নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেছেন, গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় এসেছে, তাদের প্রধান দায়িত্ব হওয়া উচিত বৈষম্যবিরোধী চেতনা ধারণ করা। যদি সরকার সত্যিই বৈষম্যবিরোধী হয়, তবে মে মাসের মধ্যেই জাতীয় ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা করা উচিত।
বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর পুরানা পল্টনে মহান মে দিবস উপলক্ষে গার্মেন্টসশ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র আয়োজিত শ্রমিক সমাবেশে মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম এসব কথা বলেন।
মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম আরও বলেন, এই দেশে মানুষ রক্ত দিয়েছে, শহীদ হয়েছেন—একটি বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার আশায়। শ্রমিক-মেহনতি মানুষের দাবির প্রতি বর্তমান সরকারের বিশ্বস্ত থাকা উচিত।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন গার্মেন্টসশ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সভাপতি মন্টু ঘোষ। তিনি বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানপরবর্তী সময়ে অন্তত চারজন শ্রমিকের প্রাণের বিনিময়ে ১৮ দফা ত্রিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। কিন্তু চুক্তি অনুসারে গার্মেন্ট শ্রমিকদের মজুরি পুনর্নির্ধারণ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। আগের স্বৈরাচারী সরকারের পদ্ধতিতেই নির্যাতনের পথে শ্রমিকদের দমন করা হচ্ছে।
সমাবেশে সংগঠনের উপদেষ্টা আবদুল্লাহ কাফি রতন অভিযোগ করেন, অন্তর্বর্তী সরকার দেশের মানুষ ও শ্রমিক শ্রেণির প্রতি দায়বদ্ধ থাকতে ব্যর্থ হলে প্রয়োজনে দ্বিতীয় গণ-অভ্যুত্থান গড়ে তোলা হবে।
গার্মেন্টসশ্রমিক বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের (গার্মেন্টস টিইউসি) সাধারণ সম্পাদক সাদেকুর রহমান শামীম সমাবেশে বলেন, গার্মেন্টস টিইউসি নেতারাসহ সাধারণ শ্রমিকদের নামে স্বৈরাচারী সরকারের আমলে দায়ের করা হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করা হয়নি। গণ-অভ্যুত্থানপরবর্তী শ্রমিক-জনতার আশাবাদ ক্রমেই ক্ষোভে রূপান্তরিত হচ্ছে।
সংগঠনের সহসভাপতি জলি তালুকদার বলেন, শ্রম আইনের শ্রমিক স্বার্থবিরোধী সব ধারা বাতিল করার দাবি আজও উপেক্ষিত। ৯০–এর গণ-অভ্যুত্থানের পর শ্রমিক-জনতা যেভাবে প্রতারিত হয়েছে, একই অভিজ্ঞতা জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ক্ষেত্রে যাতে না হয়, এ জন্য সতর্ক থাকতে হবে।
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন গার্মেন্টস টিইউসির প্রতিষ্ঠাতা উপদেষ্টা মনজুরুল আহসান খান, সহসভাপতি জিয়াউল কবীর খোকন, সহসাধারণ সম্পাদক মঞ্জুর মঈন, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক রথীন্দ্রনাথ বাপ্পী, গার্মেন্টস টিইউসির কেন্দ্রীয় নেতা মোহাম্মদ শাহজাহান, আব্দুস সালাম বাবুল, আজিজুল ইসলাম, রিফাত হাবিব প্রমুখ।
সমাবেশ শেষে লাল পতাকার মিছিল করেন সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। পল্টন মোড় থেকে শুরু হয়ে প্রেসক্লাব, কদম ফোয়ারা হয়ে আবার পল্টন এসে শেষ হয়। মহান মে দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, আশুলিয়া, কাঁচপুরসহ ১৩টি শিল্প এলাকায় গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের উদ্যোগে পৃথক শ্রমিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।