নিউজ ডেস্ক: আসছে বোরো মৌসুমকে সামনে রেখে যশোরের শিল্প বানিজ্য বন্দর নগরী নওয়াপাড়া থেকে সারদেশে নির্বিঘে ছড়িয়ে যাচ্ছে সার। দেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলায় প্রান্তিক চাষিদের কাছে নন ইউরিয়া সার সরবরাহ স্বাভাবিক থাকায় এবার ফসল উৎপাদনের লক্ষমাত্রা পূরনের সম্ভাবনা রয়েছে।
সরকারের সময়োপযোগী সিদ্ধান্তকে বাস্তবায়নে সকল প্রতিকুলতার মধ্যে দেশের আমদানীকারক প্রতিষ্ঠান নোয়াপাড়া গ্রুপের ব্যবস্থাপনায় সারাদেশে প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে ডিলারদের মাধ্যমে পৌছে দেয়া হচ্ছে সকল প্রকার নন ইউরিয়া সার। দেশের সবচেয়ে বড় সারের মোকাম যশোরের নওয়াপাড়ায় অবস্থান আমদানি কারক প্রতিষ্ঠান নোয়াপাড়া গ্রুপের। মূলত এখান থেকে দেশের ডিলারদের মধ্যে চাহিদার ৪০/৫০ ভাগ সার সরবরাহ করা হয়। সড়ক, নৌ ও রেলপথের চমৎকার যোগাযোগ ব্যবস্থা থাকায় আমদানি কারকরা এই মোকামে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে মংলা বন্দরের মাধ্যমে নওয়াপাড়া মোকামে সার নিয়ে আসে। এখানে আমদানীকারদের কাছ থেকে বিসিআইসি ডিলাররা তাদের বরাদ্দ পত্র দিয়ে সার উত্তোলন করে বিভিন্ন জেলা উপজেলায় কৃষকদের কাছে তা পৌঁছে দেয়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দেশের অন্যতম আমদানি কারক প্রতিষ্ঠান নোয়াপাড়া গ্রুপের অন্যতম অঙ্গ প্রতিষ্ঠানসমূহ প্রতিদিন বিভিন্ন জেলা উপজেলা থেকে আসা শত শত বিসিআইসি ডিলারকে কাগজ পত্র যাচাই বাছাই করে সার সরবরাহ করছে। বিভিন্ন জেলা থেকে নওয়াপাড়া আসা সাতক্ষীরার বিসিআইসি ডিলার মেসার্স বি,কে ট্রেডার্সের মালিক বিশ্বজিত ঘোষ জানান,টাকা জমার ৪৮ ঘন্টার মধ্যে সার উত্তোলন করি। ডিলারের প্রতিনিধি মেসার্স মান্নান এন্ড ব্রাদার্স এর প্রোপাইটার আ:মান্নান জানান, টাকা জমার দেয়ার এক-দুই দিনের মধ্যে সার সরবরাহের ডিউ পেয়ে থাকি।এছাড়া বেশ কয়েকজন বিসিআইসি ডিলার সরবরাহ নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন আমদানীকাররা সঠিক ভাবে সময়মত সার সরবরাহ করছে। এতে আমরা খুশি। অপরদিকে আমদানি কারক প্রতিষ্ঠানের সরবরাহের দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তা মোঃ সাইফুল ইসলাম জানান, ডিলারদের কাছ থেকে বরাদ্দ পত্র ও ব্যাংকে টাকা জমা যাচাই করে দ্রুত সময় সার সরবরাহ করে আসছি। ২০২৪সালের নভেম্বর মাসে -৮৩ হাজার ৭শ’৫৫মেট্রিক টনসার -বরাদ্দ ছিল ডিলাররা উত্তোলন করেছে ৮৩হজার ৭’২৫ মেট্রিক টন। ডিসেম্বর -৭২হাজার ৫শ’৫০ মেট্রিক টন সার বরাদ্দ ছিল।ডিলাররা উত্তোলন করেছে ৭১হাজার ৪শ’৮’২৫ মেট্রিক টন।