ঢাকা  বৃহস্পতিবার, ২রা শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ; ১৭ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ          সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

spot_img
Homeআন্তর্জাতিকময়মনসিংহে সত্যজিৎ রায়ের পূর্বপুরুষের বাড়ি ভাঙা বন্ধের আহ্বান ভারতের

ময়মনসিংহে সত্যজিৎ রায়ের পূর্বপুরুষের বাড়ি ভাঙা বন্ধের আহ্বান ভারতের

ময়মনসিংহে প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা ও সাহিত্যিক সত্যজিৎ রায়ের পূর্বপুরুষদের স্মৃতিবিজড়িত বাড়িটি ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ভারত। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, বাড়িটি সংস্কার ও পুনর্নির্মাণের মাধ্যমে সেখানে সাহিত্য-জাদুঘর বানাতে সহযোগিতা করতে ইচ্ছুক নয়াদিল্লি।

গতকাল মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “আমরা গভীর দুঃখের সঙ্গে লক্ষ করছি যে বাংলাদেশের ময়মনসিংহে অবস্থিত প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা ও সাহিত্যিক সত্যজিৎ রায়ের পূর্বপুরুষদের বাড়িটি ভেঙে ফেলা হচ্ছে। বাড়িটি তাঁর দাদা বিশিষ্ট সাহিত্যিক উপেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরীর ছিল।”

বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের মালিকানাধীন বাড়িটি জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে উল্লেখ করে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “বাংলার সাংস্কৃতিক জাগরণের প্রতীক হিসেবে ভবনটির ঐতিহাসিক গুরুত্ব বিবেচনা করে এটি ভেঙে ফেলার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করা এবং সাহিত্য জাদুঘর ও ভারত-বাংলাদেশের অভিন্ন সংস্কৃতির প্রতীক হিসেবে এর সংস্কার ও পুনর্নির্মাণের বিকল্পগুলো খুঁজে দেখা উচিত হবে।”

ভারত সরকার এই উদ্দেশ্যে সহযোগিতার হাত বাড়াতে ইচ্ছুক বলেও দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।

এদিকে সত্যজিৎ রায়ের পূর্বপুরুষদের স্মৃতিবিজড়িত বাড়িটি ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। মঙ্গলবার তিনি এ আহ্বান জানান।

প্রসঙ্গত, ময়মনসিংহ শিশু একাডেমি হিসেবে ব্যবহার করা হতো নগরীর হরিকিশোর রায় রোডের প্রাচীন বাড়িটি। জীর্ণ ভবনটিতে ২০০৭ সালের পর থেকে আর কোনো কার্যক্রম চালানো যায়নি। পরিত্যক্ত ভবনটি ভেঙে বহুতল ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে শিশু একাডেমি।

প্রাচীন স্থাপনাটি ভাঙার খবরে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন অনেকেই। স্থাপনাটি ভাঙার বিষয়ে কাগজপত্র চেয়ে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের শশীলজ জাদুঘরের মাঠ কর্মকর্তা সাবিনা ইয়াসমিন সোমবার জেলা শিশুবিষয়ক কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করেছেন।

সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, “এটি রায় পরিবারের ঐতিহাসিক বাড়ি। প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন হিসেবে বাড়িটি এখনো তালিকাভুক্ত না হলেও এসব স্থাপনা প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন হিসেবে তালিকাভুক্ত হতে পারে।”

ময়মনসিংহ শিশু একাডেমির জেলা শিশুবিষয়ক কর্মকর্তা মো. মেহেদী জামান বলেন, “ভাড়া বাসায় একাডেমির কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে সব প্রক্রিয়া মেনে স্থাপনাটি ভাঙা হচ্ছে। এখানে আপাতত একটি আধাপাকা স্থাপনা হবে।”

৩৬ শতাংশ জমিতে দাঁড়িয়ে থাকা স্থাপনাটি ঠিক রেখে চার-পাঁচ ঘরের আধাপাকা স্থাপনা করার সুযোগ কি ছিল না, এমন প্রশ্নের জবাবে এই কর্মকর্তা বলেন, “বাড়িটি থাকলে শিশুদের চলাচলে ঝুঁকি থাকত।” বাড়িটির ঐতিহাসিক গুরুত্ব তার জানা ছিল না বলেও স্বীকার করেন তিনি।

উল্লেখ্য, হরিকিশোর রায় ছিলেন কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার মসূয়া জমিদারবাড়ির জমিদার। তিনি বাংলা শিশুসাহিত্যের অন্যতম পথিকৃৎ উপেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরী, সুকুমার রায় ও সত্যজিৎ রায়ের পূর্বপুরুষ। এ সড়কে প্রাচীন একতলা ভবনটি ১৯৮৯ সাল থেকে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি ব্যবহার করা শুরু করে।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular