নিজস্ব প্রতিবেদক: ১৪ জুলাই ২০২৫, সোমবার মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক সাবেক সংসদ সদস্য ও গণফোরাম সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তফা মোহসীন মন্টুর স্বরণে শোকসভা ঢাকাস্থ ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তন, রমনা , ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সভপতিত্ব করেন বাংলাদেশের সংবিধাণ প্রণেতা, গণফোরাম প্রতিষ্ঠাতা ও ইমেরিটাস ড. কামাল হোসেন।
স্বরণসভায় বক্তব্য রাখেন , মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মহাসচিব জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সদস্য, স্থায়ী কমিটি বিএনপি, শরীফ নুরুল আম্বিয়া সভাপতি জাসদ, মাহমুদুর রহমান মান্না সভাপতি নাগরিক ঐক্য, রুহিন হোসেন প্রিন্স-সাধারণ সম্পাদক বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), সাইফুল হক-সাধারণ সম্পাদক বিপ্লবী ওয়াকার্স পার্টি। বজলুর রশিদ ফিরোজ-সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), জুনায়েদ সাকী-প্রধান সমন্বয়কারী, গণসংহতি আন্দোলন, মজিবুর রহমান মঞ্জু চেয়ারম্যান, আমার বাংলাদেশ পার্টি, শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন-সাধারণ সম্পাদক, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), ডা ফৌজিয়া মোসলেম. সভাপতি বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, এড এস এম আলতাফ হোসেন, সভাপতি পরিষদ সদস্য, গণফোরাম, জৌষ্ঠ এডভোকেট সুব্রত চৌধুরী সভাপতি পরিষদ সদস্য, গণফোরাম।
উক্ত শোকসভায় উপস্থিত থাকার জন্য গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক ডা. মোহাম্মদ মিজানুর রহমান সকল সচেতন দেশপ্রেমিক নাগরিকদের আন্তরিক ভাবে আমন্ত্রন জানিয়েছেন ।
শোকসভায় প্রয়াত রাজনীতিবিদ মোস্তফা মোহসীন মন্টুকে ‘আপাদমস্তক দেশপ্রেমিক’ হিসেবে অভিহিত করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্র—এই দুটি বিষয়কে কেন্দ্র করেই মন্টুর রাজনীতি আবর্তিত হয়েছে। তিনি বলেন, মন্টুর মতো ত্যাগী নেতাদের দেখানো পথেই দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হবে।
শোকসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। গণফোরামের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মোহসীন মন্টুর স্মরণে এই সভার আয়োজন করা হয়।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মোস্তফা মোহসীন মন্টুর সঙ্গে তার দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত সম্পর্কের স্মৃতিচারণ করে বলেন, “মন্টুর সঙ্গে আমার পরিচয় দীর্ঘদিনের, যখন আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র ছিলাম। আইয়ুব খানের সেই দুঃশাসনের সময়ে তিনি ছাত্রলীগ করতেন এবং আমি ছাত্র ইউনিয়নের (মেনন গ্রুপ) সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। ভিন্ন দলে থাকলেও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে আমরা একসঙ্গে কাজ করেছি। আমাদের মধ্যে এক গভীর বন্ধুত্ব সৃষ্টি হয়েছিল, যার ভিত্তি ছিল মূলত রাজনৈতিক।”
তিনি আরও বলেন, মোস্তফা মোহসীন মন্টু সম্পর্কে এক কথায় বলতে গেলে, তিনি ছিলেন একজন আপাদমস্তক দেশপ্রেমিক রাজনীতিবিদ। তার রাজনীতির দুটি প্রধান ভিত্তি ছিল—বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব এবং গণতন্ত্র।
ফখরুল বলেন, “আজকে যখন শুনি দেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে বিকৃত ইতিহাস প্রচার করা হচ্ছে, তখন অত্যন্ত উদ্বিগ্ন হই। একটি মহল সুপরিকল্পিতভাবে দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা এবং গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দিয়েছে।”
বিএনপি মহাসচিব উল্লেখ করেন, রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা বিএনপি প্রথম উপলব্ধি করে। তিনি বলেন, “২০১৬ সালে আমরা ‘ভিশন-২০৩০’ ঘোষণা করি। পরবর্তীতে বিভিন্ন দল ও ব্যক্তির সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে যুগপৎ আন্দোলনের ভিত্তিতে আমরা ২৭ দফা রূপরেখা দিয়েছি।”
তিনি আরও বলেন, “মোস্তফা মোহসীন মন্টু চলে যাওয়াতে আমাদের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। আমরা যারা গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করছি, তাদের জন্য এটি বিরাট শূন্যতা।”-
সবশেষে তিনি প্রয়াত নেতার আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং তার পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, মন্টুর স্বপ্ন অনুযায়ী একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা হলেই তার আত্মা শান্তি পাবে।