নিউজ ডেস্ক : ডলার সংকটে ব্যাংকের এলসি খোলার অপারগতায় তেল-চিনির মতো ভোগ্যপণ্যের আমদানি কিছুটা কমছে। বিশ্ববাজারে ভোজ্যতেলের দাম বেড়েছে অন্তত ৩০ শতাংশ। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম হওয়ায় প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বাজারে। এ অবস্থায় এলসি খোলার ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো উদার না হলে আসন্ন রমজানে পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা ব্যবসায়ী ও ক্যাবের।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের উপ কমিশনার মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘তেল এবং চিনি, এগুলো আমদানি হচ্ছে। আমদানি করা এসব পণ্য যতদ্রুত সম্ভব খালাস করার জন্য কাস্টমস কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
বাংলাদেশে বছরজুড়ে ১৮ থেকে ২০ লাখ মেট্রিক টন চিনি এবং ২২ থেকে ২৪ লাখ মেট্রিক টন ভোজ্য তেলের চাহিদা রয়েছে। আর রমজান মাসে বাড়তি চাহিদা থাকায় ৩ থেকে ৬ মাস আগেই এসব পণ্য আমদানির এলসি খোলেন ব্যবসায়ীরা। এরইমধ্যে রমজান সামনে রেখে এলসি খোলা ভোগ্যপণ্যের আমদানিও শুরু হয়ে গেছে। তবে, তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেকটা কম বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। বিশেষ করে বিশ্ববাজারে ভোজ্য তেলের দাম বেড়েছে অন্তত ৩০ শতাংশ।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থ বছরের প্রথম চার মাসে বাংলাদেশে চিনি আমদানি হয়েছে ৪ লাখ ৩৮ হাজার মেট্রিক টন। তার বিপরীতে গত অর্থ বছরের এই সময়ে চিনি আমদানি হয়েছিল ৬ লাখ ৪৫ হাজার মেট্রিক টন। অর্থাৎ ২ লাখ ৭ হাজার মেট্রিক টন আমদানি ঘাটতি রয়েছে। একইভাবে দেড় লাখ মেট্রিক টন ঘাটতি রয়েছে ভোজ্য তেল পাম অয়েল আমদানির ক্ষেত্রেও। তবে এই চার মাসে ১ লাখ মেট্রিক টন বেশি আমদানি হয়েছে সয়াবিন।
খাতুনগঞ্জের মেসার্স আলতাফ অ্যান্ড ব্রাদার্সের মালিক মুহাম্মদ আলতাফ এ গাফফার বলেন, যে হিসাবে বাজার কমার কথা, সেভাবে কমছে না। কারণ আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বেড়ে যাওয়া এখানেও কমছে না।’
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের সবশেষ তথ্য অনুযায়ী আমদানির গ্রাফিক চিত্র।
চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন বলেন, ‘ব্যাংক টাকা দিতে পারছে না। ওরা বিভিন্ন ধরনের অজুহাত দেখাচ্ছে। ফলে গত বছরের তুলনায় আমদানি একটু কম হচ্ছে।’
ভোগ্যপণ্য আমদানির প্রতিবন্ধকতা কাটাতে ট্যারিফ কমানোসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এরপরও এলসি খোলার জটিলতায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে স্বস্তি না ফেরায় প্রভাব পড়ছে বাজারে। আর তাই বাংলাদেশ ব্যাংককে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলছে ক্যাব।
বর্তমানে পাইকারি পর্যায়ে প্রতি মেট্রিক টন সয়াবিন ৬ হাজার ৮২০ টাকা, পাম অয়েল ৬ হাজার ৪২০ টাকা এবং প্রতি কেজি চিনি ১১৮ টাকা ৫০ পয়সা ধরে বিক্রি হচ্ছে।
ক্যাব চট্টগ্রামের সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের এলসি খোলা নিয়ে যে সংকট সে বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংককে উদ্যোগী হতে হবে। আমদানিকারক ব্যবসায়ীদের জন্য বিশেষ উদ্যোগে এলসি খোলা দরকার।’