
ডেস্ক রিপোর্টার : সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় পুড়ছে রাজশাহী। ৯ বছরের মধ্যে রেকর্ড রোদে ধানক্ষেতসহ জ্বলেপুড়ে যাচ্ছে সবই। নেই বৃষ্টির দেখা। ফলে পানির স্তর নেমে যাওয়ায় সংকট আরও চরমে পৌঁছেছে।
গত ১০ দিন ধরে চেষ্টা করেও বোরো ধানে সেচের পানি দিতে পারেননি রাজশাহীর পবার মদনহাটি গ্রামের সাদিকুল ইসলাম। ফলে তার ফসলি জমি ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। কেবল সাদিকুল ইসলামই নয়, জমি ফেটে চৌচির হয়েছে এ অঞ্চলের হাজারও কৃষকের। অন্যদিকে দ্বিগুণ সেচ দেয়ায় বাড়ছে খরচ। ফলন ও বাড়তি ব্যয় নিয়ে শঙ্কিত তারা।
সোমবার (১৭ এপ্রিল) ও মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) ৯ বছর পর জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি অতিক্রম করে।
আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামাল উদ্দিন জানান, আরও দুই থেকে তিন দিন এই অঞ্চলের ওপর দিয়ে এই তাপপ্রবাহ বয়ে যাবে। চলতি মাসের ২২ তারিখের আগে বৃষ্টির কোনো সম্ভাবনা নেই।
গেল ১৫ দিনের প্রচণ্ড তাপদাহে চরম বিপদে পড়েছেন বরেন্দ্র অঞ্চলের কৃষকেরা। তাপদাহ ও বৃষ্টিপাত না হওয়ায় ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে গেছে। ফলে জমিতে সেচ দিতে পারছেন না তারা। এতে বিঘার পর বিঘা ধান গাছ নষ্টের শঙ্কায় মাথায় হাত চাষিদের। তাপমাত্রার হঠাৎ ওঠানামায় নানা রোগ বালাইয়ের সংক্রমণের আশঙ্কা ছড়িয়েছে তাদের মনে।
কৃষকরা বলছেন, এখন স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় দেড় থেকে দুইগুণ পর্যন্ত বেশি সেচ প্রয়োজন। কিন্তু বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের গভীর নলকূপ দিনের বেলায় থাকছে বন্ধ। কারণ পানির স্তর নেমে যাওয়ায় পর্যাপ্ত পানি উত্তোলন সম্ভব হচ্ছে না। আবার রাতে দিনে ৬ ঘণ্টার লোডশেডিংও সেচে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে।
বেশি খরচে যারা বাড়তি সেচ দিচ্ছেন সেসব কৃষকরা বলছেন, বোরোর উৎপাদন খরচ বাড়লেও ফলন হবে না আশানুরূপ।
টানা তাপপ্রবাহের কারণে উৎপাদনে সামান্য প্রভাব পড়লেও সার্বিকভাবে ঘাটতির শঙ্কা নেই বলে দাবি করেছেন রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত পরিচালক আব্দুল লতিফ।
তিনি বলেন, আমরা শক্তভাবে মনিটরিং করছি। আমরা সবাই মাঠে আছি। কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি। যাতে এই সময় ধানের গোড়ায় দুই ইঞ্চি পানি ধরে রাখতে পারে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের হিসাবে, এ বছর জেলার চাষিরা ৬৮ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করেছেন।
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: