বান্দরবান প্রতিনিধি: ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের বগাইছড়ি খালে বিএনপি’র নাম ভাঙিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে গডফাদার জনৈক আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে। প্রশাসনের অভিযান সত্ত্বেও বন্ধ করা যাচ্ছে না বালু লুটপাট। এ অভিযোগের ভিত্তিতে খবর সংগ্রহ করতে গেলে সাংবাদিকদেরকে হুমকি দেয় বালু পাচার সিন্ডিকেট সদস্যরা।
চক্রের মূল হোতা বিএনপি নেতা পরিচয়ে আবুল হোসেনের নেতৃত্বে কালু সদাগর আলাউদ্দিন সহ ৩০-৪০ জনের একটি সঙ্ঘবদ্ধ চক্র বগাইছড়ির বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে ড্রেজার মেশিন ও শ্রমিক দিয়ে প্রকাশ্যে বালু উত্তোলন করে যাচ্ছে। অবস্থা দৃষ্টে মনে হয় এসব বেআইনি কাজে কারো কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। খাল ছড়া থেকে দিন-রাত ট্রাক, ট্রলি ও ডাম্পার যোগে এসব বালু পার্শ্ববর্তী চকরিয়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে নিয়ে বিক্রি করছে সিন্ডিকেট সদস্যরা।
সম্প্রতি যৌথ বাহিনীর সহযোগিতায় ফাঁসিয়াখালী ইউপির কুমারি পেতাইন্যাছড়া নামক স্থানে কয়েকটি পয়েন্টে প্রশাসনের অভিযানের পর সাময়িকভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ হয়।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে জানান, অভিযানের কিছু সময় পরেই মহল বিশেষকে ম্যানেজ করে আবারো দ্বিগুন উৎসাহে শুরু হয় পরিবেশ ধ্বংসের মহাযজ্ঞ।
ভুক্তভোগীরা বলছেন, প্রশাসনের লোক দেখানো অভিযান শেষ হলেই বালুখেকোরা একটি দলের প্রভাব দেখিয়ে ভিন্ন কৌশল বেছে নিচ্ছে। রাতের আঁধারে ড্রেজার মেশিনের মাধ্যমে এলাকার খাল ছড়া থেকে বালু উত্তলণের ফলে বগাইছড়ি খালের উপর নির্মিত ব্রিজ কালবাট রাস্তা ভেঙে গিয়ে, জনসাধারণের চলাচলে চরম ভোগান্তি হচ্ছে। ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের বগাইছড়ি, হারগাজা, কুমারি পেতাইন্যাছড়া, খালকুইল্যাছড়াসহ ১৫টির ও অধিক পয়েন্ট থেকে অবাধে বালু উত্তোলনের ফলে রাস্তা ঘাট, ফসলী জমি নষ্ট ও পরিবেশের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
স্থানীয় প্রশাসন এই অবৈধ কাজ বন্ধে চেষ্টা চালালেও তা কার্যকর প্রতিরোধে সক্ষম হচ্ছেন না। স্থানীয়রা এসব কাজে বাঁধা দিলে, সিন্ডিকেট সদস্যরা নির্যাতনের স্টিমরোলার চালায় বলে অভিযোগ উঠেছে। এসব নিয়ে স্থানীয় সংবাদ কর্মীরা নিউজ করার পর সিন্ডিকেট সদস্যরা নিউজ ডিলেট করার জন্য হুমকী দিচ্ছে।
এদিকে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে মর্মে গতকাল মঙ্গলবার উপজেলা মাসিক আইন শৃঙ্খলা সভায় প্রস্তাব আনা হয়। অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করে পরিবেশ রক্ষায় প্রশাসনের ভূমিকা আরও জোরদার করার আহ্বান জানিয়েছেন ভুক্তভোগী জনগন।
এসব বিষয়ে লামা উপজেলা বিএনপি সভাপতি আ. রব জানান, দলীয় পরিচয়ে যদি কেউ অবৈধ কোনো কাজে জড়ায় তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার জন্য হাই কমান্ডের নির্দেশ রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, কেউ মিথ্যা পরিচয় দিয়ে বেআইনি কাজ করলেও বিএনপির কোনো নেতা কর্মী এসব অনিয়মে জড়িত নয়। এ বিষয়ে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হস্তক্ষেপ কামণা করেন বিএনপির এই নেতা।