শেরপুর প্রতিনিধি : শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার প্রতাবনগর এলাকার বাসিন্দা সত্তরোর্ধ্ব জামাল উদ্দিন। পেশায় কৃষক। বয়সের ভারে হাঁটতে পারে না তিনি। গত বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) দিবাগত রাতের ভারি বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যার প্রবল স্রোতে তার বসত ঘরটি ভেঙে যায়। ফলে তার বসত ঘরের সকল আসবাবপত্র ও পরিধানের কাপড়চোপড় নষ্ট হয়ে যায়। এমন অবস্থায় তার প্রতিবেশীর একটি রান্নাঘরে খুবই কষ্টে বসবাস করছেন।
এমন সংবাদ পেয়ে শনিবার দুপুরে ওই কৃষকের বাড়িতে ছুটে যান ইউএনও মো. আশরাফুল আলম রাসেল। জামাল উদ্দিনের বাড়িতে গিয়ে তার খোঁজ-খবর নেন এবং সরকারি ত্রাণসামগ্রী তুলে দেন তার হাতে।
শুধু জামাল নয়, গত চার দিনে জামালের মতো আনোয়ারা, আসমত, আজগর আলীসহ প্রায় তিন শতাধিক মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের বিধ্বস্ত ঘরবাড়ি পরিদর্শন করেছেন ও তাদের হাতে তুলে দিয়েছেন ত্রাণসামগ্রী। এবারের বন্যায় অন্তত পাঁচ হাজার পরিবার পেয়েছে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের খাদ্যসহায়তা।
রামেরকুড়া গ্রামের হারেজ মিয়া বলেন, ২০২১ সালের বন্যায় আমার একটি বসত ঘর ভেগে গিয়েছিল। কিন্তু এবারের বন্যায় আমার এবং আমার দুই সন্তানের তিনটি বসত ঘর, গোয়াল ঘর, রান্না ঘর নদীর প্রবল ¯্রােতে ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। বসতভিটা গেলে বুকটা ফেটে যায়। আমার আর কিছুই নেই। ইউএনও স্যার নিজে আমার বাড়িতে এসে আমাকে চাল, ডাল, তেল, আলু, পেঁয়াজ, হলুদ-মরিচের গুঁড়ো প্যাকেটসহ নৃত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের তিন পরিবারের জন্য তিনটি প্যাকেট দিয়েছেন।
ইউএনও মো. আশরাফুল আলম রাসেল, ‘আকস্মিক এই বন্যার পর থেকে বন্যার্তদের আমরা সহযোগিতা করছি এবং সহযোগিতা অব্যাহত রাখছি। স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবীর মাধ্যমে জানতে পেওে দ্রæত ওই পরিবারের কাছে ছুটে যাই। ত্রাণসামগ্রী তুলে দিই। সরকারি-বেসরকারি, সামাজিক, রাজনৈতিক দল, স্বেচ্ছোসেবী সংগঠনসহ আমরা সবাই সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি, একটা পরিবারও যেন এই বন্যায় অভুক্ত না থাকে।’
তিনি আরও বলেন, বন্যার্ত ব্যক্তিদের সহযোগিতা করতে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, স্বেচ্ছাসেবক ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল কাজ করেছেন। এখনও তাদের কাজ অব্যাহত আছে। যাদের ঘর-বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে টিন চেয়ে পত্র পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।