নিউজ ডেস্ক : চড়া সুদহার, জ্বালানি সংকট, সেই সঙ্গে গ্যাস-বিদ্যুতের আবারও দাম বৃদ্ধিতে দুঃশ্চিন্তায় ব্যবসায়ীরা। দাম বাড়লে উৎপাদন খরচ পণ্যের ওপর দিয়েই উঠাতে চাইবেন ব্যবসায়ীরা। এতে উসকে যাবে মূল্যস্ফীতি, ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে রফতানি খাত, মন্তব্য অর্থনীতিবিদের।
শতাধিক পণ্যে ভ্যাট বাড়ানোর পর এবার গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রচেষ্টা চলছে। আবাসিকে দাম বাড়ানোর পাশাপাশি শিল্পখাতে প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম দ্বিগুণ বাড়িয়ে ৭৫ টাকা ৭২ পয়সা করার প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজসম্পদ করপোরেশনের (পেট্রোবাংলা)। এই দাম কার্যকর হলে ব্যবসা-বাণিজ্য থমকে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।
চাহিদার বিপরীতে দেশে এখন প্রতিদিন গ্যাস সরবরাহে ঘাটতি ১০০ থেকে ১২০ কোটি ঘনফুট। ব্যবহৃত গ্যাসের ৭৫ শতাংশ পূরণ হয় দেশি উৎস থেকে, বাকি ২৫ শতাংশ আমদানি করা তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) থেকে।
শ্রাবণী নিটওয়্যার লিমিটেডের মো. বেলায়েত হোসেন বলেন, গ্যাসের দাম বাড়লে ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ খাতের বেতন-বোনাস দিতে চাপে পড়তে হবে। অনিশ্চয়তায় পড়বে পুরো খাত।
জেএস স্টাইল বিডি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, গ্যাসের দাম বাড়লে বাড়বে পণ্যের দামও। এতে কমবে ক্রেতাদের আগ্রহ।
কর বাড়ানোর পাশাপাশি চড়া সুদহার ব্যবসায়ীদের জন্য এখন বড় চাপ। এর মাঝে জ্বালানির দাম বাড়লে রফতানিখাত চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা করছে বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ)। সংগঠনটির পরিচালক মিনহাজুল হক বলেন, ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা না করেই গ্যাসের দাম বাড়ানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। দাম বাড়ানোর এ সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই যুক্তিযুক্ত নয়।
ব্যবসায় খরচ বাড়লে তা পণ্যের দাম বাড়িয়েই তুলে নিতে চাইবে ব্যবসায়ীরা। ফলে আরেক দফা মূল্যস্ফীতি উসকে যাবে বলে মন্তব্য অর্থনীতিবিদের। অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আইনুল ইসলাম বলেন, এদিকে শুল্ক-ভ্যাট বাড়ানো হয়েছে শতাধিক পণ্যে। অন্যদিকে গ্যাসের দাম বাড়ানোর পরিকল্পনা চলছে। এটি বাস্তবায়ন হলে ক্ষতির মুখে পড়ে অনেকেই ব্যবসা ছেড়ে দেবেন। যা প্রভাব ফেলবে রফতানি খাতে।
শ্রমিক অসন্তোষ ও বেতন-ভাতা বাড়ানোয় চাপে থাকা শিল্পখাতে নতুন করে জ্বালানির দাম বাড়ার চাপ কর্মসংস্থানেও প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা।