শেরপুর প্রতিনিধি : শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলায় মাদ্রাসার ছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার ঘটনা জানতে পেরে ওই ছাত্রীর মা বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উপজেলার কাংশা ইউনিয়নের গারো পাহাড়ে এ ঘটনা ঘটে। গুরুতর অসুস্থ ওই নারীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ধর্ষণচেষ্টার শিকার ভুক্তভোগী ছাত্রী (১৪) উপজেলার কাংশা ইউনিয়নের একটি গ্রামের এক দরিদ্র কামারের মেয়ে। সে স্থানীয় একটি মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার বিকেলে ঝিনাইগাতীর গজনী অবকাশকেন্দ্রের জঙ্গলে মো. ইলিয়াছ (২৫) নামের এক যুবক কিশোরীটিকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন।
পুলিশ ও ওই নারীর স্বামীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত শুক্রবার দুপুরে ছাত্রীটি তার ৩-৪ জন বান্ধবীর সঙ্গে ঝিনাইগাতীর গজনী অবকাশকেন্দ্রে বেড়াতে যায়। সেখানে ওই কিশোরীর সঙ্গে পূর্বপরিচিত মো. ইলিয়াছের (২৫) দেখা হয়। একপর্যায়ে ইলিয়াছ তার দুই সহযোগীর সহায়তায় কিশোরীটিকে অবকাশকেন্দ্রের জঙ্গলের ভেতরে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। তার ডাকচিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে কিশোরীটিকে উদ্ধার করেন এবং বাড়িতে পৌঁছে দেন।
ওই ঘটনার পর গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে মেয়ের ধর্ষণচেষ্টার ঘটনা জানতে পারেন তার মা। বিকেলে সবার অগোচরে তিনি বাড়ির অদূরে গারো পাহাড়ে যান এবং সেখানে বিষপান করেন। তাকে পরিবারের সদস্যরা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন এবং অচেতন অবস্থায় তাকে গারো পাহাড়ে পড়ে থাকতে দেখেন। পরে ওই নারীকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে ঝিনাইগাতী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
শেরপুর সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক বলেন, বিষপান করায় ওই নারীর অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
ওই নারীর স্বামী আজ বুধবার সকালে সাংবাদিকদের বলেন, বিষপান করে তার স্ত্রী গুরুতর অসুস্থ। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী তাকে আজ ভোরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ঝিনাইগাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল আমিন বলেন, ছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার ঘটনায় থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলার প্রক্রিয়া চলছে। ভুক্তভোগী ছাত্রী জানিয়েছে, ইলিয়াছ নামের স্থানীয় এক যুবক ধর্ষণের চেষ্টা করেন। স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য আজ কিশোরীকে জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হবে। ইলিয়াছ ও তার সহযোগীদের আটকের চেষ্টা করছে পুলিশ।