• ঢাকা
  • শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ১৯ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

শুভ জন্মদিন, মোনায়েম ভাই


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: বুধবার, ২৯ মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১১:৫১ পিএম
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হিসেবে ছাত্র ইউনিয়ন
মোনায়েম সরকার

বিভুরঞ্জন সরকার

বাংলাদেশের রাজনীতি ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের একজন নেপথ্য নায়ক মোনায়েম সরকার। ৩০ মার্চ তার জন্মদিন। ১৯৪৫ সালে জন্ম। তাই এবছর ৭৮তম জন্মদিন মোনায়েম ভাইয়ের।

প্রায় চার দশক ধরে তার সঙ্গে আমার পরিচয়। তিনি রাজনীতিতে জড়িয়েছেন গত শতকের ষাটের দশকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হিসেবে ছাত্র ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ছাত্র জীবন শেষে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি। সে সময় গোপন কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গেও সম্পর্ক ছিল। ১৯৭৯ সালে তিনি আওয়ামী লীগে যোগদেন।  একসময় দলটির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বেও ছিলেন। তবে কমিটিতে থাকা তার খুব আগ্রহের বিষয় নয়। তিনি কাজ করতে ভালোবাসেন, পদ-পদবি তার কাছে কখনো বড় বিষয় ছিল না।  

আইয়ুববিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে, মুক্তিযুদ্ধ এবং তারপর স্বাধীন বাংলাদেশের রাজনীতির নানা উত্থান-পতনের ছোটবড় অনেক ঘটনার সঙ্গে তিনি নিবিড়ভাবে জড়িয়ে ছিলেন।

আমাদের দেশের রাজনীতিতে সবাই শুধু সামনে থাকতে চায়, বড় পদ পেতে চায়। মোনায়েম ভাই এ ক্ষেত্রে এক উজ্জ্বল ব্যতিক্রম। তিনি সব সময় নিজে পেছনে থাকেন, অন্যকে এগিয়ে দিতে যতভাবে সম্ভব সহায়তা করেন।

আওয়ামী লীগের এখন সুসময়। অনেক বন্ধু-সুহৃদ। কিন্তু বঙ্গবন্ধু হত্যার পর যখন কঠিন সময় এসেছিল, তখন মোনায়েম ভাই খুববেশি সঙ্গীসাথী না পেলেও নিজে নির্ভয়ে এগিয়ে গেছেন। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার দাবিতে প্রথম লিফলেট প্রচার করেছেন তিনি। শুধু দেশের ভেতরে নয়, দেশের বাইরে খুনিদের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলার জন্য কত উপায়ে না চেষ্টা করেছেন। চার বছর ভারতে স্বেচ্ছানির্বাসনে কাটিয়েছেন। ভারতের তখনকার প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গেও তিনি একাধিকবার দেখা করেছেন। ভারতের আরও অনেক খ্যাতনামা ব্যক্তিদের সঙ্গে তার পরিচয় ও যোগাযোগ ছিল।

মোনায়েম সরকার অনেক সংগঠন গড়ার পেছনে সক্রিয়ভাবে উদ্যোগ নিয়ে তিনি হয়তো কোনো কমিটিতে সদস্য হিসেবেও থাকেননি। উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী, বঙ্গবন্ধু পরিষদ গঠনের পেছনে তিনি ছিলেন অন্যতম ব্যক্তি। বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন ফর ডেভেলপমেন্ট রিসার্চ নামের একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের তিনি মহাপরিচালক।

তিনি কখনো নির্বাচনে প্রার্থী হতে চাননি। চাননি মন্ত্রী হতে। কিন্তু কারো কারো মন্ত্রী হওয়ার ক্ষেত্র তিনি তৈরি করে দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের শোষণ-বৈষম্য মুক্ত, অসাম্প্রদায়িক-গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তোলাই তার সারাক্ষণের ধ্যানজ্ঞান।

রাজনীতির পাশাপাশি লেখালেখিতেও যথেষ্ট সক্রিয়। তার লেখা ও সম্পাদিত শতাধিক বই আছে। তবে বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত বঙ্গবন্ধুর জীবনী গ্রন্থ তার সেরা কাজ।

এখন তিনি দলীয় রাজনীতিতে সক্রিয় না থাকলেও আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তিনি একজন অকৃত্রিম সুহৃদ।
এটা অত্যন্ত দুঃখের বিষয় যে মোনায়েম ভাই কোনো রাষ্ট্রীয় সম্মাননা পাননি। এত মানুষকে প্রতি বছর পদক-পুরস্কারে ভূষিত করা হয় অথচ মোনায়েম সরকার এখনো উপেক্ষিত।

জীবনে বহু মানুষের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়েছে। কিন্তু মোনায়েম ভাইয়ের মতো এমন উদ্যোগী, হৃদয়বান, বন্ধুবৎসল ও সজ্জন মানুষ কমই দেখেছি।

জন্মদিনে তার প্রতি জানাই শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।

ঢাকানিউজ২৪.কম /

আরো পড়ুন

banner image
banner image