নীলফামারী প্রতিনিধি : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, বাংলাদেশকে একটি জীবন্ত কারাগারে পরিণত করা হয়েছিল। ভিতরের কারাগার থেকে বাইরের কারাগার ছিল আরো দুঃসহ। ভিতরের কারাগারে অন্তত নতুন করে মামলা দেওয়ার সুযোগ ছিল না। বাইরের কারাগারে থাকলেই প্রতিনিয়ত বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মী, আলিম-উলামা, বিভিন্ন সম্প্রদায় ও ধর্মের মানুষের বিরুদ্ধে অব্যাহত মামলা দেওয়া হয়েছে।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ১৮ কোটি নির্যাতিত মানুষের প্রথম দাবি, গণহত্যার বিচার। শহীদ পরিবারগুলোর পুনর্বাসন, আহতদের চিকিৎসা ও পক্সগুদের সহযোগিতা নিশ্চিত করে আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে হবে। বিচার ও মৌলিক সংস্কার ছাড়া নির্বাচনের কোনো অর্থ নেই। জনগণের প্রতি আহবান জানিয়ে জামায়াতের আমির বলেন, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রায় দলমতের ঊর্ধ্বে উঠে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সংযত ও সচেতনভাবে সামনে এগিয়ে যেতে হবে।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টায় নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলা স্টেডিয়াম মাঠে বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি এখানে ২৩ মিনিট বক্তব্য রাখেন।
উপজেলা জামায়াতের আয়োজনে জনসভায় জলঢাকা উপজেলা জামায়াতের আমীর মোখলেছুর রহমান মাষ্টারের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন দলটির সহকারি সেক্রেটারী জেনারেল রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলের পরিচালক মাওলানা আবদুল হালিম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলের সহকারি পরিচালক অধ্যক্ষ মাওলানা মমতাজ উদ্দিন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলের টিম সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বেলাল, রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলের টিম সদস্য মুহাম্মদ আব্দুর রশীদ, কেন্দ্রীয় মজলিশের শুরা সদস্য ও নীলফামারী জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুস সাক্তার, ও জেলা মজলিশের শুরা সদস্য মাওলানা ওবায়দুল্লাহ সালাফী।
সভায় আমিরে জামায়াত বলেন, বর্তমানের শিক্ষিতরা নিজেকে রাজা মনে করে। শিক্ষা জীবন শেষ করে কর্মসংস্থানের জন্য দুয়ারে দুয়ারে নিস্ফল ঘুরে আত্বহত্যাও করছে বর্তমান শিক্ষিতরা। আমরা চাই, শিক্ষা জীবন শেষ করে সনদ নিয়ে সোজা কর্মসংস্থলে যাবে আমাদের সন্তানরা। সেই শিক্ষা ব্যবস্থা ও কর্মস্থল নিশ্চিত করতে হবে।
জুলাই হত্যাকান্ডের বিচার না হলে জনগণ কোনো নির্বাচন মেনে নেবে না বলে উল্লেখ করে জামায়োতের আমির বলেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে সরকারকে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত পূরণ করতে হবে। সেগুলো হলো- বিচার, সংস্কার ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন ব্যবস্থা। তিনি আরও বলেন, হাজারো প্রাণের বিনিময়ে দেশে পরিবর্তনের সূচনা হয়েছে। এ পরিবর্তনের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হলে সংস্কার অপরিহার্য। রাজনৈতিক দলগুলো যত দ্রুত আন্তরিকতা নিয়ে এগিয়ে আসবে, তত দ্রুত নির্বাচনমুখী পরিবেশ তৈরি হবে।
নিরাপত্তা প্রসঙ্গে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, বিগত ৫৪ বছরের সরকারগুলো নারীদের নিরাপত্তা ও সম্মান মর্যাদা দিতে পারেনি। অনেকেই বলে, জামায়াত মতায় গেলে নারীরা চাকরি করতে পারবে না। যা ভুল ধারণা। আমরা আগে নারীদের নিরাপত্তা ও সম্মান মর্যাদা নিশ্চিত করে নিরাপদ কর্মস্থল গড়ে তুলব। আমরা এমন বাংলাদেশ গড়তে চাই যেখানে নারীরা স্বাধীনভাবে চলবে, কেউ তার দিকে চোখ তুলে তাকানোর সাহস পর্যন্ত পাবে না।