায়, এই বিষয়ে ৭ বার গ্রাম্য সালিশ হওয়ার পরেও কোন সুরাহা হয়নি। আমরা প্রতিনিয়ত চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। বীর মুক্তিযোদ্ধা মোতালিবের কন্যা সন্তানসহ পরিবারের সবাই এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।