নিউজ ডেস্ক: দেশের সর্ববৃহৎ ঈদুল ফিতরের নামাজের জন্য জেলা শহরের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহের প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন। এবছর এই ঈদগাহে ঈদুল ফিতরের ১৯৮তম জামাত অনুষ্ঠিত হবে। নামাজ শুরু হবে সকাল ১০টায়। এবছর জামাতে খুৎবা পাঠ, ইমামতি ও মোনাজাত পরিচালনা করবেন শহরের বড়বাজার মসজিদের খতিব মুফতি আবুল খায়ের মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ। বিকল্প ইমাম হিসেবে প্রস্তুত থাকবেন হয়বতনগর এ ইউ কামিল মাদ্রাসার প্রভাষক মাওলানা জুবায়ের ইবনে আব্দুল হাই। এবছর ছয় লক্ষাধিক মুসল্লি এই ঈদগাহে নামাজ আদায় করবেন বলে আয়োজকরা ধারণা করছেন।
ইতিমধ্যে মাঠের মধ্যে কাতারের জন্য লাইন টানা, মিম্বর এবং দেওয়ালে চুনকামের কাজও শেষ হয়েছে। মাঠের আগাছা সাফ এবং মাঠের মধ্যে ছোট ছোট গর্ত মাটি ফেলে ভর্তি করা হয়েছে। স্থায়ী ওজুখানা ছাড়াও মুসল্লিদের জন্য সংলগ্ন পুকুরগুলোর ওপর মাচা বেঁধে অস্থায়ী ওজুখানার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ মাঠের চারদিকে অস্থায়ী নলকূপ স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
শনিবার (২৯ মার্চ) মাঠ পরিদর্শনে আসেন জেলা প্রশাসক ও ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফৌজিয়া খান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী ও র্যাব-১৪ ময়মনসিংহ-এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি নায়মুল হাসান। জেলা প্রশাসক সাংবাদিকদের জানান, শোলাকিয়া ঈদগাহের সকল প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে। মুসল্লিদের টুপি, জায়নামাজ ও মোবাইল ফোন ছাড়া অন্য কোনো জিনিস সঙ্গে আনতে বারণ করা হয়েছে। ঈদগাহে নামাজ পড়তে আসা মুসল্লিদের নিরাপত্তার জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। মাঠে ও মাঠের বাইরে পুলিশ ও আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন ছাড়াও র্যাব, বিজিবি ও সেনাসদস্য নিয়োজিত থাকবে। মাঠে ও মাঠের বাইরে পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। মাঠে নিয়মিত সুইপিং করা ছাড়াও প্রধান ফটকসহ বিভিন্ন গেইট দিয়ে মুসল্লিরা প্রবেশ করার সময় মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে তল্লাশি করা হবে।
মুসল্লিদের আসা-যাওয়ার সুবিধার্থে ঈদের দিন বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ‘শোলাকিয়া এক্সপ্রেস’ নামে দুটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। একটি ট্রেন ময়মনসিংহ থেকে ভোর ৫-৪৫ মিনিটে ছেড়ে যাবে এবং কিশোরগঞ্জ এসে পৌঁছবে ৮টা ৪৫ মিনিটে। অপর ট্রেনটি ভৈরব থেকে ছেড়ে আসবে ভোর ৬টায় এবং কিশোরগঞ্জ এসে পৌঁছবে সকাল ৮টায়। নামাজ শেষে উভয় ট্রেন স্ব স্ব গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবে বেলা ১২টায়।
জেলা প্রশাসক জানান, দূর-দূরান্তের মুসল্লিদের জন্য মাঠসংলগ্ন আজিমউদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়, কুমুদিনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বাগে জান্নাত নূরানি মাদ্রাসায় থাকার ব্যবস্থা এবং তাদের ইফতার ও খাবারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। দূর-দূরান্তের মুসল্লিরা ইতিমধ্যেই শহরে আসতে শুরু করেছেন। তারা আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে, হোটেলে কিংবা শহর ও আশপাশের বিভিন্ন মসজিদে এসে উঠছেন।
রেওয়াজ অনুযায়ী মুসল্লিদের প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য সতর্ক সংকেত হিসেবে পাঁচ মিনিট পূর্বে তিনটি, তিন মিনিট আগে দুইটি ও এক মিনিট আগে একটি বন্দুকের গুলি ছোড়া হবে।