• ঢাকা
  • শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ১৯ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

বালি উওোলন বন্ধে, রাষ্টপতি বরাবর আবেদন 


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: রবিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ, ০২:৩৩ পিএম
বালি উওোলন থামছে না
নদী থেকে বালি উওোলন

বিজয়কর রতন, মিঠামইন প্রতিনিধি, কিশোরগঞ্জ:  অষ্ট্রগ্রামের আবদুল্লাহ পুরের দক্ষিণে কালনী কুশিয়ারা ও মেঘনার সংযোগ স্থলে নদী থেকে বালি উওোলনে নদীর পশ্চিম তীরে ৫ শতাধিক একর ফসলী জমি নদী গর্ভে বিলীন সহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৮ কিলোমিটার ফসল রক্ষা বাঁধ হুমকির মুখে রয়েছে। 

এব্যাপারে বিগত ৪ই সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসক বরাবর নদীর তীরে ১০ টি সেচ স্কীমের ম্যানেজার বালি উওোলন বন্ধের অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগের ২ সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও প্রশাসন কোনো ব্যাবস্থা নিচ্ছে না। 

অভিযোগকারীরা প্রশাসনের এ নিরবতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন, তারা উপজেলা প্রশাসন ও বালি উত্তোলন কারীদের বিরুদ্ধে নতুন করে রাষ্ট্রপতি বরাবর গত ১৭ই সেপ্টেম্বর শনিবার অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগকারীরা হারিছ মিয়া, জিলু মিয়া, মিলন মিয়া, আল আমিন মিয়া, সুলতান মিয়া, মতিন ভুঁইয়া, আমির চান, জোলু মিয়া, ছলিম হাজী সহ এখানে বিএ,ডিসির রয়েছে ৩টি স্কীম তারা জানান,দীর্ঘ ১ বছর যাবৎ ২টি ড্রেজারে নদী থেকে বালি উওোলন করে আসছে।

বিগত বছর স্কীমের ম্যানেজার গণ অষ্ট্রগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ দায়ের করলেও প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছেন। প্রশাসনের এ নিরবতার কারণে এখন দিনে রাতে বালু উত্তোলন করে যাচ্ছে।এবছর বন্যার সময়ও বালি উওোলন থেমে থাকেনি।নদীর পশ্চিম তীরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৮ কিলোমিটার ফসল রক্ষা বাঁধের মধ্যে ২ কিলোমিটার বাঁধ ইতি মধ্যে ভেঙ্গে গেছে। বাকি বাঁধ হুমকির মুখে রয়েছে। 

পানি কমে যাওয়ার পর দেখা যায়, মিঠামইন উপজেলার অংশে নদীর পশ্চিম তীর সংলগ্ন প্রায় ৫ শতাধিক একর ফসলী জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে পড়েছে। একদিকে ফসলী জমি নদী গর্ভে বিলীন হচ্ছে আর পূর্ব দিকে নদীতে চর জেগে উঠছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে শুকনো মৌসুমের আগেই ১০টি স্কীমের আওতায় আরও ৫ হাজার একর জমি হুমকির মুখে পড়বে। এখন নদী থেকে বালি উত্তোলন করতে করতে নদীর তীরে এসে পড়েছে।

অভিযোগ কারী হারিছ আরও বলেন, প্রশাসন বালি উওোলন বন্ধে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। এখানে প্রশাসনের সাথে বালি উওোলন কারীদের কোনো যোগাযোগ রয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি আরও বলেন উত্তোলন বন্ধ না হওয়ায় অবশেষে গ্রামের কুষকদের নিয়ে বালিউত্তোলনে বাধা দিতে গেলে ড্রেজারে থাকা ম্যানাজার সোহেল মিয়া বলেন, প্রতি মাে স ১ লক্ষ টাকা প্রশাসনকে দিতে হয়। প্রশাসন আসলে আমরা ড্রেজার নিয়ে চলে যাব।

অষ্ট্রগ্রাম উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা (এস,ও) মোঃ সেলিমের সথ কথা বললে তিনি জানান, বালি উওোলনের বিষয়টি মৌখিক ভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কে অবহিত করেছেন।পরিবেশ রক্ষা ও উন্নয়ন সোসাইটির চেয়ারম্যান মোঃ হোসাইনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এব্যাপারে জাতীয় নদী রক্ষা কমিটির নিকট ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন। তিনি আরও বলেন,বালি বিক্রির সাথে যারা জড়িত তারা হল মাফিয়া।

এব্যাপারে বালি উওোলন বন্ধ সহ বালি বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে পরিবেশ রক্ষার আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। বিভিন্ন সুত্র থেকে জানা যায়, বালি উওোলনকারী ড্রেজার এম,বি সজিব রুহান ড্রেজিং প্রকল্পের নেপথ্যে রয়েছে ঠিকাদার নুরুল ইসলাম সরকার ও তার সহযোগী শামছুউদ্দিন মিয়া। তারা দুজনের বাড়ী অষ্টগ্রাম উপজেলার আব্দুল্লাহ পুর গ্রামে। ঠিকাদার নুরুল ইসলাম সরকার বর্তমানে বি-বাড়িয়ায় বসবাস করছেন। সেখান থেকে তার ভাগিনা সোহেলকে দিয়ে বালিউত্তোলনের কাজ পরিচালনা করছেন।এব্যাপারে নুরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তার মোবাইল ফোন বন্ধ রয়েছে (০১৭১০-৪০০৩৫৮)।

সোহেল নামে আব্দুল্লাহপুর গ্রামের একজন বালির ব্যাবসার ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করছেন বলে ড্রেজারে থাকা শ্রমিকরা ও জানান। সরজমিনে নদীতে ড্রেজারে থাকা লোকজনের সাথে বালি ক্রয়ের কথা বলে কৌশলে ছবি তোলা হয়। তারা ছবি তুলতে নিষেধ করেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে আব্দুল্লাহ গ্রামের কয়েকজন গ্রাম বাসী জানান, এসকল ড্রেজারে বালি উত্তোলন করার পিছনে প্রতিমাসে একলক্ষ টাকা তাদের ব্যায় করতে হয়। টাকাটা বিভিন্ন জায়গায় চলে যায়। শুধু মাত্র ইউএনও আসার খবর দেওয়ার জন্য প্রতিমাসে ১০ হাজার টাকা অষ্টগ্রাম উপজেলা সদরে দিতে হয়। ইউএনও আসার খবর পেলেই ড্রেজার নিয়ে তারা পালিয়ে যায়। তারা আরও জানান, শস্যের মধ্যে ভুত রয়েছে। প্রশাসনের একটি অংশ গোপনে তাদের সহযোগিতা করছে।

অষ্ট্রগ্রাম উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ হারুন অর রশিদের সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি জানান,  এর পূর্বে সংবাদ পেয়ে ঘটনা স্থলে যান।কিন্তু ঘটনা স্থলে তিনি কোনো ড্রেজার পাননি। বর্তমানে যদি বালি উওোলন করে থাকে তবে বিষয়টি সরজমিনে তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিযোগের পর বালি দিন রাতে উত্তোলন করা হচ্ছে বিষয়টি জিঞ্জেস করলে ফোনটি কেটে দেন।

কিশোরগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মতিউর রহমানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে, তিনি বলেন,বালি উওোলনের ফলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ফসল রক্ষা বাঁধের ক্ষতি হলে অষ্ট্রগ্রাম উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবিহত করবেন। তিনি যদি কোনো ব্যাবস্থা না নেন, তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিবেন বলে তিনি জানান। 

ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image