ডিসেম্বর মাসের সার সরবরাহ চলমান রয়েছে। জানুয়ারী২০২৫ মাসের ১লক্ষ ৩৭হাজার ১৭৫মেট্রিক টন সার বরাদ্দ হয়েছে।যা সরবরাহ চলমান রয়েছে। এই সার ডিলাররা উত্তোলন করে তাদের স্ব স্ব এলাকায় নিয়ে কৃষকদের মাঝে পৌছে দিচ্ছেন। ডিলাররা যাতে কোন রকম হয়রানী না হয় সেদিকে লক্ষ রাখছি। তাছাড়া প্রতি সপ্তাহের ডেলি ভারী রির্পোট প্রতি সপ্তাহে মন্ত্রনালয়ে প্রেরন করা হয়।
তিনি আরো জানান, সরকারী সার নীতিমালা উপেক্ষা করে গত বছরের ৩ ডিসেম্বর স্থানীয় থানায় তিন বিসিআইসি ডিলার সার উত্তোলন করে পাচার করছিল। তাদের বিরুদ্ধে স্থানীয় কৃষি বিভাগ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করেছে।
এ বিষয়ে নওয়াপাড়া গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাঈদুর রহমান লিটুর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান,দেশে সারের সংকট না হয় তার জন্য আমরা সার নীতিমালা অনুস্বরন করে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সাথে সার্বক্ষনিক যোগাযোগ রেখে সর্বাত্মক ভাবে কাজ করে যাচ্ছি। ডলার সংকট এলসি জটিলতাসহ সকল প্রতিকুলতা উপেক্ষা করে সার আমদানী করে কৃষকদের ফসল উৎপাদনে ভৃমিকা রাখছি আমরা।
বিএডিসির খুলনা জোনের সহকারী পরিচালক শরীফ সাইফুল আলমের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান আমদানী ও পরিবহনে নওয়াপাড়া ট্রেডার্স উল্লেখ যোগ্য ভৃমিকা রাখছে।
বাংলাদেশ ফাটিলাইজার এসোসিয়েশনের ভাইস চেয়ারম্যান শাহ জালাল হোসেন বলেন,ডিলাররা তাদের সার স্ব স্ব স্থানে কৃষকদের পৌঁছে দেয় এবং এক স্থানের সার অন্য স্থানে না নেয় সেদিকে আমাদের লক্ষ থাকবে। সার নীতি মালা কেউ না মানলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য আমাদের সহায়তা থাকবে। তিনি আরো জানান,আমি একজন ডিলার হিসেবে টাকা জমা দিয়ে দুইদিনের মধ্যে ডিউ পেয়েছি। তবে কোন ডিলার যদি সময় মত সার উত্তোলন না করে তাহলে আমদানিকারক সেই সার অন্যত্র ডিলার কে বরাদ্দ দিতে পারবে।
অভয়নগর থানা বিএনপির সাধারন সম্পাদক কাজী গোলাম হায়দার ডাবলু জানান,আমি প্রায় নওয়াপাড়া গ্রুপে সার সরবরাহ সঠিক ও সময়মত হচ্ছে কি না তা খোজ খবর নিয়ে থাকি। আমি খোজ নিয়ে ও নিজে উপস্থিত থেকে দেখেছি ডিলাররা নিবির্ঘে সার সরবরাহ পাচ্ছেন।
অভয়নগর উপজেলা কৃষি অফিসার লাভলী খাতুন বলেন, সার ডিলার নিয়োগ ও বিতরন নীতিমালায় ২০০৯ বলা হয়েছে ডিলার নিজে অথবা তার বৈধ প্রতিনিধি ছাড়া কেউ সার উত্তোলন করতে পারবে না। এটা যেন না হয় সেটা আমরা লক্ষ করছি এবং এক এলাকার সার যেন অন্য এলাকায় কেউ বিক্রি করতে না পারে তার জন্য আমরা সজাগ রয়েছি।