ঢাকা  মঙ্গলবার, ৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ; ২০শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ          সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

spot_img
Homeলিডমেট্রোরেল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কর্মবিরতি

মেট্রোরেল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কর্মবিরতি

নিউজ ডেস্ক : এমআরটি পুলিশ সদস্যদের দ্বারা ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) চারজন সহকর্মী মৌখিক ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনায় কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছে কর্মীরা।তবে মেট্রোরেল চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

সোমবার সকাল থেকে একক যাত্রার টিকেট দেওয়া বন্ধ আছে, কেবল র‍্যাপিড পাস আছে- এমন যাত্রীরা যাতায়াত করতে পারছেন। ফলে মেট্রোরেল চলাচল করলেও ভোগান্তিতে পড়েছেন অন্য যাত্রীরা।

সোমবার সকাল ৭টায় ঢাকার মিরপুর-১০ নম্বর মেট্রোরেল স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, মেট্রোরেল স্টেশনে ওঠার সিঁড়ি এবং চলন্ত সিঁড়ির কলাপসিবল গেইট বন্ধ। এতে একটি বিজ্ঞপ্তি টানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, “সাময়িকভাবে মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ আছে। যাত্রীদের অসুবিধার জন্য দুঃখিত।”

ডিএমটিসিএলের একজন কর্মী নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে গণমাধ্যমকে বলেন, আমাদের স্টাফরা সবাই এসেছেন, আশপাশেই আছেন; কিন্তু কাজ করবেন না।

আজ সকাল সাড়ে ৮টার দিকে কাওরান বাজার মেট্রো-স্টেশনে যাত্রীদের টিকিট ছাড়াই ঢুকতে দেখা যায়। সেখানে দাঁড়ানো আনসার সদস্য জানান, আজ তাদের টিকিটের সার্ভার বন্ধ আছে। টিকিট রিডিং মেশিনগুলো বন্ধ আছে। টিকিট পাঞ্ছ না করেই যাত্রীরা মেট্রোরেল ব্যবহার করছেন।

মেট্রোরেল কর্মীরা অভিযোগ করছেন, রোববার সোয়া ৫ টার দিকে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের চারজন কর্মীকে মৌখিক ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে এমআরটি পুলিশ সদস্যরা।

এ বিষয়ে রোববার মধ্যরাতে ‘ঢাকা ম্যাচ ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দে’র ব্যানারে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে কর্মবিরতির ঘোষণা দেওয়া হয়।

এতে বলা হয়, রোববার সোয়া ৫টার দিকে দুজন নারী কোনো পরিচয়পত্র না দেখিয়ে সাদা পোশাকে বিনা টিকেটে ট্রেনে ভ্রমণ করেন। ওই সময় তারা ইএফও (এক্সেস ফেয়ার কালেকশন) অফিসের পাশে অবস্থিত সুইং গেইট ব্যবহার করে পেইড জোন থেকে বের হতে চান। তারা নির্ধারিত ইউনিফর্ম পরা ছিলেন না, তাদের পরিচয় নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। এ অবস্থায় সেখানে দায়িত্বরত সিআরএ সুইং গেইট দিয়ে বের হওয়ার কারণ জানতে চান।

এতে পুলিশের কর্মকর্তারা উত্তেজিত হয়ে তর্কে জড়ান। একপর্যায়ে এমআরটি পুলিশের কন্ট্রোল রুমে চলে যান। পরে ঠিক একইভাবে দুজন এপিবিএন সদস্য সুইং গেইট ব্যবহার করে সুইং গেইট না লাগিয়ে চলে যান৷ এ বিষয়ে তাদের কাছে জানতে চাইলে তারাও আগের ঘটনার জের ধরে তর্কে জড়িয়ে পড়েন।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কিছুক্ষণ পর পুলিশ কন্ট্রোল রুম থেকে আরও কয়েকজন পুলিশ এসে দায়িত্বে থাকা সিআরএর সঙ্গে ইএফওতে তর্কে জড়িয়ে পড়েন৷ ইএফও থেকে বের হওয়ার সময় কর্মরত সিআরএর কাঁধে বন্দুক দিয়ে আঘাত করে এবং কর্মরত আরেকজন টিএমওর শার্টের কলার ধরে এমআরটি পুলিশ বক্সে নিয়ে গিয়ে মারধর করে।

এসময় গুলি করার জন্য বন্দুক তাক করে। তখন স্টেশনের স্টাফ ও যাত্রীরা এমআরটি পুলিশের হাত থেকে কর্মরত টিএমওদের উদ্ধার করে নিয়ে আসে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “আহত সিআরএকে চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ পরিস্থিতি মেট্রোরেলের কর্মপরিবেশের জন্য হুমকি।”

কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ৬ দফা দাবি
এদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ৬ দফা দাবি জানিয়েছে। এগুলো হলো-

আগামী এক কার্যদিবসের মধ্যে ঘটনার মূল হোতা উক্ত পুলিশ সদস্যকে (এস আই মাসুদ) স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করতে হবে ও ঘটনার সঙ্গে জড়িত সকল পুলিশ সদস্যকে শাস্তি দিতে হবে এবং তাদেরকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। মেট্রোরেল, মেট্রো স্টাফ ও যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য নিজস্ব সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তুলতে হবে। এমআরটি পুলিশকে অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।

এছাড়াও স্টেশনে দায়িত্বরত সিআরএ টিএমও, স্টেশন কন্ট্রোলারসহ অন্যান্য সকল কর্মীদের শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। অফিসিয়াল পরিচয় পত্র ছাড়া ও অনুমতি ছাড়া কোনো ব্যক্তি যেন স্টেশনের পেইড জোনে প্রবেশ করতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে।

আহত কর্মীর সম্পূর্ণ চিকিৎসার দায়িত্ব কর্তৃপক্ষকে নিশ্চিত করতে হবে।

এ দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত মেট্রোরেলের সকল স্টাফ কর্মবিরতি পালন করবে এবং প্রয়োজনে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular