মশিউর রহমান সেলিম, লাকসাম, কুমিল্লা: স্থানীয় প্রশাসনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে গভীর রাতে কুমিল্লা দক্ষিনাঞ্চল লাকসাম পৌরএলাকা, উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে পরিবেশ ও জলাধার আইনের তোয়াক্কা না করে অবাধে মাটি- বালু দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে নদী-খাল-বিল, পুকুর-ডোবা, দিঘী-নালা, জলাশয়সহ কৃষি জমি। এতে পরিবেশ বিপর্যয়ের মারাত্মক আশংকা এবং মানুষের বাড়িঘর ভাংছে। এছাড়া এ অপকর্মের ফলে এ অঞ্চলের কয়েক হাজার একর আবাদী কৃষি জমিসহ এলাকায় ভেগু-ট্রাক্টর বানিজ্যে পরিবেশ মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়েছে। লাকসামে কৃষি জমি-জলাশয় ভরাটে দাবড়িয়ে বেড়াচ্ছে বেকু- ট্রাক্টর। এছাড়া অনেক এলাকায় মালামালজব্দ ও নিয়মিত মামলা করলেও তাদের দৌরাত্ব এখনও কমেনি। এ নিয়ে ইউপি সচিব ও ভূমি কর্মকর্তাদের পকেট ভারী হচ্ছে।
স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, এলাকার পৌরশহর এলাকা ও উপজেলা বিভিন্ন স্থানে গভীর রাতে ভেগু-ট্রাক্টর দিয়ে কৃষি জমির মাটি কেটে ভরাট করায় কমে যাচ্ছে এলাকার খাল-পুকুর,জলাশয়, দিঘি-নালা ও নিচু জমিসহ আবাদী কৃষি জমি। এছাড়া জেলার দক্ষিণাঞ্চলে ড্রেজিং মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনে এবং ভেগু-ট্রাক্টর দিয়ে কৃষি জমির মাটি কাটার সাথে জড়িত স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক পেশি শক্তির অনেকের বিরুদ্ধে নানাহ পকেট বানিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় প্রভাবশালীদের পৃষ্ঠপোষকতায় এক শ্রেনীর স্বার্থান্বেষী মহলের এহেন অপতৎপরতা প্রাকৃতিক ভারসাম্য বিনষ্ট হয়ে পরিবেশ বিপর্যয়ের আশংকা দেখা দিয়েছে। বৃহত্তর লাকসাম উপজেলা ও পৌর শহরসহ বিভিন্ন স্থানে পরিবেশ ও জলাধার আইন লংঘন করে এক শ্রেণীর দুর্নীতি পরায়ন ব্যাক্তিদের যোগসাজশে যত্রতত্র প্রকাশ্যে গভীর রাতে চলছে বালু উত্তোলন ও ভেগু-ট্রাক্টরের মাধ্যমে পুকুর-দীঘি-নালা, কৃষি জমি ভরাটের মহোৎসব। আর এ বিষয়ে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ চোখে পড়ছে না সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের ফলে এলাকার পরিবেশ ক্রমেই বিপন্নের পথে এগুচ্ছে এবং বাড়িঘর ভাংছে মানুষের।
এ ব্যাপারে জেলার দক্ষিনাঞ্চলের উপজেলা প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানান, পরিবেশ ও জলাদার আইন লঙ্ঘনকারীদের কোনো ছাড় দেয়া হচ্ছে না। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে রাজনৈতিক চাপের কথা শিকার করলেও এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেলে তাৎক্ষনিক তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এদিকে জেলা পরিবেশবাদীদের একাধিক সুত্র বলছেন, পুকুর-দীঘি,কৃষি জমি ভরাট বন্ধে স্থানীয় সরকার কাঠামো অত্যান্ত দূর্বল বিধায় এবং সংশিষ্ট কর্তৃপক্ষ থেকে যথাযথ পদক্ষেপ না নেয়ার কারণে ভুমি দস্যুরা উৎসাহিত হচ্ছে। বৃহত্তর লাকসাম উপজেলা ও ২টি পৌরশহরের যত্রতত্র পুকুর- দীঘি ও কৃষি জমি ভরাট হতে থাকলে এলাকার পরিবেশ হবে বিপন্ন। এতে অল্প বৃষ্টিতে এলাকাজুড়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হবে এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতে ভরাটকৃত পুকুর-দীঘির বিষয়ে একাধিক মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
এ ব্যাপারে ড্রেইজার, ভেগু-ট্রাক্টর ব্যবসায়ী সেন্ডিকেটের জনৈক সদস্য গণ বলেন, আমরা স্থানীয় প্রশাসনসহ এলাকার বিশেষ বিশেষ ব্যাক্তিদের ম্যানেজ করে এ ব্যবসা চালাচ্ছি। আপনারা সাংবাদিক লেখালেখি করলে আমাদের কিছুই হবে না।