আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সিরিয়ার ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সমর্থকদের সঙ্গে নতুন ইসলামপন্থি শাসকদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ চলছে। গত বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) শুরু হওয়া এই সংঘর্ষে এক হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।
যুক্তরাজ্য ভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটসের বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৭৪৫ জন বেসামরিক নাগরিক, ১২৫ জন সিরিয়ার নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য এবং ১৪৮ জন বাশার আল-আসাদের অনুগত যোদ্ধা।
এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করতে পারেনি রয়টার্স।
বাশার আল-আসাদপন্থিদের সঙ্গে নিরাপত্তাবাহিনীর সংঘাতের জেরে বৃহস্পতিবার থেকে হঠাৎ উত্তপ্ত সিরিয়া। উপকূলীয় প্রদেশ লাতাকিয়ার জাবলে শহরের কাছে দুই পক্ষের সংঘর্ষে এ পর্যন্ত পুলিশ সদস্যসহ হতাহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে পাঁচশো। আসাদ সরকারের পতনের পর দেশটিতে এটিই সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘাত।
দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় শনিবার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমকে জানিয়েছে, সংঘর্ষ বন্ধ এবং শান্তি ফিরিয়ে আনতে উপকূলের দিকে যাওয়ার সব রাস্তা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। উপকূলীয় শহরগুলোর রাস্তায় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
এর আগে সিরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র কর্নেল হাসান আব্দুল গনি রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের মাধ্যমে লাতাকিয়ায় লড়াইরত আসাদের অনুগতদের প্রতি একটি সতর্কবার্তা জারি করেন।
তিনি বলেন, হাজার হাজার মানুষ তাদের অস্ত্র সমর্পণ করে তাদের পরিবারের কাছে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আবার কেউ কেউ খুনি এবং অপরাধীদের রক্ষায় পালিয়ে যাওয়ার ও মৃত্যুর জন্য জোর দিচ্ছে। পছন্দটি স্পষ্ট; আপনার অস্ত্র জমা দিন অথবা অনিবার্য পরিণতির মুখোমুখি হোন।
বিদ্রোহ দমাতে আসাদপন্থিদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। মানবাধিকার সংগঠন সিরিয়ান ওয়ার মনিটর জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার থেকে এ পর্যন্ত তিনশোর বেশি বেসামরিক নাগরিককে গুলি করে হত্যা করে নিরাপত্তা বাহিনী।
এ নিয়ে এক বিবৃতিতে প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল শারা বলেছেন, সিরীয়দের ওপর হামলা ক্ষমার অযোগ্য। আত্মসমর্পণ ও সরকারের নির্দেশ না মানলে ভোগ করতে হবে কঠিন পরিণতি।
সংঘাতপূর্ণ দেশটিতে নতুন করে হামলার ঘটনায় উদ্বেগ বেড়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। দামেস্ক ও আলেপ্পোতে সরকারের সমর্থনে শোভাযাত্রা করেন হাজারো মানুষ। পতাকা হাতে আসাদপন্থীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের আহ্বান জানান তারা।