নিজস্ব প্রতিবেদক: ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী সব দলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, জনগণের আস্থা নষ্ট হয় এমন কোনো কাজ করা যাবেনা।
বুধবার সন্ধ্যায় ঝিনাইদহ, যশোর ও নড়াইল জেলা বিএনপি আয়োজিত ‘রাষ্ট্র্রকাঠামো মেরামতে ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি’- শীর্ষক কর্মশালায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ আহ্বান জানান।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, বিএনপির ৩১ দফা কেবল দেশ ও দেশের মানুষের জন্য। ৩১ দফার মাধ্যমে আমরা দেশের মানুষের শুভ পরিবর্তন ঘটাতে চাই, যেটি মানুষ প্রত্যাশা করে। এই পরিবর্তন কোনো জাদু বা ম্যাজিক নয়, বলব আর হয়ে যাব। এজন্য জনগণের আস্থা ধরে রাখার জন্য নিজেদের পরিবর্তন করতে হবে। আমাদের মন মানসিকতার পরিবর্তন ঘটাতে হবে। এই ৩১ দফা বাস্তবয়নের মাধ্যমে আমরা সকল জুলুম নির্যাতনের প্রতিশোধ নেব।
তিনি আরও বলেন, আমি প্রতিবারই বলছি সামনের পথ মোটেও মসৃণ নয়। বিএনপির বিরুদ্ধে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। এসব ষড়যন্ত্র মোবাবিলা করে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। জনগণের আস্থা নষ্ট হয় এমন কোনো কাজ করা যাবে না। মানুষের আস্থা ও ভালোবাসা অর্জনে দলের নেতাকর্মীদের এক থাকতে হবে। বিএনপির লাখ লাখ নেতাকর্মীকে এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ ও গত ১৬ বছর গুম খুনের শিকার ভুক্তভোগী পরিবারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, যারা আন্দোলন সংগ্রামে শহীদ হয়েছেন তাদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেওয়া হবে। তালিকা করে শহীদ ও আহতদের খোঁজখবর নেওয়া হবে। আমরা বিগত দিনগুলোতে দলীয়ভাবে এসব পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছি। ক্ষমতায় গেলে রাষ্ট্রীয় ভাবে কাজ করার চেষ্টা করব। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের স্মরণে নিজ নিজ এলাকার সরকারি স্থাপনার নামকরণ করা হবে।
তারেক রহমান আরও বলেন, বিএনপি একটি জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল। এই দলের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমান স্বাধীনতা যুদ্ধের ডাক দিয়ে নিজে রণাঙ্গনে যুদ্ধ করেছেন। আবার দেশ পরিচালনায়ও তিনি খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। দেশের মানুষকে সংগঠিত করে কীভাবে দেশ গঠন ও পরিচালনা করতে হয় তা তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন। তাই দেশের প্রতিটি কমবেশি নিরপেক্ষ নির্বাচনে বিএনপিকে মানুষ ভোট দিয়ে রাষ্ট্র ক্ষমতায় পাঠিয়েছে। এটি বিএনপির সবচেয়ে বড় অর্জন। যতদিন পৃথিবী থাকবে ততদিন এটি স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
তিনি বলেন, ’৭১ সালে যুদ্ধের সময় কোনো দল বর্ডার টপকে ভারতে আমোদ-প্রমোদ করে কাটিয়েছেন। আবার কোনো দল স্বাধীনতা যুদ্ধে বিরোধিতা করেছেন। তিনি বলেন- ‘দেশ প্রেম ইমানের অঙ্গ।’ দেশের মানুষের অধিকার রক্ষা করাও এই ইমানের মধ্যে পড়ে। তারেক রহমান বলেন, স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের আমলে ১৬ বছরে বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা খুন-গুম, হামলা মামলার শিকার হয়েছেন। দেশ ও দেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কর্মীরা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। জনগণের একটি বিশাল অংশ বিশ্বাস করে, আগামীতে দেশের যদি ভালো কিছু হয়, সেটা বিএনপির দ্বারাই হবে। স্বাধীনতার মহান ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান দেশ গঠনে নিজেই মাঠে ঘাটে হেঁটে হেঁটে কাজ করেছেন। আমরা শহীদ জিয়ার সেই নীতি নিয়ে কাজ করতে চাই।