ঢাকা  মঙ্গলবার, ৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ; ২০শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ          সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

spot_img
Homeঅপরাধপুরান ঢাকায় অর্পিত সম্পত্তিতে অনিয়ম

পুরান ঢাকায় অর্পিত সম্পত্তিতে অনিয়ম

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানী ঢাকায় অর্পিত সম্পত্তি নিয়ে নানা অনিয়মের খবর পাওয়া যাচ্ছে। সরেজমিনে অনুসন্ধান চালাতে গিয়ে এই তথ্য সামনে চলে এসেছে। ডিসি অফিস নামকাওয়াস্তে এসব সম্পত্তির অভিভাবকের দায়িত্ব পালন করছে। বাস্তবে ডিসি অফিসের অর্পিত সম্পত্তি সেল অনিয়মে সিলমোহর দেওয়ার কাজটি করছে।

পুরান ঢাকার দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সূত্রাপুর থানার, ৪৪ নং ওয়ার্ডে ১১/১ ঠাকুর দাস লেনের বসত ভিটা যার ভিপি কেস (৭৩৩/৬০) একটি একচালা টিনের ঘর। সেখানে অর্পিত সম্পত্তির ভাড়াটিয়া ৩ জন। এদের মধ্যে একজন ভাড়াটিয়া যার নাম দুর্লভ কর্মকার ইজারা প্রাপ্তি নিয়ে জানা গেছে ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়মের খবর।

অর্পিত সম্পত্তির সেলের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে দুর্লভ কর্মকার ২০১৮ সালে ওই সম্পত্তির ইজারা পান। ওই সম্পত্তি ইজারা জনৈক আসমা নামের এক নারীর কাছ থেকে তিনি পান বলে জানা গেছে। আবার আসমা ওই সম্পত্তি ইজারা পেয়েছেন জনৈক এমদাদুল হকের কাছ থেকে। ঘটনাগুলো কাছাকাছি সময়ের।

অর্পিত সম্পত্তির এতবার হাত বদল সম্ভবত হয় না। এই ক্ষেত্রে কেন এমনটা হয়েছে তা জানার চেষ্টা করা হয়। খোঁজ নিয়ে জানা যায় এমদাদুল হকের যখন এই সম্পত্তির ভাড়াটিয়া ছিলেন তখন তিনি একটি আইসক্রিমের কারখানা দিয়েছিলেন।

সেই আইসক্রিমের কারখানা চালাতে গিয়ে তিনি ৫ লক্ষাধিক টাকা পানির বিল ঢাকা ওয়াসার নিকট বকেয়া রাখেন।
এমদাদুল হক এই তথ্য গোপন করে ওই সম্পত্তির দখল কয়েক লক্ষ টাকার বিনিময়ে জনৈক আসমার কাছে বিক্রি করেন। আসমা পরে যখন জানতে পারে এই পানির বিলের বকেয়া তার ঘাড়ে চেপেছে, তখনও তারাও বকেয়ার তথ্য গোপন করে কৌশলে দুর্লভ কর্মকারের কাছে টাকার বিনিময়ে দখল হস্তান্তর করে।

অথচ নিয়ম আছে অর্পিত সম্পত্তি এভাবে কেনাবেচা করা যায় না। কিংবা হস্তান্তর করা যায় না। ডিসি অফিসের অর্পিত শাখার লোকজন এই সকল হস্তান্তরের বৈধতা দেয়। তারা পূর্বের ইজারাদের কাছ থেকে নিদাবী সনদ নিয়ে একজনের ইজারা আরেকজনরে নামে পরিবর্তন করে। আর এটা করতে যেয়ে নিজেদের পকেট ভারি করে নেয়।

এই দুর্লভ কর্মকার পেশায় একজন সাউন্ড সিস্টেম ব্যবসায়ী। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সাউন্ড সিস্টেম ভাড়া দিয়ে সংসার চালায়। তার পিতা কাঠের কাজ করে। অশিক্ষিত এই পরিবার সরকারি কোনো নিয়ম কানুন জানে না।

সম্প্রতি তারা নিজেদের খেয়াল খুশিমতো অর্পিত সম্পত্তিতে বসটভিটা ভেঙ্গে নতুন করে নির্মাণ করে। এজন্য তারা কারো অনুমতি নেয়নি। বিনা অনুমতিতে তারা এমদাদুল হকের এক চালা টিনের ঘর ভেঙ্গে নতুন করে দালান তোলে। যা সম্পূর্ণ অবৈধ। এই কাজটি করতে যেয়ে তারা আরো একটি অনিয়ম করে। ওই সম্পত্তির পুরানো ইজারাদার আবদুল কাদেরর টয়লেট ভেঙ্গে সেই জায়গার দখল নিয়ে নেয়। যা সম্পূর্ণ রূপে বেআইনি।

আবদুল কাদেরের ছেলে এ বিষয়টি ডিসি অফিসকে জানিয়েছে । অথচ ডিসি অফিস রহস্যজনক ভাবে এসব অবৈধ কাজ দেখেও না দেখার ভান করছে।

অর্পিত সম্পত্তি ডিসির অনুমতি নিয়ে সংস্কার করা যায়। বিনা অনুমতিতে এসব সম্পত্তি ভাঙচুর কিংবা কাঠামো পরিবর্তন করা যায় না। এক্ষেত্রে ২০১৮ সালে প্রাপ্ত ইজারাদার দুর্লভ কর্মকার ইজারামানি পরিশোধ না করে, একসনা লিজ নবায়ন না করে, কীভাবে ২০২৫ সালে এসে সেখানে ঘর নির্মাণ করছে তা রহস্যজনক। তার লিজ কীভাবে বহাল আছে? সেটাও একটি রহস্য। অথচ এসব বেআইনি কাজের জন্য তার লিজ বাতিল হয়ে যাবার কথা। যা এখনো হচ্ছে না।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular