আন্তর্জাতিক ডেস্ক : গত বুধবার (৯ অক্টোবর) রাতে ভারতের শীর্ষস্থানীয় শিল্পপতি রতন টাটা মুম্বাইয়ের একটি হাসপাতালে মারা যান। তার মৃত্যুতে গোটা ভারত শোকে মুহ্যমান। দেশটির রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে কাছের ব্যক্তিরা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। তাদের মধ্যে একজন ছিলেন ৩১ বছর বয়সি শান্তনু নাইডু। তিনি ছিলেন রতন টাটার নিকটতমদের মধ্যে অন্যতম। তবে প্রিয় বন্ধুকে বিদায় জানাতে এসে পুলিশি বাধার মুখে পড়েছিলেন শান্তনু নাইডু।
হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বৃহস্পতিবার বিকেলে রতন টাটার শেষকৃত্য অনুষ্ঠান হয়। তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে যাওয়ার সময় মুম্বাইয়ের রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশের বাধার সম্মুখীন হয়েছিলেন শান্তনু নাইডু।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করা এক ভিডিওতে দেখা যায়, সাদা পোশাক পরিহিত শান্তনু মোটরসাইকেল চালিয়ে যাচ্ছেন। এ সময় তাকে আটকে পরিচয় এবং কোথায় যাওয়া হচ্ছে এরকম একাধিক প্রশ্নে জেরা করে মুম্বাই পুলিশ। এ সময় অনেকটা আবেগপ্রবণ হয়ে পুলিশ অফিসারদের নাইডু আশ্বস্ত করেন, তিনি প্রিয় বন্ধুর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দিতে যাচ্ছেন।
প্রতিবেদনে জানিয়েছে, রতন টাটাকে তার অফিসের কাজে নিয়মিত সাহায্য করতেন শান্তনু। এছাড়া ফেসবুক, এক্স, ইনস্টাগ্রামের কোথায় কোন হ্যাশট্যাগ দিতে হবে, কোন ইমোজির মানে কী, এসব ব্যাপারেও রতনকে সাহায্য করতেন তিনি। শান্তনুর উৎসাহেই নিয়মিত ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করতেন রতন টাটা।
২০১৪ সালে প্রথম দেখা হয়েছিল দুজনের। জীবজন্তুর প্রতি ভালোবাসাই এই দুই অসমবয়সি মানুষকে পরিচয় ঘটিয়ে দিয়েছিল। তাদের বন্ধুত্বের বয়স ১০ বছর। ওই বছর শান্তনু পথকুকুরদের গাড়ি চাপা পড়া থেকে রক্ষা করার বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছিলেন শান্তনু। সেই উদ্যোগে মুগ্ধ হয়ে শান্তনুকে তার হয়ে কাজ করার আমন্ত্রণ জানান রতন টাটা।
পুনের এক তেলেগু পরিবারে ১৯৯৩ সালে জন্ম শান্তনুর। তিনি একজন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। পড়াশোনা করেছেন পুনে বিশ্ববিদ্যালয়ে। টাটাদের পরিবারের সঙ্গে তাদের পরিবারের পুরনো জানাশোনা থাকলেও শান্তনুর পরিবারের কেউ কখনও রতন টাটার সঙ্গে সরাসরি কাজ করেননি।
জুনিয়র ডিজাইন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে টাটা এলেক্সিতে কাজ শুরু করেন শান্তনু। তখন টাটা গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান ছিলেন রতন টাটা।
সমবয়সীদের তুলনায় বরাবরই একটু আলাদা ছিলেন এই যুবক। যার কারণে ৩১ বছর বয়সে ব্যবসায়িক দুনিয়ায় নিজের একটা আলাদা পরিচয় তৈরি করেন তিনি। পশুপাখি এবং সমাজ সেবামূলক কাজে গভীর অনুরাগ থেকে শান্তনু তৈরি করেন ‘মোটোপজ’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান। যেখানে পথকুকুরদের নিয়ে কাজ করা হয়।
বর্তমানে রতন টাটার অফিসে জেনারেল ম্যানেজার হিসেবে কাজ করছেন শান্তনু। সেই সঙ্গে নতুন নতুন স্টার্ট-আপে বিনিয়োগ করার পরামর্শ দেন টাটা গ্রুপকে।