ঢাকা  মঙ্গলবার, ৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ; ২০শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ          সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

spot_img
Homeসারাদেশমৌলভীবাজারে দর্শনার্থীদের ভিড় থাকলেও বাইক্কা বিলে পাখি কম

মৌলভীবাজারে দর্শনার্থীদের ভিড় থাকলেও বাইক্কা বিলে পাখি কম

মনজু বিজয় চৌধুরী, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি : শীত সকালের কুয়াশা ভেদ করে মৌলভীবাজারের এ বছর অভয়াশ্রমে বাইক্কা বিলে পাখির কম থাকলেও মৌলভীবাজারসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে থেমে নেই দর্শনার্থী ও পাখিপ্রেমীদের ভিড়।

গত বছর যে পরিমান পাখি ছিলো,এ বছর পাখি কম মিলেছে। অতিথি পাখি এখানে যতটুকু আসার কথা ছিল এখানে তা মিলেনি। পাখিদের থাকার ব্যবস্থা, খাওয়ার সুব্যবস্থা এখানে নেই বা পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নেই। পাখি হুমকির মুখে আছে। পাখি শিকারী যারা আছে তারা পাখি মারার কারণে পাখি অনেক কমেছে। বিল জুড়ে শুধুই সাদা পানি আর পানি। এদিকে বিলের আকর্ষণ পদ্ম এখন আর খুঁজে পাচ্ছে না পর্যটকরা। এই অভয়ারণ্য টা সেরকম আছে বলে দর্শনার্থীরা মনে হয় না। পরিবেশের যদি আরো পরিচর্যা বা মনিটরিং যদি বারানো যেতো রক্ষণাবেক্ষণ যদি আরো ভালো করে হতো,আরো একটু দায়িত্বশীল ভাবে যদি কাজ করা হতো তাহলে ভালো হতো।

ডিসেম্বরের শুরু থেকেই বাইক্কা বিলে অতিথি পাখি আসতে শুরু করেছে। শীত শেষে মার্চে যখন গ্রীষ্মের শুরু তখন এসব পাখি আবার ফিরে যাবে আপন নীড়ে। যা জানুয়ারি পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। শীত শেষে মার্চে যখন গ্রীষ্মের শুরু তখন এসব পাখি আবার ফিরে যাবে আপন নীড়ে।
২০০৩ সালে বাংলাদেশ সরকারের ভূমি মন্ত্রণালয়, বিলুপ্ত প্রজাতি মাছের বংশ রক্ষার্থে হাইল হাওরের তিনটি বিলের সমন্বয়ে ১০০ হেক্টর আয়তনের জলাভূমিকে একটি স্থায়ী অভয়াশ্রমকে হিসাবে ঘোষণা করা হয়। বাইক্কা বিল অভয়াশ্রমটির জীববৈচিত্র্য ফিরে পাওয়া ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য শুরু থেকে সরকার বড়গাংগিনা সম্পদ ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করে।

বাইক্কা বিল ঘুরে দেখা যায়, এ মৌসুমে বেগুনি কালেম, নতুন আসা শাঁমুক ভাঙ্গা, কালকৌট, লেঞ্জা, বালি হাঁস ও দেশিয় প্রজাতির কিছু সংখ্যক পাখির উপস্থিতি দেখা গেছে। এতে পরিযায়ী পাখির সংখ্যা দিন দিন কমে আসছে।’

বাইক্কা বিলের একজন দর্শনার্থীর জাহিদুল ইসলাম বলেন বাইক্কা বিলে পরিবারের সাথে ঘুরতে আসছি , এখানে আগে কখনো আসা হয় নি এই প্রথম আসা। এই উদ্দেশ্যে আসছিলাম যে পাখিদের অভয়ারণ্য থাকে এখানে। কিন্তু এখানে এসে দেখা যাচ্ছে পরিযায়ী পাখির আনাগোনা অনেক কম। পানিতে এসব না থাকলে পাখিরা পানিতে বসে না।

আরো একজন দর্শনার্থী দিনাজপুর থেকে এসেছেন সুমি আক্তার বলেন আমরা ভিডিওতে বাইক্কা বিলের সৌন্দর্য দেখে এখানে এসেছি। ভিডিওতে দেখেছিলাম অনেক পাখি ছিল। কিন্তু বাস্তবে এসে দেখলাম পাখি অনেক কমেছে। এদের আরো যত্নের দরকার । প্যটেনাইজ করলে হয়তো আরো ভালো হবে। ট্যুরিস্টরা আসলে আনন্দ পাবে।

দর্শনার্থীরা জানান অভয়াশ্রম এটা অনেক বড় বিষয় পাখিরা এসে যখন নিরাপদ অনুভব করবে তখনই আসবে। এখানে পাখিদের আসার জন্য পরিস্থিতি তৈরি করা যায় তাহলে অবশ্যই পাখিরা আসবে। বাইক্কা ঘুরে মনোরন দৃশ্য দেখে তারা মধ্যে প্রশান্তি ফিরে পেয়েছেন। ওরা বুঝবে যে ওদেরকে কেউ ধরে নিয়ে গেল, তাদের নিরাপত্তা নাই। অন্তরে তো সবারই ভয়ভীতি কাজ করে। ওরা তো পাখি ,ওরাও ভয় পায় যে ওদেরকে কেউ ধরে নিয়ে যায় কিনা।

বাইক্কা বিল বড়গাংগিনা সম্পদ ব্যবস্থাপনা কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোঃ মিন্নত আলী বলেন বাইক্কা বিলে এবছর তুলনামূলক পাখি কম তার প্রধান কারণ হলো বাইক্কা বিলে শাপলা,শালুক, কচুরিপানা কম।

বাইক্কা বিলে শাপলা শালুক কচুরিপানা এসব কম থাকায় এবছর অন্যান্য বছরের তুলনায় অতিথি পাখি কম। যদি শাপলা শালুক কচুরিপানা বেশি থাকতো তাহলে পাখি বেশি থাকার সম্ভাবনা ছিল। আমার মনে হয় বাইক্কা বিলে যদি গাছগাছালি বেশি লাগানো যায় তাহলে পাখির সংখ্যা বাড়তে পারে।

বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ সিলেট মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বলেন বাইক্কা বিলের আশেপাশে পরিযায়ী পাখিগুলো কাছাকাছি নাই কিন্তু ভিতরের দিকে আমরা দেখেছি যে প্রচুর পরিমাণে পাখি আসছে। প্রতিদিন পাখিগুলো এখানে দেখা যাচ্ছে না কারণ এখানে গতবার প্রচুর পরিমাণে পদ্ম ছিল, এবছর সেই পদ্ম নাই। এই পদ্ম না থাকার একটা কারণ হচ্ছে যে এবছর প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়ে অতিরিক্ত বন্যা হয়ে এখানে প্রচুর কচুরিপানা আসছে। এই কচুরিপানা গুলো পদ্মের জন্য অনেক ক্ষতিকর। এটা একটা কারণ। আরেকটা কারণ হচ্ছে, পর্যটকরা এখানে এসে পাখিদের অনেক বিরক্ত করে। পাখিরা যদি ভয় ভিতি পায় তাহলে কাছাকাছি আসবেনা। এসবে আমাদের সচেতনতামূলক কার্যক্রম চলমান আছে।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular