ঢাকা  মঙ্গলবার, ৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ; ২০শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ          সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

spot_img
Homeখেলাভারত পাকিস্তান যুদ্ধে উপমহাদেশের ক্রীড়াঙ্গন বন্ধের উপক্রম

ভারত পাকিস্তান যুদ্ধে উপমহাদেশের ক্রীড়াঙ্গন বন্ধের উপক্রম

নিউজ ডেস্ক : গত ২২ এপ্রিল ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হন। তার পর থেকেই উত্তেজনার শুরু ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে।

এমন হামলায় দুই দেশেই পরিস্থিতি থমথমে। যে কোনো সময় আর বড় হামলার ঘটনা ঘটে যেতে পারে। এই দুই দেশের এমন সংঘাতের প্রভাব পড়তে পারে খেলার মাঠেও। শঙ্কা দেখা দিয়েছে বাংলাদেশের দুটি দ্বীপাক্ষিক সিরিজসহ চলতি বছর ভারতে বসতে যাওয়া নারী বিশ্বকাপ নিয়ে। ভাবাচ্ছে আগামী বছরে বসতে যাওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপও।

তবে শুধু ক্রিকেট নয়, আরো অনেক টুর্নামেন্ট নিয়েও দেখা দিয়েছে শঙ্কা। তার মধ্যে অন্যতম আগামী বছরের শুরুতে পাকিস্তানে বসতে যাওয়া সাফ গেমস নিয়ে।
দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে নতুন এই সংকটে যে আরো ভয়াবহ তিক্ত সম্পর্কের রূপ ধারণ করবে দক্ষিণ এশিয়ার ক্রীড়াঙ্গনে, তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। এই সংকট দীর্ঘায়িত হলে উপমহাদেশের পুরো ক্রীড়াঙ্গন বন্ধের উপক্রম; যা প্রভাব ফেলবে গোটা বিশ্বে। এর মধ্যে চলতি বছর ও আগামী বছর ভারতে বসবে দুটি বিশ্বকাপ। এমন পরিস্থিতিতে খেলা মাঠে গড়াবে কি না, তা নিয়ে ভাবাচ্ছে গোটা ক্রিকেট বিশ্বকে।

দুই দেশেই বর্তমানে চলছে ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেট। ভারতে আইপিএল ও পাকিস্তানে চলছে পিএসএল। যেখানে অংশ নিতে বিভিন্ন দেশের ক্রিকেটাররা দেশ দুটিতে অবস্থান করছে। তবে বর্তমান সংঘাতে নিরাপত্তাঝুঁকি নিয়েই তাদের সেখানে অবস্থান করার পাশাপাশি খেলতে হচ্ছে। হয়তো তাদের মনে ভয় রয়েছে, যে কোনো সময় যে কোনো কিছু ঘটে যেতে পারার।

এদিকে এ মাসের শেষ দিকে পাকিস্তান সফরে যাওয়ার কথা বাংলাদেশ দলের। ইতিমধ্যে টাইগাররা অনুশীলন শুরু করেছে মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে। আগামী ১৭ ও ১৯ মে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে দুটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ, সূচি অনুযায়ী ম্যাচ দুটি খেলে সেখান থেকেই বাংলাদেশ দল পাকিস্তানে যাবে পাঁচ টি-টোয়েন্টির সিরিজ খেলতে। ২৫, ২৭ ও ৩০ মে এবং ১ ও ৩ জুন লাহোর আর ফয়সালাবাদে হবে ম্যাচগুলো।

স্বাভাবিকভাবেই শঙ্কা জেগেছে বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের পাকিস্তান সফর। বর্তমান উত্তাল পরিস্থিতিতে ক্রিকেটারদের প্রাণঝুঁকি নিয়ে দেশটিতে পাঠানো উচিত হবে কি না, তা নিয়েই রয়েছে ভাবনা। যদিও পরিস্থিতি গভীরভাবেই পর্যবেক্ষণ করছে বলে জানিয়েছে বিসিবি। তাদের চোখে ঝুঁকি মনে হলে হয়তো থামতে দিতে পারে লিটন দাসদের পাকিস্তান সফর।

অন্যদিকে চলমান সংঘাতে আগামী আগস্ট ভারতের বাংলাদেশ সফর নিয়ে শঙ্কা আরো বেড়ে গিয়েছে। যদিও এ নিয়ে গেল সপ্তাহ থেকেই চলছিল আলোচনা।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া এ নিয়ে তাদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, আন্তঃসীমান্ত উত্তেজনা উপমহাদেশের ক্রিকেট সূচি ব্যাহত করতে পারে, এর ছায়া পড়তে পারে বাংলাদেশ-ভারত সিরিজেও। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে, এমন একটি সূত্রের বক্তব্য দিয়ে জানিয়েছিল, ‘সফরটি সূচির (এফটিপি) অংশ হলেও কিছুই চূড়ান্ত নয়। বর্তমান পরিস্থিতির কারণে ভারতের বাংলাদেশ সফর না-ও হতে পারে। এমন সম্ভাবনাই বেশি।’ যদিও বিসিবি থেকে এ গুঞ্জনটিকে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল।

বাংলাদেশের দুটি দ্বিপাক্ষিক সিরিজ ছাড়াও এই সংঘাতের প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে আসন্ন দুটি ক্রিকেট বিশ্বকাপে। আগামী সেপ্টেম্বর আট দেশ নিয়ে ভারতে বসতে যাচ্ছে ১৩তম নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপ, তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না এলে শেষ পর্যন্ত হয়তো স্থগিত হতে পারে এই টুর্নামেন্টটি। এছাড়া এই সংঘাত দীর্ঘায়িত হলে একই ঘটনা ঘটতে পারে আগামী বছরে ভারত ও শ্রীলঙ্কার যৌথ আয়োজনে ২০ দল নিয়ে বসতে যাওয়া দশম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ক্ষেত্রেও।

তবে শুধু ক্রিকেট নয়, এই সংঘাত প্রভাব ফেলবে এই অঞ্চলের গোটা ক্রীড়াঙ্গনেই। আগামী বছরের জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে পাকিস্তানের তিনটি শহরে (লাহোর, ইসলামাবাদ ও ফয়সালাবাদ) বসার কথা রয়েছে চৌদ্দতম দক্ষিণ এশিয়ান গেমসের আসর। যেখানে স্বাগতিকরা ছাড়াও অংশ নেবে বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, ভুটান, মালদ্বীপ ও শ্রীলঙ্কার ক্রীড়াবিদরা। এই টুর্নামেন্টে ৩৭টা ইভেন্টে সাত দেশের ২ হাজার ৬৭২ জন ক্রীড়াবিদের অংশগ্রহণের কথা রয়েছে। তবে পাকিস্তান-ভারতের চলমান সংঘাতে থমকে যেতে পারে দক্ষিণ এশিয়ার ক্রীড়াবিদদের সবচেয়ে বড় টুর্নামেন্টটি।

এছাড়া এই সংঘাত দীর্ঘায়িত হতে শঙ্কার মুখে পড়তে পারে উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় ফুটবল টুর্নামেন্ট সাফ চ্যাম্পিয়নশিপও। যেটা এ বছর হওয়ার কথা ছিল কিন্তু বিভিন্ন ইস্যুতে পিছিয়ে নেওয়া হয়েছে আগামী বছরে। কিন্তু চলমান যুদ্ধের কারণে শেষ অবধি এটা মাঠে গড়ায় কি না, তা নিয়েই দেখা দিয়েছে শঙ্কা।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular