বিজয় কর রতন, মিঠামইন (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি: মিঠামইন উপজেলার কেওয়ারজোড় ইউনিয়নের কান্দি পাড়া গ্রামের মোবারকের পুএ আলআমিন (৩৩) এর সাথে প্রেম করে ২০১৮ সনে বিয়ে করে নেএকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলা শ্যামৈ গ্রামের শরীফা আক্তার (২৬)।তাদের ঘরে তামিন (১৩) নামে একটি ছেলেও এশামনী (৬) নামে একটা মেয়ে রয়েছে। প্রথম স্ত্রী শরীফাকে রেখে তার স্বামী আল আমিন ২য় বিয়ে করে বরিশালের গলা চিপায় বিবাহিত মেয়ে বিথি আক্তারকেখ। বিথির পূর্বের একটি সন্তান রয়েছে।
বিথিকে বিয়ের পর থেকেই শরীফার অভিযোগ, তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন নানান ভাবে তাকে নির্যাতন শুরু করে।তারা তার স্বামী আল আমিন কে বিদেশে পাঠিয়ে দেন।
স্বামীর বাড়ির নির্যাতন সইতে না পেরে ১৫ই মে (সোমবার) সকালে উপজেলার ঘাগড়া বাজারের মাছ মহলে চৌরাস্তায় স্বামীর অধিকার ও ভরণপোষণের দাবিতে সন্তান কে নিয়ে অনশনে বসে।
অনশনরত শরীফার সাথে কথা হয় ঘাগড়া বাজারে মাছ মহালের পাশের রাস্তায়। শরীফা কান্না জর্জরিত কন্ঠে চিৎকার করে বলেন, ৫ বছর যাবৎ তার শ্বশুর শ্বাশুড়ি ও স্বামী তাকে ফেলে রেখে কোনো খোঁজ খবর নেয় না।শ্বশুর বাড়িতে আসলে তাকে নির্যাতন করা হয়।এব্যাপারে শ্বশুর বাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে একটি যৌতুকের মামলা ও দায়ের করেছেন।
শরীফা জানায় ২০০৮ সনে মিরপুর শেওড়াপাড়ার একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরীতে শরীফা ও আল আমিন চাকরি করত। সে সময় তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। পরে তারা বিয়ে করে নেয়।তখন তার শ্বাশুড়ি তরুণা আক্তার ও একই বাসায় ছিল।বিয়ের পর তারা খুব সুখেই ছিল।তাদের দুটি সন্তান ও রয়েছে।
তামিনও এহসান নামে দুটি সন্তান রয়েছে। তামিম বর্তমানে ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ছে ও এহসান ১ম শ্রেণীতে পড়ছে। তার শ্বাশুড়ি বিগত কয়েক মাস পূর্বে তার স্বামী আল আমিনকে গোপনে বরিশালের গলা চিপার এক বিবাহিত মেয়ে বিথিকে বিয়ে করায়। বিথির ও পূর্বে একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। পরবর্তীতে বিথিকেও তাড়িয়ে দেয়। শরীফা আরও জানায়, তার স্বামীকে ভরণপোষণের জন্য চাপ দিলে তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন তাকে কৌশলে বিদেশে পাঠিয়ে দেয়। এর পূর্বে ২০১৮ সনে ২ লক্ষ টাকা দিয়ে শরীফা তার স্বামীকে ওমান পাঠিয়ে ছিলেন। কিন্তু বিদেশ থেকে ঐ সময়ও তাকে কোনো টাকা পয়সা দিতো না। টাকা পয়সা শ্বশুর বাড়ির লোকজনের নামে পাঠাতো।ইদানীং অসহায় অবস্থায় ছেলে মেয়েকে নিয়ে শ্বশুর বাড়ি তেলিখাই কান্দি পাড়ায় চলে আসি। আমি আমার ভরণপোষণের বিষয়ে শ্বশুর বাড়ির লোকজনকে বললে তারা আমার সন্তান সহ আমাকে নির্যাতন করে বাড়ি থেকে বাহির করে দেয়। এর পূর্বেও শারীরিক নির্যাতন করার পর গত ৪ই এপ্রিল মিঠামইন থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করি। শরীফা জানান, তিনি তার স্বামী ও সন্তানদের ফিরে পাওয়াসহ ভরণপোষণের দাবিতে রাস্তায় অনশনে বসেন। বিষয়টি কেওয়ারজোড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যানকে অবগত করেছেন বলেও জানান।
শ্বশুর বাড়ির লোকজন যদি তার স্বামীকে ফিরে না দেয়, তবে সে সন্তানদের নিয়ে আত্মহত্যার হুমকি দেয়।বর্তমানে সে বাজারের চৌরাস্তায় অনশনরত অবস্থায় রয়েছে। শরীফার মামা শ্বশুর মস্তুু মিয়াকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে সে জানায়, আমরা কিছু বলতে পারবো না। আমার আত্নীয় হলেও এ বিষয়টা তাদের পারিবারিক বিষয়। কেওয়ারজোড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এই বিষয়ে কেহ তাকে কোনো জানাইনি বা অভিযোগ ও করেনি।বিষয়টি জানলে দেখবো বলে তিনি জানান।
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: