গফরগাঁও (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধিঃ আজ বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল)গফরগাঁওয়ে বর্বর বোমা হামলার দিন। নৃশংস এই গণহত্যার ৫৪ বছর পেরিয়ে গেলেও আজো শহীদের মর্যাদা পায়নি কেউ।
১৭ এপ্রিল ময়মনসিংহের গফরগাঁও বাজারে পাক হানাদার বাহিনীর বোমা হামলায় ১৯ জন প্রাণ হারান। ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল সকালে গফরগাঁও বাজারে স্বাধীন বাংলার মানচিত্র খচিত পতাকা উড়তে দেখে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর জঙ্গি বিমান গফরগাঁও মধ্যবাজারে বোমা বর্র্ষণ করে এবং কিছুক্ষণ পর পুনরায় নির্র্বিচারে মেশিনগানের গুলি বর্ষণে করে অসংখ্য নিরীহ মানুষকে হত্যা করে। তাদের মধ্যে ১৯জনকে সনাক্ত করা সম্ভব হয়েছিল।
বোমা হামলায় প্রথম শহীদ হন গফরগাঁও বাজারের ব্যবসায়ী আব্দুল বেপারী। হামলায় অপর নিহতরা হলেন পুখুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা সেনা সদস্য মীর শামছুদ্দিন, রাঘাইচটি গ্রামের আব্দুুল মতিন, শিলাসী গ্রামের আব্দুল মজিদ, ছোবেদ আলী, আব্দুল হাই, ইছর আলী, আব্দুল গফুর,কলা মিয়া, ঘাগড়া গ্রামের মীর জিয়াউল হক, ষোলহাসিয়া গ্রামের যমুুনার মা, তেতুলিয়া গ্রামের আব্দুল জলিল, ভুলু মিয়া,চংবিড়ই গ্রামের আব্দুল হেলিম,আঠারবাড়ি গ্রামের মংলার বাপ,খারুয়া মুকুন্দ গ্রামের আব্দুল হাই, জন্মেজয় গ্রামের গফুর আলী এবং শ্রীপুর থানার জয়নাল ও ঢাকার গোপেন চন্দ্র্র দেবনাথ প্রমুখ।
মুজিব নগর সরকার গঠনের দিন ১৭ এপ্রিল সকালে পাক হানাদার বাহিন গফরগাঁও বাজারে বর্বরোচিত বিমান হামলার পর যিনি হতাহতদের উদ্ধার তৎপরতায় অংশ নেন তাদের একজন সমাজ সেবক সালটিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান বিএনপির নেতা মীর মোনায়েম সালেহীন সুবল। তিনি বলেন,এ ঘটনার দিন কয়েকটি পাক জঙ্গী বিমান বাজারের উপর দিয়ে উড়ে যাচ্ছিল। মুহুর্তের মধ্যেই বোমা আর মেশিন গানের গুলিতে ঝাঁঝড়া করে দেয় বাজারের নিরীহ মানুষদের। যুদ্ধকালীন সময়ে অন্তত ১৯জনকে সনাক্ত করা গিয়েছিল। তাদের মধ্যে অন্যতম প্রতিবাদকারি বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আব্দুল বেপারী।
স্বাধীনতার পর তৎকালীন এমপি প্রয়াত আবুল হাশেম সেইদিনের ঘটনায় বীরত্বপুর্ণ আত্মত্যাগের জন্য বাজারের প্রধান সড়কে শহীদ আব্দুল বেপারীরর নামে একটি তোরণ নির্মান করে। পরে ২০১৯ সালে সড়ক প্রশস্তকরনের সময় এটি ভাঙা পড়ে।
শহীদ আবদুল বেপারীর সন্তান আমিনুল হক কামাল বলেন, তোরণটি ছিল গফরগাঁওবাসীর বিজয়ের স্মারক। শহীদ পরিবারের পক্ষে তোরণটি যথা শিগগির পুন:নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।