ঢাকা  মঙ্গলবার, ৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ; ২০শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ          সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

spot_img
Homeসারাদেশকুমিল্লালাকসামে জীবন-জীবিকায় ঝুঁকিপূর্ণ কাজে শিশুশ্রম বাড়ছে

লাকসামে জীবন-জীবিকায় ঝুঁকিপূর্ণ কাজে শিশুশ্রম বাড়ছে

মশিউর রহমান সেলিম, লাকসাম কুমিল্লা : কুমিল্লা দক্ষিনাঞ্চলের বৃহত্তর লাকসাম উপজেলায় প্রাথমিক শিক্ষার হার দিন দিন অবনতির দিকে যাচ্ছে। বেসরকারী হিসাব মতে দক্ষিনাঞ্চলের সর্বত্র প্রায় লক্ষাধিক শিশু কিশোর প্রাথমিক শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত। উপজেলাগুলোতে বিদ্যালয়ে পড়ছে শিশু কিশোরের সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৬ লাখ। নানাহ কারণে জীবন-জীবিকার তাগিদে উপজেলার গুলোর প্রায় এলাকায় শিশু কিশোররা ঝুঁকিপূর্ন কাজে ব্যবহার হচ্ছে।

জেলা দক্ষিনাঞ্চলের বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া তথ্য মতে, উপজেলাগুলোতে শিশু কিশোর অভিভাবকের আর্থিক অস্বচ্ছলতার নানান সমস্যা সর্বাগ্রে উল্লেখযোগ্য। এই বিপুল পরিমাণ প্রাথমিক বিদ্যালয় গমনোযোগী শিশু-কিশোরদের জন্য এ অঞ্চলে রয়েছে প্রায় ৫শতাধিক সরকারী-বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় যা প্রয়োজনের তুলনায় মাত্র শতকরা ৬৫/৭০ভাগ। বিদ্যালয় গুলোতে স্থান সংকুলানের অভাব, শিক্ষক সংকট, নানাহ অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা, দূর্নীতি, শিক্ষারমান নিয়ে বির্তক, কোচিং বানিজ্য, অনৈতিক কর্মকান্ড, পরিচালনা কমিটির দায়িত্বহীনতা, আসবাবপত্র ও শিক্ষা সরঞ্জামের স্বল্পতার কারণে বিদ্যালয় গমনে শিশু কিশোরদের নিরুৎসাহিত করার অন্যতম কারণ। তবে বর্তমান সরকার শিশু শিক্ষার উন্নয়নে কোটি কোটি টাকা বরাদ্দে প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন নির্মাণ, শিক্ষা সামগ্রী প্রদান ও আধুনিক শিক্ষার উন্নয়নে কাজ করছে এবং জেলায় প্রায় সহ¯্রাধিক উপ-আনুষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রম চালু করার প্রক্রিয়া ইতিমধ্যে সর্ম্পূূন করেছে।

সূত্রগুলো আরও জানায়, শিক্ষা সরঞ্জামের ক্রমাগত মূল্য বৃদ্ধির ফলে অনেক পিতা-মাতা ইচ্ছা থাকা সত্তে¡ও সন্তানের লেখাপড়া চালাতে পারছে না। জেলা দক্ষিনাঞ্চলের প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের এক শ্রেণীর কর্মকর্তা দায়িত্বের অনিয়ম, ক্ষমতা অপব্যবহার, স্বজনপ্রীতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও বিভিন্ন দূর্নীতির কারণে ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক ও সাধারণ শিক্ষকরা দিন দিন হতাশায় ভুগছে। সরকার প্রাথমিক শিক্ষার উপর ব্যাপক কর্মসূচী হিসেবে ২০১৫ সাল নাগাদ সবার জন্য শিক্ষা চাই এবং ২০১৬ সাল থেকে প্রাথমিক শিক্ষা সবার জন্য বাধ্যতামূলক হিসাবে প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন প্রকল্পে সরাসরি নিয়ন্ত্রনে নিয়েছে। ইদানিং প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিদ্যমান। নানাহ দূর্নীতি ও অবহেলায় নানান সমস্যার শিকারে পড়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো হাবুডুবু খাচ্ছে।

জেলা দক্ষিনাঞ্চলের অভিভাবকদের একাধিক সূত্র জানায়, বর্তমানে জেলার দক্ষিনাঞ্চলের প্রত্যেকটি থানায় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি নামে শিক্ষকদের সংগঠন রয়েছে। এ সংগঠনকে পুঁজি করে কতিপয় নেতা ও স্থানীয় শিক্ষা বিভাগকে জিম্মি করে বিভিন্ন খাতে নিজেদের আখের গুঁছিয়ে নিচ্ছে। এ ব্যাপারে শিক্ষক নেতাদের কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন, সরকার প্রাথমিক শিক্ষাকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়েছেন। শিক্ষক সংগঠন শিক্ষকদের স্বার্থে কাজ করে যাচ্ছে। বিভিন্ন অভিযোগ সম্পর্কে তারা মুখ খুলতে নারাজ। তবে বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদ ও স্থানীয় লোকজন বলছেন ভিন্ন কথা। বিশেষ করে শিক্ষকদের বদলি বানিজ্য, পেনশন, নিয়োগ, ছাত্র ভর্তি, বই বিতরণসহ নানাহ খাতে অনিয়ম, দায়িত্বহীনতা ও স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থাপনা বিদ্যমান রয়েছে।

এ বিষয়ে জেলা-উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস জানায়, এ অফিসের কর্মকান্ড প্রতিনিয়ত রুটিন ওয়ার্ক। বিদ্যালয় গুলোতে নানাহ সমস্যা দীর্ঘদিনের। অভিযোগ সম্পর্কে আমাদের জানা নেই। তবে লিখিত অভিযোগ পেলে কর্তৃপক্ষের সাথে পরামর্শ ক্রমে তদন্তের মাধ্যমে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular