• ঢাকা
  • শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২০ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

মিঠামইনে ১৩০ গ্রামে পানি বন্দি দেড় লাখ মানুষ


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: সোমবার, ২০ জুন, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ, ১১:৪৪ এএম
পানি বন্দি দেড় লাখ মানুষ
পানি বন্দি মানুষ

মিঠামইন প্রতিনিধি, কিশোরগঞ্জ: গত ২৪ ঘন্টায় ধনু, ঘোড়াউত্রা, কালনী নদীর পানি বৃদ্ধির কারনে কিশোরগঞ্জের হাওরাঞ্চলের অষ্টগ্রাম, ইটনা, মিঠামইন তিন উপজেলার ১৩০ টি গ্রামের প্রায় দেড় লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। রাস্তাঘাট, বসত বাড়ি,বাজারসহ বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্টানেও পানি উঠে গেছে বলে এলাকাবাসীরা জানান, ইতিমধ্যে ইটনা ও মিঠামইন উপজেলার প্রায় সাড়ে ৭ হাজার পরিবার আশ্রয় শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে বলে জানা গেছে।

ইটনা উপজেলার নিবাহী অফিসার নাফিসা আক্তার জানান,উপজেলার ৯টি ইউনিয়নেরর ১১০ টি গ্রামে ১৬ হাজার ৬৫০টি পরিবাারের প্রায় ১ লাখ লোকজন পানি বন্দি হয়ে পড়েছিল এর মধ্যে ৬ হাজার ৮৪৬ টি পরিবার কে বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে জায়গা দেওয়া হয়েছে ইটনা উপজেলায় ৪৯টি আশ্রয় কেন্দ্র রয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। ইটনা সদর ইউনিয়নের অবস্থিত রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ সরকারি কলেজ আশ্রয় কেন্দ্রের, সদর ইউনিয়েনর মন্ডল পাড়ার শাজাহান মিয়া বলেন, তিনি দিন মুজুরির কাজ করে ২ছেলে ২ মেয়েকে নিয়ে সংসার চালাতেন কিন্তু বন্যার কারনে তার বসত ঘরে পানি উঠে যাওরার কারনে তিনি আশ্রয় নিয়েছেন এই আশ্রয় কেন্দ্রে, একই গ্রামের আদিনা বেগম নামের আরেক নারী জানান,তার স্বামীর বাজারে একটি খাবাবের হোটেল ছিল বন্যার পানিতে খাবারের হোটেলও তাদের বসতঘরটি পানিতে ডুবে যাওয়ার কারনে ৩ ছেলে ২মেয়েসহ তারা বর্তমানে এই আশ্রয কেন্দ্রে। সদর ইউনিয়নের আনন্দ পাড়ার প্রিয়নাথ বর্মন জানান, তিনি মাছের ব্যবসা করতেন বন্যার পানিতে তার বসত ঘরে কোমর পরিমান পানি উঠে যাওয়ায় তারাসহ আশেপাশের বেশ কয়েকটি পরিবার শনিবার থেকে এখানে থাকছেন। উদিয়ারপাড় গ্রামের বাসিন্দা রইছ উদ্দিন জানিয়েছেন, তাদের বাড়ির উঠানে পানি উঠে গেছে। দু’এক দিনের মধ্যে হয়ত ঘরের ভেতর পানি ঢুকে যাবে। ১৯৮৮ সালে তাদের উঠানে পানি উঠেছিল।

এরপর দীর্ঘ ৩৪ বছর আর এরকম বন্যাও হয়নি, বাড়িতেও পানি ওঠেনি। কিন্তু এবার উঠেছে। এরকম আরও বহু গ্রামে পানি উঠেছে বলে তিনি জানিয়েছেন। হাওরাঞ্চল বোরো ধানের প্রধান এলাকা। প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই প্রচুর ধান-চাল রয়েছে। ফলে এই বন্যার কারণে মানুষ এখন ধান চাল আর গবাদি পশু নিয়েও বিপাকে পড়েছেন বলে ইটনার উপজেলা একাধিক লোকজনের সাথে আলাপকালে জানাযায়। মিঠামইন উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৭ টি ইউনিযনের মধ্যে সব কয়টি পানি বৃদ্ধি পেয়ে মিঠামইন উপজেলা নিবাহী অফিসার মো: আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, এই উপজেলার ৬ থেকে৭শ পরিবারের বাড়িতে পানি উঠেছে এর মধ্যে কাটখাল ও বৈরাটি ইউনিয়নে একটু বেশি ক্ষতি হয়েছে ইতিমধ্যে ৬শ পরিবার আশ্রয় কেন্দ্রে জায়গা দেওয়া হয়েছে ।

এই উপজেলার ৭৯টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছেন বলে জানান তিনি । অষ্টগ্রামের পূব অষ্টগ্রাম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো: কাছেদ মিয়া বলেন, পুব অষ্টগ্রাম ইউনিয়নের প্রায ১০ থেকে ১৫টি পুকুর ডুবে গেছে এবং রা পাশ্ববতী বাড়ি গুলোতেও পানি উঠে গেছে । অষ্টগ্রাম উপজেলা নিবাহী অফিসার মো: হারুন-অর-রশিদ জানান, অষ্টগ্রাম উপজেলা অনন্যা উপজেলা চেয়ে এখন পর্যন্ত ভালো আছে তবে কলমা,বাঙ্গালপাড়া,সদর ইউনিয়ন,কাস্তুল ইউয়িনের প্রায় শতাধিক পরিবারের বাড়িঘরের পানি উঠে গেছে।

অষ্টগ্রামে ৩১টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম শনিবার (১৮ জুন) ইটনা, মিঠামইন, অষ্টগ্রাম ও করিমগঞ্জের বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। এসময় তিনি বন্যা কবলিত মানুষের মাঝে শুকনো খাবার বিতরণ করেন। স্থানীয় প্রশাসনকে বন্যা কবলিত মানুষদের বন্যা আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে স্থানান্তরের উদ্যোগ গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।

তিনি সরকারীভাবে বন্যা কবলিত এলাকার জন্য আপাতত ১৪০ মেট্রিকটন চাল এবং আড়াই লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন। এসময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মতিউর রহমান, বিভিন্ন উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মতিউর রহমান সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, হাওরের অলওয়েদার রোড ইটনার দিকে কিছুটা নীচু। ফলে আর আড়াই ফুট বা তিনফুট পানি হলেই রাস্তাটি ডুবে যাবে। সিলেট অঞ্চলে যেভাবে পানি বাড়ছে, এই পানি কিশোরগঞ্জের হাওরেও ঢুকবে। ফলে সামনের দিনগুলোতে পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে বলে তিনি ধারণা করছেন।

ঢাকানিউজ২৪.কম / বিজয়কর রতন/কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image