নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশকে বিভিন্ন সেবা ক্ষেত্রে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে হবে। এক পোশাক ক্ষেত্রে রপ্তানি দিয়ে হবে না। বিভিন্ন দেশে দক্ষ জনশক্তির চাহিদা আছে। সে জায়গাগুলোতে বাংলাদেশকে কাজ করতে হবে।
শনিবার ( ১০মে ২০২৫) তারিখ জাতীয় প্রেসক্লাবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রাক্তন অর্থনীতি ছাত্রসমিতি (কিউয়েসা) কর্তৃক আয়োজিত “অর্থনীতির অভিবাসন ও দক্ষ জনশক্তিঃ বাংলাদেশ প্রসঙ্গ” শীর্ষক এক সেমিনারে উপরোক্ত বিষয়সমূহ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
আলোচনায় অংশ নেন কিউয়েসা এর সভাপতি ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সাবেক যুগ্মসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব মোহম্মদ আবদুল্লাহ। তার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন যুক্তরাজ্য প্রবাসী ইমিগ্রেশন বিষয়ক আইনজীবি ও কিউয়েসা এর আজীবন সদস্য ব্যারিস্টার মির্জা জিল্লুর রহমান এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সাবেক অতিরিক্ত সচিব ও কিউয়েসা এর আজীবন সদস্য জনাব আজিজুন নাহার শ্যামলী।
এছাড়া আরো উপস্থিত ছিলেন, জনাব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়া, মুখ্য সচিব, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা এর কার্যালয় ও আজীবন সদস্য, কিউয়েসা, জনাব মোঃ মুসলিম চৌধুরী, চেয়ারম্যান, সোনালী ব্যাংক ও সাবেক অর্থ সচিব; প্রফেসর ড. রুমানা হক, অর্থনীতি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; জনাব মাহমুদুর রহমান মান্না, রাজনীতিক ও আজীবন সদস্য, কিউয়েসা।
বক্তারা বলেন, অগ্রসরায়মান ও স্থিতিশীল অর্থনৈতিক কাঠামো বিনির্মানে বাংলাদেশকে তার ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড (Demographic Dividend) সুবিধা গ্রহণ করতে হবে। তাই জনবলকে বাজার চাহিদা অনুযায়ী দক্ষ করে গড়ে তোলা এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা অপরিহার্য। বাংলাদেশের এক বৃহৎ জনগোষ্ঠী বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মরত রযেছে। বিশেষ করে মধ্য প্রাচ্যের শ্রম বাজারে বাংলাদেশের বড়মাত্রার অংশগ্রহণ থাকলেও ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশসমূহের শ্রম বাজারে বাংলাদেশী শ্রমিকদের কাংখিত মাত্রার অংশগ্রহণ নেই।
বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি তৈরি পোশাক রপ্তানী আয় ও প্রবাসী শ্রমিকদের পাঠানো আয় (রেসিডেন্স)। সাম্প্রতিক বিভিন্ন পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে যে- আন্তর্জাতিক শ্রম বাজারে বিশেষ করে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত বিভিন্ন দেশ- জার্মানী, পোল্যান্ড, নেদারল্যান্ড, রোমানীয়া, পর্তুগাল-এ নার্সিং, আইটি, নির্মাণ শিল্প, প্রকৌশল, কৃষি, পরিবহন, স্বাস্থ্যসেবা, বৃদ্ধসেবা ইত্যাদি খাত ও পেশায় দক্ষ শ্রমিকের চাহিদা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২০২৪ সালের এক পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে যে, বিভিন্ন খাত ও পেশায় জার্মানীতে ২০ লক্ষ, পোল্যান্ডে আড়াই লক্ষ, রোমানীয়ায় দেড় লক্ষ, নেদারল্যান্ডে তিন লক্ষ এবং পর্তুগালে এক লক্ষ বিশ হাজার শ্রমিকের চাহিদা ছিল। ভারত, ফিলিপাইন, নেপাল হতে বর্তমানে প্রচুর শ্রমিক ইউরোপে যাচ্ছে।
এক্ষেত্রে দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে বাংলাদেশ এই শ্রমবাজারের সুবিধা গ্রহনে ব্যর্থ হবে এবং সম্ভাবনাময় প্রবাসী আয় লাভে সফল হবে না। তাই আন্তর্জার্তিক শ্রম বাজারের চাহিদা অনুযায়ী দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার জন্য সরকারী/বেসরকারী পর্যায় অধিক মাত্রায় প্রয়োজনীয় উদ্যোগ প্রয়োজন। একই সঙ্গে বিদেশ যাত্রার ক্ষেত্রে সরকারী বিভিন্ন সেবাকে আরও সহজ করা এবং তথ্য ভান্ডারকে সমৃদ্ধ করা প্রয়োজন।