• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ; ১০ জুন, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

কুমিল্লার অলি-গলিতে পাচ্ছেন শীতের পিঠা


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: শনিবার, ২২ জানুয়ারী, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ, ১২:৩০ পিএম
অলি-গলিতে পাচ্ছেন শীতের পিঠা
শীতের পিঠা

কুমিল্লা প্রতিনিধি: কুমিল্লার দক্ষিনাঞ্চলের সবকটি উপজেলাসহ লাকসাম পৌরশহরের অলিগলিতে শীতের পিঠা বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছেন সড়কের পাশে অবস্থানরত বেশকটি শীতের পিঠা বিক্রেতা। ইচ্ছে থাকলে উপায় হয়, আর অল্প পূঁজিতেও যে সংসার চালানো যায় তার দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন দেশের উত্তরাঞ্চল থেকে আসা বহিরাগত একাধিক পিঠা বিক্রেতা। চলমান মহামারী করোনার ৩য় ঢেউয়ের আঘাত এবং শীতের তীব্রতা কম হওয়ায় শীতের পিঠার বাজার কিছুটা মন্দাভাব যাচ্ছে।

স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, মাঘ মাসে শুরুতে কী বিচিত্র শীতের পিঠা বিক্রেতাদের বিচিত্র জীবন। তারা যেন অল্প আয়েই সন্তুষ্ট। তবুও ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ আর ভরন-পোষণ চালাতে হিমশিম খেতে হয় তাদের। সংসার চালানের জন্য শীতের পিঠা বিক্রি করে কোন রকমে জীবন-জীবিকা চালাচ্ছেন তারা। শীত একেবারই পড়েনি এমনটা কিন্তু বলা যাবে না। তবে যতটা পড়ার কথা ততটা পড়েনি। পৌষ মাসের শেষ দিকে পর পর ২টি শৈত্য প্রবাহ ধাক্কা মেরেছে এ অঞ্চলে। শীতের তীব্রতাও বাড়তে শুরু করেছে। অতীত বছরগুলোতে চলতি মাসে যে ভাবে শীত জাঁকিয়ে বসেছিল এবার কিন্তু তেমন ভাবে দেখা না দেয়ায় শীতের পিঠা ব্যবসায়ীরা অনেকটা হতাশ। এলাকার সর্বত্র এখন শীতের পিঠা উৎসব চলছে।

আমন ধানের নতুন চাউলে নানা স্বাদের শীতের পিঠা তৈরীতে প্রত্যেক ঘরেই চলছে উৎসব মুখোর আমেজ। দিন শেষে সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসলে একে বারে জাঁকানো শীত আর ঘন কুয়াশার চাঁদর দিয়ে আবৃত করে রাখছে সারারাত। হঠাৎ করে প্রকৃতির গায়ে যেন এখন শীতের সাজ। তবে কবির ভাষায় ‘‘পান-পানি-পিঠা, শীতে লাগে মিঠা’’। কিন্তু সে মিঠার স্বাদ পেতে ওইসব খাবার ব্যবসায়ীরা তাকিয়ে আছে প্রকৃতির দিকে। তবুও কুমিল্লার সবকটি উপজেলার হাটবাজার গুলোর অলি-গলিতে হাত বাড়ালে পাচ্ছেন শীতের পিঠা।

সূত্রটি আরও জানায়, জেলা দক্ষিনাঞ্চলের সবকটি উপজেলার শহরে কিংবা উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজারের অলিগলি এবং প্রধান প্রধান সড়কের পাশে শীতের ভাপা পিঠাসহ হরেক রকমের সুস্বাদু দেশীয় খাবার বিক্রি করছেন তারা। একাধিক শীতের পিঠা বিক্রেতা জানায়, এ শীতের পিঠা ও নানা রকম শীতকালীন খাবার বিক্রি করে ছেলে-মেয়েদেরকে লেখাপড়াসহ ভরন পোষন করে আসছেন। এ কাজে কারীগরদের রোজ ১৫০/২০০ টাকা মুজুরিতে ওইসব স্থানে তাদের সহায়তা দিয়ে আসছেন তারা। শীতের পিঠা বিক্রেতাদের বাড়ী দেশের উত্তরাঞ্চলের মঙ্গাএলাকাসহ সীমান্ত অঞ্চলে এবং জেলা দক্ষিনাঞ্চলের নাঙ্গলকোট, বরুড়া ও লাকসাম পৌর এলাকা ছাড়াও এ অঞ্চলের বাসিন্দারাই বেশি।

