ঢাকা  মঙ্গলবার, ৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ; ২০শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ          সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

spot_img
Homeসারাদেশপঞ্চগড়পঞ্চগড়ে এক বিধবা নারী ১৯ বছর পর ২০ একর জমি ফিরে পাচ্ছে

পঞ্চগড়ে এক বিধবা নারী ১৯ বছর পর ২০ একর জমি ফিরে পাচ্ছে

পঞ্চগড় প্রতিনিধি : পঞ্চগড় জেলা সদরের চাকলাহাট ইউনিয়নের বগুলাডাঙ্গী মৌজায় আলতাফুন বেগম নামে এক বিধবা নারী দীর্ঘ ১৯ বছর পর হাইকোর্টের রায়ে নিজের ২০ একর জমি ফিরে পেতে যাচ্ছেন।

জানা গেছে, আলতাফুন বেগম নামে ওই বিধবা নারী গত ১৯৭২ সালে ৪ টি দলিল মুলে তার স্বামীর নিকট থেকে মোহরানা সুত্রে ২০ একর জমি পায়। ২০০৫ সালে ১৬ ডিসেম্বর স্বামীর মৃত্যু হলে, মাত্র ৭ দিন পর তার সতীনের সন্তান রাজিউল ইসলাম প্রধান জমির জাল দলিল এবং জাল খতিয়ান তৈরি করে দখল করে নেয়। এর পর উপায় না পেয়ে পঞ্চগড় জেলা আদালতে ২০০৭ সালে জমির দখল উদ্ধার চেয়ে একটি মামলা আনায়ন করেন।

মামলায় বিবাদী ধুরন্ধর ও চক্রান্তকারী রাজিউল ইসলাম প্রধান একটি জাল দলিল উপস্থাপন করে জমি নিজের বলে দাবি করে। বিজ্ঞ আদালত উক্ত জাল দলিল সনাক্ত করে বাদি আলতাফুনকে তার জমি ফিরিয়ে দেওয়ার রায় প্রদান করে। অথচ বিবাদী রাজিউল ইসলাম প্রধান তার চক্রান্ত বহমান রাখতে জমির দখল না ছেড়ে হাইকোর্ট আপিল করে। ধারাবাহিকতায় ২০১৭ সাল হতে হাইকোর্টৈর আপিল বিভাগে মামলা চলমান থাকে। হাইকোর্ট এর বিজ্ঞ বিচারক গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ও মো: যাবিদ হোসেন যৌথ ভাবে গত ২০ জানুয়ারি ২০২৫ এক রায় ঘোষনা করেন। রায়ে বাদিনীকে জমি যথাযথভাবে ফেরত প্রদান ও বিবাদী রাজিউল ইসলাম প্রধান এর বিরুদ্ধে পঞ্চগড় জেলা চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্টেট আদালতে জাল দলিল সৃষ্টি করায় বিচার ব্যাবস্থা গ্রহণ করার আদেশ দেন।

মামলা ও জাল দলিল সৃষ্টি কারী রাজিউল ইসলাম প্রধান এর সাথে মুঠো ফোনে বার বার যোগাযোগ করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি। মামলার বাদিনী আলতাফুন বেগম এর সাথে যোগাযোগ করলে, তিনি জানান দেশে এখনো আইনের শাসন রয়েছে, আমি আমার সঠিক অধিকার পাব নিশ্চিত ছিলাম বলেই দীর্ঘ ১৯ বছর যুদ্ধ করেছি। তবে তিনি জানান, যে দীর্ঘ ১৯ বছরে আমি মামলা খরচসহ প্রায় ২ কোটি টাকা বঞ্চিত হয়েছি। সরেজমিনে তদন্তে জানা গেছে , উক্ত রাজিউল ইসলাম এক মহা ধুরন্ধর ও চক্রান্তকারী ব্যক্তি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার একাধিক ব্যক্তি জানান, এই ২০ একর জমির বাইরেও প্রায় ৪৫ বিঘা সরকারি খাস খতিয়ানের জমি সে ও তার প্রভাবশালী ভাই দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে জবর দখল রেখে করে আছে। তারা এলাকায় ব্যাপক প্রভাবশালী হওয়ায় ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়না।

আরও জানা গেছে,স্থানীয় তহসিল অফিসের কর্মকর্তাদের প্রতি বছর মোটা অংকের উৎকোচ দিয়ে তারা দীর্ঘ ৫০ বছর বিষটি রাষ্ট্র ও প্রশাসনের কাছে গোপন রেখেছে। খোঁজ পাওয়া তথ্য মোতাবেক উক্ত ৪৫ বিঘা জমির মৌজা বগুলাডাংগী খতিয়ান ৪৬৮ ও মৌজা চাকলাহাট খতিয়ান ২৭০ ইউনিয়ন চাকলাহাট, সদর উপজেলা, জেলা পঞ্চগড়। রাজিউল প্রধান ইতি মধ্যে, এলাকার কিছু সহজ সরল মানুষের কাছে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে হাতিয়েছেন। স্টাম্পে সহি দিয়ে নগদ অর্ত হাতিয়ে অনেক জমি অবৈধ ভাবে বিক্রি করছে। বিষয়টি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের জন্ম দিয়েছে। দেশ স্বাধীন এর ৫৩ বছর হয়ে আবারো দ্বিতীয় দফায় ২৪ এর গন অভুথ্যানে স্বাধীন হলেও, রাজিউল ইসলাম প্রধান এর মত প্রচন্ড ভুমি দস্যুরা সরকার ও জনগনের ক্ষতি করতেই থাকবে। এলাকাবাসী রাষ্ট্র ও জন কল্যাণে এদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি তুলেছেন।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular