ঢাকা  মঙ্গলবার, ৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ; ২০শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ          সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

spot_img
Homeসারাদেশকুমিল্লালাকসামে রমজানের আগেই দাম বেড়েছে নিত্যপন্যের ভোক্তারা প্রতারিত

লাকসামে রমজানের আগেই দাম বেড়েছে নিত্যপন্যের ভোক্তারা প্রতারিত

মশিউর রহমান সেলিম, লাকসাম, কুমিল্লা : কুমিল্লার দক্ষিনাঞ্চলের বৃহত্তর লাকসাম উপজেলায় বিভিন্ন হাটে-বাজারে রমজান ও ফাল্গুন মাসকে ঘিরে নিত্য প্রয়োজনীয় পন্যের পাইকারী ও খুচরা দামে বড় তফাৎ এবং পন্যের বাজারে আগুন পরিলক্ষিত হচ্ছে এবং প্রতিনিয়ত নানাহ পন্যের বাজার অস্থির হয়ে উঠেছে। নানা অজুহাতে ওইসব অসাধূ ব্যবসায়ীরা প্রতিনিয়ত আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এতে সকল পেশার মানুষ ওইসব ব্যবসায়ীদের হাতে হচ্ছেন প্রতারিত। বার বার স্থানীয় প্রশাসনের ভ্রাম্যমান আদালত ও নোংরা রাজনীতির কারণে ওইসব ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ব কমাতে পারেনি স্থানীয় প্রশাসনের একাধিক সংস্থার লোকজন।

স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, গত বয়াবহ বন্যার তান্ডবে ক্ষতিগ্রস্থ এ অঞ্চলের মানুষ। তার উপর ৫ই আগষ্টের পর নোংরা রাজনীতির কারণে আমাদের আয় নেই বললেই চলে। ফলে এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনের দায়িত্বশীল ভূমিকা অনেকটাই প্রশ্নবিদ্ধ। হাটবাজার গুলোতে চাল. ডাল, চিনি, গরম মসল্লা, ভৌজ্যতৈলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমাতে বাজার মনিটরিং এর কোন বিকল্প নেই এবং স্থানীয় প্রশাসনের বাজার মনিটরিং ও ভ্রাম্যমান আদালত কঠোর ভাবে জোরদার করা উচিৎ ছিলো। সেটা কিন্তু হয়নি। বরং আমাদের অল্প আয়ের টাকার মধ্য থেকে বড় অংশই বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় পন্য কিনতে লুট করে নিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসনের দেওলিয়াত্মকে পূজি করে স্থানীয় মজুতদার ব্যবসায়ীরা সু-কৌশলে লাগামহীন ঘোড়ার মতো লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়াচ্ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পন্যের দাম। অথচ এ ব্যাপারে কারো কোন মাথা ব্যথা নেই। বিশেষ করে চলমান রমজান ঘিরে ছনাবুট, ডাল, ভেসন সহ রমজান পণ্যের বাজার প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে।

জেলা দক্ষিনাঞ্চলের একাধিক ভোক্তভোগী জানায়, পাইকারী আড়তে বিভিন্ন পন্যের দামের বিপরীতে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি পন্যের দাম ১৫/২০ টাকা বেশি। কোন কোন ক্ষেত্রে আরো ৫/১০ টাকা বেশী দাম দিয়ে প্রয়োজনীয় পন্য কিনতে হয় ক্রেতাদের। পাইকারী বাজারে চিনি ১২০/১৩০ টাকা খুচরা বাজারে ১৩০/১৪০টাকা পেয়াজ ৬৫/৭০ টাকার স্থলে ৭০/৭৫ টাকাসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পন্যের প্রত্যেকটির কেজি ১০/১৫ টাকা পার্থক্য রয়েছে। মৌসুমী ফল, কাঁচা সবজি, ও গরম মশল্লার বাজার অনেকটা সাধারন মানষের ক্রয় ক্ষমতার বাহিরে। নতুন নতুন সবজি ৫০/৬০ টাকার নীচে কোন তরকারী পাওয়া যায় না। অথচ দেশের বিভিন্ন জেলায় কাঁচামালে মোকাম কিংবা উৎপাদনস্থানে দাম তার অর্ধেক। শশা, সিম, টমেটো ও বেগুন সহ অন্যান্য গ্রীষ্মকালিন শবজির সংকট সৃষ্টি করে আগাম গ্রীষ্মকালীন সবজির দাম বাড়ার অশুভ প্রতিযোগিতায় নেমেছে কাঁচামাল ব্যবসায়ীরা। অপরদিকে প্রথম রমজানের আগের দিন শসা ৬০ টাকা, লেবু ৮০টাকা, বেগুন ৭০টাকা, কলার ডজন ১০০ /১২০টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।

সূত্রগুলো আরো জানায়, গতকাল রবিবার মুসুর ডালের পাইকারী বাজার ছিল ১১০/১১৫ টাকা খুচরা ১২০/১৩০ টাকা। ভোজ্য তেল বিভিন্ন ব্যান্ডের কেজিতে ৪০/৫০ টাকা বেড়েছে। লাকসাম,নাঙ্গলকোট ও বরুড়া পৌর শহরের বাহিরে বিভিন্ন পন্যের মূল্য পাইকারী দামের চাইতে খুচরা বাজারে কোন কোন পন্যে প্রতি কেজি ১৫/২০ টাকা বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। চাউল, চিনি ও ভৌজ্য তৈলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পন্যের পাইকারী ও খুচরা বাজারে প্রতি কেজিতে আগের মতই ১৫/২০ টাকা পর্যন্ত পার্থক্য রয়েছে। ক্রেতাদের কাছে এটা অস্বাভাবিক হলেও দোকানদাররা রয়েছে ফুরফুরে মেজাজে। বিভিন্ন পন্যের বাজারে প্রতি কেজি সর্বচ্চো ২/৫ টাকা পর্যন্ত কম বেশি হতে পারে।

কিন্তু হাটে-বাজারে প্রচুর মালামালের সরবরাহ থাকা স্বত্তেও পন্যের বাজারমূল্যে স্থানীয় বিভিন্ন পন্য সেন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের হাত বদল ও কমিশন বানিজ্যের কারনে ক্রেতাদের প্রতারিত করে ফায়দা লুটে নিচ্ছে ওইসব ব্যবসায়ীরা। গরম মসল্লার বাজারেও আগুন, মুদি মালামালে কোন অজুহাত ছাড়াই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মূল্য। মাছ কিছুটা নিয়ন্ত্রনে থাকলেও মুরগী, গরু, খাসির মাংস ক্রয়ে সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাহিরে। এছাড়া ভেজাল খাদ্যদ্রব্য তো আছেই।

এ ব্যাপারে জেলা দক্ষিনাঞ্চলের স্থানীয় সংশ্লিষ্ট প্রশাসন কর্মকর্তারদের একাধিক মুঠো ফোনে জানতে চাইলে তারা জনবল সংকটসহ বিভিন্ন সমস্যার কথা জানালেও পন্যের বাজার দর নিয়ন্ত্রন সম্পর্কে মুখ খূলতে নিরব দর্শক। তারপরও কিছু কিছু ক্ষেত্রে অভিযোগের আংশিক সত্যতা শিকার করলেও সন্দেহের তীরটা স্থানীয় ব্যবসায়ীদের দিকে ইংগিত করে বলছেন ভিন্ন কথা।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular