নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিক্যালস ইম্পোর্টার্স অ্যান্ড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বারভিডা) ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে গণপরিবহন হিসেবে ব্যবহৃত মাইক্রোবাসের সম্পূরক শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে। এছাড়াও বারভিডা জ্বালানী সাশ্রয়ী ও পরিবেশ বান্ধব হাইব্রিড গাড়ির শুল্ক-কর হার পুনর্বিন্যাসের আহবান জানিয়েছে।
বারভিডা দেশের একটি শীর্ষস্থানীয় রাজস্ব প্রদানকারী খাত হিসেবে প্রয়োজনীয় নীতি সহায়তা প্রাপ্তির মাধ্যমে সরকারকে আরও রাজস্ব প্রদানেরও সম্ভাবনা ব্যক্ত করেছে। বিগত কয়েক বছরে বিশ্ব অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এবং বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার বৃদ্ধির ফলে ভোক্তার চাহিদা থাকা সত্বেও দেশে রিকন্ডিশন্ড যান আমদানি ও বিক্রি হ্রাস পেয়েছে।
এ প্রেক্ষিতে রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমদানি খাত একটি চ্যালেঞ্জপূর্ণ পরিস্থিতিতে ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের বাজেটে যথাযথ নীতি সহায়তা কামনা করছে।
শনিবার (২৬ এপ্রিল ২০২৫ ইং) সকালে বিজয় নগরের ফারস হোটেলে বারভিডা আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের প্রেসিডেন্ট জনাব আবদুল হক এসব বক্তব্য তুলে ধরেন। সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সেক্রেটারি জেনারেল এবং কার্যনির্বাহী সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বারভিডা প্রেসিডেন্ট বলেন যে, প্রায় ৪ দশকেরও বেশি সময় ধরে বারভিডা বাণিজ্যিক ভিত্তিতে জাপানের বিশ্বখ্যাত রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমদানি ও বাজারজাতকরণের মাধ্যমে দেশের পরিবহন খাতের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে।
তিনি বলেন যে, বারভিডা সদস্যবৃন্দ যেভাবে ব্যবসা পরিচালনা করছেন তা এক ধরনের সোশাল বিজনেস, যেখানে কোন মনোপলি নেই। দেশের পরিবহন খাতের সুষ্ঠু বিকাশে সহযোগিতা প্রদান, গাড়ি আমদানি ও বাজারজাতকরণ প্রক্রিয়ায় বিপুল জনগোষ্ঠির কর্মসংস্থান এর পাশাপাশি এতে ভোক্তাদের বহুমুখী চাহিদা পূরণ হচ্ছে এবং সরকারও রাজস্ব প্রাপ্তির মাধ্যমে সুফল পাচ্ছে। অর্থাৎ এখানে একটা বড় অর্থনীতি জড়িত।
অপরদিকে দেশে নতুন গাড়ি আমদানি ও বিক্রির ক্ষেত্রে গুটিকয় ডিলার থাকায় এক্ষেত্রে মনোপলি কাজ করছে।
বারভিডা আমদানিকৃত রিকন্ডিশন্ড গাড়ি এবং দেশে আমদানি করা নতুন গাড়ির রেজিস্ট্রেশন ফি’র মধ্যে বিআরটিএ’তে যথেষ্ট বৈষম্য রয়েছে। রিকন্ডিশন্ড গাড়ির রেজিস্ট্রেশন ফি বেশি হওয়ায় বারভিডা এ বৈষম্য দূর করার জোর দাবি জানিয়েছে।
তিনি আরো বলেন, জ্বালানি সাশ্রয়ী এবং পরিবেশ বান্ধব হাইব্রিড গাড়িগুলোর সিসি ও সম্পূরক শুল্ক হার পুনর্বিন্যাস করা হলে এসব গাড়ি আমদানি সহজলভ্য হবে এবং বিক্রি বৃদ্ধি পাওয়ায় সরকারে রাজস্ব আয় বাড়বে। সংবাদ সম্মেলনে গণপরিবহন হিসেবে বহুল ব্যবহৃত মাইক্রোবাস এর সম্পূরক শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়, যাতে দেশব্যাপী ব্যাপকভাবে প্রয়োজনীয় এই বাহনটি ক্রেতার ক্রয়সীমার মধ্যে থাকে।
বারভিডা বাণিজ্যিক যান হিসেবে ব্যবহৃত পিক আপ/ভ্যান ইত্যাদির শুল্ক কর সর্বনিম্ন স্তরে নির্ধারণ এবং জীবন রক্ষাকারী বাহন অ্যাম্বুলেন্স আমদানির ভ্যাট সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের আবেদন জানিয়েছে। এছাড়াও রাজধানীসহ বড় শহরগুলোতে স্বাস্থ্যকর ও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন গণপরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে ১৬-৪০ বা তদুর্ধ্ব আসনের বাস আমদানিতে বারভিডা শুল্ক-করের সুষম বিন্যাস দাবি করেছে।
দেশে নতুন গাড়ি শিল্প গড়ে তোলার পরিকল্পনা বিষয়ে বারভিডা বলেছে যে, দেশে বর্তমানে গাড়ির বাজার ২৫-৩০ হাজার। দেশে সুচিন্তিত পরিকল্পনার মাধ্যমে মধ্যবিত্ত শ্রেনী সৃজনের দ্বারা অভ্যন্তরীণ বাজার ১ লক্ষ ইউনিট হলেই দেশে নতুন গাড়ির শিল্প প্রতিষ্ঠা যুক্তিযুক্ত হবে। দেশে গাড়ি সংযোজন শিল্প প্রতিষ্ঠা হতে পারে । তবে সরকারের নতুন গাড়ি শিল্প প্রতিষ্ঠার উদ্যোগে যেন সিকেডি (পড়সঢ়ষবঃব শহড়পশ ফড়হি) আমদানির মাধ্যমে কোন স্ক্রু ড্রাইভিং শিল্প প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা না নেয়া হয় সেদিকে বিশেষ লক্ষ্য রাখতে হবে বলে বারভিডা নেতৃবৃন্দ অভিমত ব্যক্ত করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে এসোসিয়েশনের সেক্রেটারি জেনারেল জনাব রিয়াজ রহমান,সংগঠনের ভাইস প্রেসিডেন্ট-১ জনাব মো: সাইফুল ইসলাম (সম্রাট), ভাইস প্রেসিডেন্ট-৩ জনাব ফরিদ আহামেদ, জয়েন্ট সেক্রেটারি জেনারেল সৈয়দ জগলুল হোসেন, ট্রেজারার জনাব মো: সাইফুল আলম, জয়েন্ট ট্রেজারার জনাব হাফিজ আল আসাদ, অর্গানাইজিং সেক্রেটারি জনাব জোবায়ের রহমান, পাবলিকেশন এন্ড পাবলিসিটি সেক্রেটারি জনাব মো: আব্দুল আউয়াল, প্ল্যানিং এন্ড ডেভেলপমেন্ট সেক্রেটারি জনাব এস এম মনসুরুল করিম (লিংকন), কালচারাল সেক্রেটারি জনাব মো: গোলাম রব্বানি (শান্ত) উপস্থিত ছিলেন। সংগঠনের কার্যনিবাহী সদস্য জনাব এ. বি. সিদ্দিক (আবু), জনাব আখতার হোসেন মজুমদার, পুনম শারমিন ঝিলমিল, জনাব মো: হুমায়ুন কবির ভূঁইয়া এবং মি. দিবাকর বড়ুয়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।