নিউজ ডেস্ক : অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের চীন সফরে উত্তরের দুই কোটি মানুষের দীর্ঘ আকাঙ্ক্ষার তিস্তা মহাপরিকল্পনা গুরুত্ব পাবে বলে প্রত্যাশা ‘তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের’।
শুষ্ক মৌসুমের আগেই পানিশূন্য তিস্তাই বলে দেয় পানির প্রশ্নে কতটা আপসহীন প্রতিবেশী দেশ ভারত। একের পর এক বাঁধ, খাল ও জলবিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণ করে প্রত্যাহার করা হচ্ছে তিস্তার পানি। আর বন্যায় পানি ছেড়ে সৃষ্টি করছে মহাদুর্যোগ। এমন পরিস্থিতিতে তিস্তা পাড়ের বাসিন্দারা আন্দোলন গড়ে তোলেন তিস্তা সংস্কারে মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের।
আর অধিকার কর্মীরা বলছেন, ভূ-রাজনৈতিক জটিলতা কাটিয়ে কীভাবে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা যায় সে বিষয়েও পরিষ্কার দিক নির্দেশনার অপেক্ষায় তারা।
২০১৮ সালে সমীক্ষা শেষে চীন এ প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে চাইলেও বেঁকে বসে ভারত। এমনকি তারাই এ প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কথা জানায়। ফলে ঝুলে যায় বহু আকাঙ্ক্ষিত তিস্তা মহাপরিকল্পনার কাজ।
শুষ্ক মৌষুমে তিস্তা ব্যারাজ। ভারত একের পর এক বাঁধ, খাল ও জলবিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণ করে প্রত্যাহার করে তিস্তার পানি
রোববার (১৯ জানুয়ারি) পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে তিস্তা প্রকল্পে চীনের আগ্রহের কথা জানান ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। পরদিন সোমবার চার দিনের সফরে চীনে রয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টার চীন সফর নিয়ে তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি নজরুল ইসলাম হক্কানির প্রত্যাশা, কোটি মানুষের জীবন জীবিকার প্রশ্নে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার চীন সফরে গুরুত্ব পাবে তিস্তা মহাপরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন।
পরিচর্যা ও সংস্কারের অভাবে প্রতি বছর তিস্তার ভাঙন, প্লাবনে প্রায় ১ লাখ কোটি টাকার ক্ষতি মুখে পড়ছে তিস্তা অববাহিকার ২ কোটি মানুষ।
ভারত বর্ষায় ছেড়ে দেয় পানি। প্রতি বছর তিস্তার ভাঙন, প্লাবনে প্রায় ১ লাখ কোটি টাকার ক্ষতি মুখে পড়ছে তিস্তা অববাহিকার ২ কোটি মানুষ।
এদিকে মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) বেইজিংয়ে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির পলিট ব্যুরোর সদস্য ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই এর সাথে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বৈঠক করেছেন।
বৈঠকে ওয়াং ই বলেন, চীন সবসময় বাংলাদেশকে প্রতিবেশী কূটনীতির গুরুত্বপূর্ণ স্থানে রাখে। বাংলাদেশের সকল মানুষের সঙ্গে সহাবস্থানের নীতি মেনে চলে চীন। আরও তৌহিদ হোসেন বলেন, চীনের সঙ্গে বন্ধুত্ব হল বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর অভিন্ন চেতনা, যা প্রতি সরকারের আমলেই সকল মানুষের সমর্থন পায়। বাংলাদেশ-চীনের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০তম বার্ষিকী উদযাপন ও দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে নতুন পর্যায়ে উন্নীত করার আকাঙ্ক্ষা লালন করে।