মনজু বিজয় চৌধুরী, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি : হাতে কাজ না থাকায় অলস সময় পার করছেন মৌলভীবাজার জেলার শব্মৌদকর জনগোষ্ঠি। জেলায় বসবাসরত শব্দকর জনগোষ্ঠী বলছেন, ডিজিটাল যুগে নিত্যনতুন ইলেকট্রনিক যন্ত্র সামগ্রী তৈরির কারণে দেশীয় যন্ত্রের চাহিদা অনেক কমে গেছে। এখন আর তাদের কদর নেই।
জানা যায়, মৌলভীবাজার জেলার মোট ৭টি উপজেলাতেই শব্দকর জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে। এদের দেখার কেউ নেই। তারা বলেন, ‘বর্তমানে এই ব্যবসা আমরা যেভাবে ধরে রেখেছি পরবর্তী প্রজন্ম তা করতে পারবে বলে মনে হয় না। পূর্ব পুরুষের পেশাকে টিকিয়ে রাখতে এবং ঐতিহ্য ধরে রাখতে এখনো চেষ্টা করছেন তারা। কিন্তু দিনবদলের সাথে সাথে হারিয়ে যেতে বসেছে ঢাক, ঢোল, খাসা। আগে বিয়ে বাড়িতে বায়না করলে যে পরিমাণে টাকা পাওয়া যেত এখন তা পাওয়া যায়না, বরং বিভিন্ন জাত পাত ও বর্ণ বৈষম্যের শিকার হতে হয়। ৭-১০ জনের টিম নিয়ে শব্দকররা অনুষ্ঠানে যাওয়া হয়। মাঘ- ফাল্গুন মাসে একটু ভালো উপার্জন করা যায় দশ থেকে বিশ হাজার টাকা। কিন্তু মাঘ- ফাল্গুন মাসের শেষ হলে তেমন উপার্জন করা যায় না, তখন পাঁচ থেকে সাত হাজার টাকা উপার্জন করা যায় বলে জানান তারা।
শব্দকররা জানান ৭০ বছর ধরে এই ব্যবসায় আছি। ৭০ বছর ধরে এই ব্যবসার মাধ্যমেই সংসার চলে। সংসার চালানোর মতো উপায় নেই। এখন এইভাবেই আমাদের চলছে। বাদ্যযন্ত্রই আমাদের সম্বল, বাদ্যবাদের সিজনে আমরা যা উপার্জন করার করি, অন্য সময় আমরা বেকার থাকি,। সংগ্রামের পর অনেকে কাজ শিখেছেন,পরে অন্যদেরকেও এই শব্দকরের কাজ শিখিয়েছেন অনেকে। তারা বলেন, সিজনে ব্যান্ড পার্টি বাজিয়ে আমাদের উপার্জন হয়, কিন্তু অন্যসময় আমাদের অন্য কাজ করতে হয়।
রমন শব্দ কর জানান, সংসার অচল, কি করে বাঁচবো, কি করে চলবো? বিয়ে বাড়িতে বায়না নিয়ে গেলে পাঁচ হাজার পাওয়া যায়, আবার কারো বাড়িতে বায়না নিয়ে গেলে দুই হাজার হাজার পাওয়া যায়।
মৌলভীবাজার জেলা সমাজসেবা উপপরিচালক মো: হাবিবুর রহমান বলেন, শব্দকর জনগোষ্ঠীরা তাদের বরাদ্দকৃত যা অর্থ আছে তা দিয়ে দেওয়া হয়। শব্দকর জনগোষ্ঠীর জন্য আর কোনো বরাদ্দ নাই। অন্যদিকে চা গোষ্ঠীর এককালীন পাঁচ হাজার টাকা, গৃহ নির্মাণ বরাদ্দ আছে। কিন্তু শব্দকর জনগোষ্ঠীর জন্য এসব বরাদ্দ নেই।