সূত্রটি আরও জানায়, জেলা দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান বানিজ্যিক কেন্দ্র লাকসাম উপজেলা সদরের বিভিন্ন স্থানে চলছে একাধিক শীতের পিঠা বিক্রির হিড়িক। নারী-পুরুষসহ সকল বয়সের লোকজন ওইসব ভ্রাম্যমান দোকানে তৈরী  শীতের পিঠা খাওয়ার জন্য ভীড় জমায়। এছাড়া স্বজনদের হাতে তৈরী বানানো চিতই, দুধ চিতই, ভাপাপুলি, চাঁদপুলি,পাটিসাপটা, পাক্কন তেলেভাজা পুরি, নারিকেল, গুড় কিংবা খেজুর রসের কত না বাহারী স্বাদের পিঠাসহ এ অঞ্চলের সবচেয়ে ঐতিহ্য ভাপা পিঠা তৈরীতে নারকেল, চালের গুড়ো, কলা, পাটালি গুড় দিয়ে বিশেষ কায়দায় তৈরি হচ্ছে এ পিঠা।

ওইসব পিঠার সাথে মিলছে নানা ধরনের সু-স্বাদু ভর্ত্তাও। কি নেই ভর্ত্তার তালিকায়- শুটকীর ভর্ত্তা, শুকনো মরিচ কিংবা কাঁচা মরিচ ভর্ত্তা, টাকী মাছের ভর্ত্তা, সরষে বাটা, ধনেপাতা মিশ্রিত সালাদ ও কালো জিরাসহ নানাহ গরম মসল­ার ভর্ত্তা একটুখানি ফ্রি পাচ্ছে ক্রেতারা।  পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন ও প্রতি পিচ ১০/২০ টাকা দামে বিক্রি হওয়ায় অনেক শিক্ষিত লোকও এ সু-স্বাদু ভাপা পিঠা খেতে এখানে আসছেন। এছাড়া আশে-পাশের ছোট-বড় ব্যবসায়ীরা ও বহিরাগত লোকজন প্যাকেটে ভরে স্ত্রী-সন্তান, আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে নিয়ে যায় এ পিঠা।

স্থানীয় পিঠা তৈরীর একাধিক কারিগর জানায়, দীর্ঘদিন ধরে এ এলাকায় শীত মৌসুমে তারা শীতের পিঠা বিক্রি করে আসছেন। তবে অন্যান্য সময়ের চেয়ে শীতকালে পিঠা বিক্রি হয় সবচেয়ে বেশি। এক জায়গায় বসে বিক্রি করতে পারায় অনেক স্থায়ী কাস্টমার রয়েছে তাদের। চলমান মহামারী করোনার ৩য় ঢেউ শুরু হওয়ায় হাটবাজারগুলোতে মানুষের আনাগনা কম বিধায় আমাদের বেচাবিক্রিও কম।

ওইসড়ক ছাড়াও বিভিন্নস্থানে দেখা মিলে বেশ কয়েকজন পিঠা বিক্রেতার। তাদের বাড়ি পৌরশহরসহ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে। তারা রিক্সা ভ্যানে করে লোক সমাগমস্থলে গিয়ে সদ্য তৈরিকৃত শীতের পিঠা বিক্রি করে সংসার চালান। তারা জানান, পিঠা বিক্রি করে সংসার ভালোই চলে। তবে বছরের কোন কোন সময় রোদ-বৃষ্টি আর ঝড়ে অনেক কষ্ট হয়। ওই সময় পিঠা বিক্রিও কমে যায়।

 

ঢাকানিউজ২৪.কম / মশিউর রহমান সেলিম/কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image