জাবি প্রতিনিধি: রাজধানী ঢাকার শাহবাগে আন্দোলনরত ইবতেদায়ি মাদ্রাসাশিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা।
পুলিশের এই ন্যাক্কার জনক হামলার প্রতিবাদে রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন চত্বর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যানারে মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি সড়ক প্রদক্ষিণ করে বটতলা এলাকায় গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন তাঁরা।
এসময় শিক্ষার্থীদের ‘ছাত্র-শিক্ষক-জনতা, গড়ে তোলো একতা’, ‘চব্বিশের চেতনা, পুলিশি রাষ্ট্র না’, ‘বাহ পুলিশ চমৎকার, সন্ত্রাসবাদের তাবেদার’, ‘টাকা যার শিক্ষা তার, এই নীতি মানি না’, ‘শিক্ষার আর্থিক দায়িত্ব রাষ্ট্রকে নিতে হবে’ ‘মাদ্রাসা শিক্ষা জাতীয়করণ, করতে হবে করতে হবে’ সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের।
এসময় দর্শন বিভাগের ৫১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের জাবি শাখার সংগঠক সজীব আহমেদ জেনিচের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা বক্তব্য দেন।
অর্থনীতি বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী প্রাপ্তি তাপসী বলেন, ‘পুলিশের সংস্কারে স্বৈরাচারী কাঠামো থেকে বের হওয়া জরুরি। কিন্তু এখনো সেটি হয়নি। পুলিশ একদিকে কিছু মিছিলকে সুরক্ষা দিচ্ছে, অন্যদিকে অন্য মিছিলে জলকামান, সাউন্ড গ্রেনেড এবং টিয়ারশেল প্রয়োগ করছে। কোনো সভ্য রাষ্ট্রে এমন বলপ্রয়োগ অগ্রহণযোগ্য। আমরা ঢাকায় মাদ্রাসা শিক্ষকদের উপর পুলিশের হামলার তীব্র নিন্দা জানাই।’
ছাত্র ইউনিয়ন জাবি শাখার একাংশের সভাপতি অমর্ত্য রায় বলেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম হাসিনা সরকারের পতনের পর নিপীড়নের চিত্র আর দেখব না। কিন্তু ইন্টারিম সরকার আসার পরও সেই নিপীড়ন অব্যাহত রয়েছে। শ্রমিকরা মজুরির দাবিতে রাস্তায় নামলে তাদের উপর গুলি এবং টিয়ারশেল নিক্ষেপ করা হয়। পুলিশি বাহিনীর কাঠামোগত সংস্কার এখনো হয়নি, এবং হামলায় জড়িত পুলিশদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে না। সরকারকে হুশিয়ারী করে তিনি বলেন, যদি এ সরকার জনগণের দাবি উপেক্ষা করে, তাহলে ছাত্র-শিক্ষক ও জনতা মিলে এ সরকারকেও বিদায় করতে বাধ্য হবে।’
প্রসঙ্গত, রবিবার দুপুরে শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে দেওয়া পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে ইবতেদায়ি শিক্ষকেরা প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে স্মারকলিপি দিতে সামনে এগোতে চাইলে তাঁদের লাঠিপেটা, কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ ও জলকামান থেকে পানি ছুড়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ।