ঢাকা  মঙ্গলবার, ৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ; ২০শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ          সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

spot_img
Homeজাতীয়৪ মাসেও স্বাস্থ্য সেবায় কোন পরিবর্তনের ছোঁয়া লাগেনি

৪ মাসেও স্বাস্থ্য সেবায় কোন পরিবর্তনের ছোঁয়া লাগেনি

নিজস্ব প্রতিনিধি:   ভেঙে পড়া স্বাস্থ্য খাতকে সংস্কারের মধ্যদিয়ে সবল করতে বদ্ধপরিকর অন্তর্বর্তী সরকার। শুরু থেকেই বলে তেমনটাই বলে আসছেন দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা। বিভিন্ন সময়ে তাদের দেওয়া বক্তব্যে একটি জাতীয় আকাঙ্ক্ষাও দেশে তৈরি হয়েছে। কিন্তু এ সরকারের চার মাস কেটে গেলেও পরিবর্তনের ছোঁয়া লাগেনি এ খাতে। উল্টো স্বাস্থ্য কমিশনকে এড়িয়ে স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন পাসের উদ্যোগ নিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

শনিবার রাজধানীর মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টারে আয়োজিত স্বাস্থ্য খাত সংস্কারের পথ শীর্ষক সংলাপে অংশগ্রহণকারীরা এসব কথা বলেন। ব্র্যাক ও নাগরিক সংগঠন ইউএইচসি ফোরাম এই সংলাপের আয়োজন করে। এতে স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশনের ৩ জন সদস্য, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ২ জন সচিবসহ প্রায় ৫০ জন জনস্বাস্থ্যবিদ, গবেষক ও বিজ্ঞানী উপস্থিত ছিলেন।

আলোচনা পর্বে ১০ জনের বেশি অংশগ্রহণকারী স্বাস্থ্য খাত সংস্কারে নানা ধরনের পরামর্শ বা সুপারিশ করেন।

মুক্ত আলোচনায় জনস্বাস্থ্যবিদ আবু জামিল ফয়সাল বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের চার মাস চলে গেছে, কিন্তু স্বাস্থ্য খাতে কোনো পরিবর্তন আসেনি। বরং কিছু ক্ষেত্রে কাজ আটকে গেছে। উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, দেশের অনেক স্থানে টিকার সংকট দেখা দিয়েছে।

সরকার গঠিত স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশনের সদস্য ও আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) বিজ্ঞানী আহমেদ এহসানূর রহমান বলেন, স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইনের খসড়ায় স্বাস্থ্য বিমা, লাইসেন্সিং, চিকিৎসকদের ব্যবস্থাপত্র এ রকম নানা বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই আইন পাস করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই উদ্যোগ স্বাস্থ্য কমিশনের কাজের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশনের কাজ শেষ হওয়ার আগে বা সংস্কার কমিশনকে পাস কাটিয়ে আইন পাস করা ঠিক হবে না এমন মন্তব্য করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক সৈয়দ আবদুল হামিদ। এ আইনটি পাস করা হলে তা হবে সংস্কার কমিশনকে চপেটাঘাত করা এও বলেন তিনি।

অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে সংস্কার কমিশনের সদস্য চিকিৎসাবিজ্ঞানী অধ্যাপক লিয়াকত আলী বলেন, স্বাস্থ্য খাতে সংস্কার যা হবে তা রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে গ্রহণযোগ্য হতে হবে, যেন অন্তর্বর্তী সরকারের পরে আসা রাজনৈতিক সরকার সেই অনুযায়ী কাজ করে। আগামী নির্বাচনে রাজনৈতিক দলের ইশতেহারে স্বাস্থ্যের বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করার জন্য কমিশন চেষ্টা চালাবে।

সংশ্লিষ্ট কমিশনের সদস্য নায়লা জামান খান বলেন, রোগকেন্দ্রিক স্বাস্থ্যব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার মতো সংস্কার প্রয়োজন।স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে হতে হবে মানবিক, অন্তর্ভুক্তিমূলক।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ বলেন, জরুরি সেবার জন্য দেশের সব অ্যাম্বুলেন্সকে উবারের মতো একটি নেটওয়ার্কের আওতায় আনা সম্ভব।

ব্র্যাকের স্বাস্থ্য ও মানবিক সংকট ব্যবস্থাপনার জ্যেষ্ঠ পরিচালক মো. একরামুল ইসলাম বলেন, বেসরকারি কোনো উদ্যোগ বা কাজের কথা স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা মন দিয়ে শুনতে চান না। আইন বা বিধিবিধানের অজুহাত দেন।

নারীপক্ষের প্রতিনিধি তাসনিম আজিম বলেন, প্রজনন স্বাস্থ্য সমস্যাই নারীর একমাত্র স্বাস্থ্য সমস্যা নয়। নারীর আরও অনেক স্বাস্থ্য সমস্যাকে গুরুত্ব দিতে হবে।

অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে সঞ্চালক ইউএসসি ফোরামের আহ্বায়ক ও ব্র্যাকের চেয়ারপারসন হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, স্বাস্থ্যের অপচয় বন্ধের উদ্যোগ নিতে হবে। নির্মাণকাজে ব্যয় একধরনের আসক্তিতে পরিণত হয়েছে। প্রাথমিক স্বাস্থ্যের উন্নতিই হতে পারে স্বাস্থ্য খাত সংস্কারের মূল জায়গা।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular