নিউজ ডেস্ক : শীর্ষ ১৮ খেলাপির কাছে প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা অগ্রণী ব্যাংকের আটকে আছে। ব্যাংকটির মোট খেলাপি ঋণ যেখানে প্রায় ২৭ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে এককভাবে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৩০০ কোটি টাকার খেলাপি জজ ভূঞা গ্রুপ। এখন ব্যাংকটি খেলাপি ঋণ কমাতে আদায় জোরদার করেছে।
গতকাল অগ্রণী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু নাসের বখতিয়ার আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, একটি সময় অগ্রণী ব্যাংক ছিল সবচেয়ে ভালো অবস্থায়। কিছু খারাপ ঋণ দেওয়ার কারণে ব্যাংকটি আজকের দুরবস্থায় পড়েছে। খেলাপি ঋণ প্রায় ৪০ শতাংশের কাছাকাছি ঠেকেছে। ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের বিপরীতে মূলধন সংরক্ষণের হার নেমেছে ৫ শতাংশের নিচে। যেখানে এটি সাড়ে ১২ শতাংশ রাখতে হয়। ব্যাংকটির পুরো চিত্র পাওয়ার জন্য আগামী বছর ফরেনসিক অডিট করানো হবে। এর পর কারা কীভাবে ঋণ নিয়েছে জানা যাবে।
অগ্রণী ব্যাংকের গত জুন পর্যন্ত মোট ঋণ ছিল ৯৬ হাজার ৯২৮ কোটি টাকা। এর বিপরীতে খেলাপি দেখানো হয় ২৬ হাজার ৮৯১ কোটি টাকা। এর বাইরেও বিগত সরকারের সময়ে নানা উপায়ে কিছু অনাদায়ী ঋণ নিয়মিত দেখানো হয়েছে।
সোমবার ব্যাংকটির কিছু কর্মকর্তা পদোন্নতির দাবিতে অগ্রণী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচারণ করেন। এ বিষয়েও কথা বলেন তিনি। নাসের বখতিয়ার বলেন, ‘সব কিছুর একটা নিয়ম আছে। হঠাৎ করে তো আর কাউকে পদোন্নতি দেওয়া যায় না। পদোন্নতির কিছু ক্রাইটেরিয়া আছে। এ বিষয়ে তাদের বোঝানোর পরও সোমবার পর্ষদ সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছে। পর্ষদ বৈঠক চলা অবস্থায় বোর্ডরুমের বাইরে মিছিল হয়েছে। তাদের বোঝানোর পরও ওই দিনই পদোন্নতি দেওয়ার দাবিতে মিছিল করেছে।’
এখন শীর্ষ খেলাপিদের মধ্যে জজ ভূঞা গ্রুপের পরে রয়েছে তানাকা গ্রুপ। অগ্রণী ব্যাংকে গ্রুপটির খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৯২৬ কোটি টাকা। এ ছাড়া খেলাপি ঋণ সাত্তার গ্রুপের ৫৫০ কোটি টাকা, মুন গ্রুপের ৫২৪ কোটি টাকা, সোনালি গ্রুপের ৫২২ কোটি টাকা, অ্যারোস্টোকেট গ্রুপের ৪৬২ কোটি টাকা, ঢাকা হাইড অ্যান্ড স্কিনের ৪৫৮ কোটি টাকা, প্যাসিফিক গ্রুপের ৪৪৪ কোটি টাকা, সাদ মুসা ফেব্রিক্সের ৪১১ কোটি টাকা। খেলাপিদের তালিকায় থাকা সাহাবা ইয়ার্নের খেলাপি ঋণ ৩৭৪ কোটি টাকা।
অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান জানান, শীর্ষ খেলাপিসহ সব পর্যায় থেকে আদায় জোরদার করা হয়েছে। কর্মকর্তাদের খেলাপি ঋণ আদায়ের একটি লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে বেশ কিছু ঋণ পুনঃতপশিল বা পুনর্গঠনের মাধ্যমে আদায় হয়েছে। আগে যাদের ঋণ ছিল, তার বাইরে আপাতত নতুন করে ঋণ দেওয়া হচ্ছে না।
অ্যাডভান্স কম্পোজিট মিলস ৩১৮ কোটি টাকা, প্রাইম কম্পোজিট মিলস ৩১২ কোটি টাকা, নাভানা ফার্নিচার ২৭২ কোটি, লিউ ফ্যাশন ২২৯ কোটি টাকা, আর্থ এগ্রো ফার্মস ২২৪ কোটি টাকা, জুলিয়া সোয়েটার কম্পোজিট ও এমআর সোয়েটার কম্পোজিট ২২০ কোটি টাকা, জয়নব ট্রেডিং ১৮৫ কোটি টাকা এবং সামিটেক্স গ্রুপ ১৭০ কোটি টাকার খেলাপি।