নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশে তামাকের ব্যবহার হ্রাস ও আগামী প্রজন্মকে তামাকের ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে আসছে ২০২৫-২৬ অর্থ বাজেটে তামাক কর বৃদ্ধি ও প্রস্তাবিত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনী দ্রুত পাসের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা
বুধবার রাজধানীর শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে আহছানিয়া মিশন ইয়ুথ ফোরাম ফর হেলথ এন্ড ওয়েলবিয়িং আয়োজিত ‘তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনী দ্রুত পাস ও তামাক কর বৃদ্ধির দাবিতে ছাত্র-তরুণ সমাবেশ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি, ইউ আইটি এস, ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অফ স্কলার্স, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শতাধিক শিক্ষার্থী।
এসময় তারা তামাকজনিত মৃত্যু ও তামাকের ব্যবহার কমাতে, প্রস্তাবিত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনী দ্রুত পাস ও কার্যকরভাবে উচ্চহারে তামাক-কর বৃদ্ধির জোড়ালো দাবি জানায়।
বর্তমানে দেশের ৪৮ শতাংশই তরুণ জনগোষ্ঠী। এর মধ্যে ৯ দশমিক ২ শতাংশ তরুণ তামাক সেবন করে। তামাক কোম্পানীর নানা রকম অপপ্রচারের শিকার হচ্ছে কিশোর-তরুণেরা। আইনের দূর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে তামাক কোম্পানীগুলো বিক্রয়কেন্দ্রে পণ্য প্রদর্শনীর নাম করে কৌশলে বিজ্ঞাপণ প্রচার করছে। আর এসব বিজ্ঞাপনে মাধ্যমে শিশু-কিশোরদেরকে টার্গেট করছে। এতে করে তামাকের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে শিশু-কিশোর ও তরুণরা।
এছাড়াও বিগত কয়েক বছরে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম যে হারে বেড়েছে, সেই অনুপাতে বাড়েনি তামাকজাত দ্রব্যের দাম। বাংলাদেশে তামাকজাত দ্রব্যের কর বৃদ্ধির হার পাশ্ববর্তী দেশেরগুলোর চাইতে তুলনামূলক অনেক কম। প্রতিবছর তামাকজাত দ্রব্যের নামমাত্র মূল্যবৃদ্ধি দরিদ্র ও তরুণ জনগোষ্ঠীকে কোনভাবেই সিগারেটে নিরুৎসাহিত করবে না। অন্যদিকে দাম বাড়লে ভোক্তাগণ সহজেই নিচের ধাপে নেমে আসে। এতে করে সস্তা সিগারেটের ব্যবহার আশংকাজনক হারে বেড়ে যায় ফলে স্বাস্থ্যঝুঁকিও বেড়ে যায় বহুগুনে। তাই আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে কার্যকরভাবে উচ্চহারে তামাক পণ্যের কর বাড়াতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তরুণরা।
দেশে ১৫ বছরের ওপরে ধূমপায়ীর সংখ্যা শতকরা ৩৯ দশমিক ১ শতাংশ এবং এর নিচে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ শিশুই ধূমপায়ী। এই বিপুল জনগোষ্ঠীকে রক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করা জরুরি। কিশোর-তরুণদের ওপর তামাকের ক্ষতিকর প্রভাব সবচেয়ে বেশি। তামাকপণ্যে উচ্চহারে করারোপ কিশোর-তরুণদের তামাক ব্যবহার থেকে বিরত রাখবে। রোধ করবে তরুণদের মৃত্যু।
সুতরাং, জনস্বাস্থ্যের সুরক্ষা, তরুণ সমাজকে তামাকের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বাঁচানো এবং একটি তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে প্রস্তাবিত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন দ্রুত পাস ও তামাকপণ্যে কার্যকর ভাবে উচ্চহারে কর বৃদ্ধির জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি বলে ছাত্র-তরুণেরা মত প্রকাশ করেন।