নিজস্ব প্রতিবেদক: বহুল আলোচিত ১০ ট্রাক অস্ত্র মালায় খালাস পেয়েছেন বিএনপি সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর।
মঙ্গলবার বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরীন আক্তারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। রায়ে তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ছাড়াও বেশ কয়েকজনকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
এর আগে বহুল আলোচিত এ মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের ওপর গত ৬ নভেম্বর শুনানি শুরু হয়।
রাষ্ট্রপক্ষ প্রয়োজনীয় নথি উপস্থাপনের পর যুক্তি উপস্থাপন করেন। এরপর আসামিপক্ষ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট এ রায় প্রদান করছেন।
আসামির পক্ষের আইনজীবী শিশির মনির বলেন, এ মামলায় ১৪ জনের সাজা হয়েছিল। তাদের মধ্যে পাঁচজনকে আদালত বেকসুর খালাস দিয়েছেন। পাঁচজনের সাজা কমিয়ে দিয়েছেন। চারজনের সাজা মৃত্যুজনিত কারণে নিষ্পত্তি হয়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, যে পাঁচজন সাজা পেয়েছেন, তাদের মধ্যে পরেশ বড়ুয়ার সাজা রয়েছে ১৪ বছর। আকবর, লিয়াকত, হাফিজ এবং সাহাবুদ্দিন এ চারজনকে ১০ বছর করে সাজা দেওয়া হয়েছে।
এনিয়ে বিচারক বলেছেন, ইতোমধ্যে তারা যে সময়টুকু তারা খেটেছেন, এ সময়টি তাদের জেল খাটার পরিপূর্ণ মেয়াদ থেকে বাতিল হবে।
উল্লেখ্য, ২০০৪ সালের ১ এপ্রিল চট্টগ্রামের সিইউএফএল ঘাট থেকে জব্দ করা হয় ১০ ট্রাক অস্ত্রের চালান। এ নিয়ে বন্দরনগরীর কর্ণফুলী থানায় অস্ত্র আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে চোরাচালানের অভিযোগ এনে দুটি মামলা করা হয়।
পরে তদন্তে দেখা যায়, চীনের তৈরি এসব অস্ত্র ও গোলাবারুদ সমুদ্রপথে আনা হয় ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ‘উলফা’র জন্য। বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ওই চালান ভারতে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল।
২০১৪ সালের ৩০ জানুয়ারি চট্টগ্রামের বিশেষ ট্রাইব্যুনাল এ মামলার রায় দেয়। অস্ত্র আইনের মামলায় আসামিদের সবাইকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
আর বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় সাবেক শিল্পমন্ত্রী ও জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামী, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার সামরিক কমান্ডার পরেশ বড়ুয়া এবং দুটি গোয়েন্দা সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ ১৪ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
গত ১৮ ডিসেম্বর হাই কোর্টের রায়ে এ মামলায় বাবরসহ সাতজন খালাস পান। পরেশ বড়ুয়ার মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে দেওয়া হয় আমৃত্যু কারাদণ্ড এবং চারজনকে দেওয়া হয় ১০ বছর করে কারাদণ্ড। এছাড়া মতিউর রহমান নিজামী ও আব্দুর রহিম মারা যাওয়ায় তাদের ক্ষেত্রে মামলা অকার্যকর হয়ে যায়।