
নিউজ ডেস্ক: যুক্তরাজ্যের রাজা হিসেবে তৃতীয় চার্লসের অভিষেক হতে চলেছে লন্ডনে ৬ মে। এর মধ্য দিয়ে মা দ্বিতীয় এলিজাবেথের উত্তরসূরি হিসেবে ব্রিটিশ সিংহাসনে বসছেন । শুধু যুক্তরাজ্য নয়, সাবেক ব্রিটিশ উপনিবেশ বা কমনওয়েলথভুক্ত আরও ১৪টি দেশের রাজা হচ্ছেন চার্লস। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, কত দিন চার্লস এসব দেশের রাজা বা রাষ্ট্রপ্রধান থাকতে পারবেন?
দেশগুলো হলো- অ্যান্টিগুয়া অ্যান্ড বারবুডা, অস্ট্রেলিয়া, ব্রাহামাস, বেলিজ, কানাডা, গ্রেনাডা, জ্যামাইকা, নিউজিল্যান্ড, পাপুয়া নিউগিনি, সলোমন দ্বীপপুঞ্জ, সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিস, সেন্ট লুসিয়া, সেন্ট ভিনসেন্ট অ্যান্ড গ্রেনাদাইনস, ট্যুভালু। খবর বিবিসির
চার্লস এখনও যেসব দেশের রাষ্ট্রপ্রধান, সেগুলোর কিছু দেশের আবহ বর্ণনা করে সেসব দেশে যে কোনও সময় রাজতন্ত্রকে বদলে দেওয়ার সম্ভাবনা খতিয়ে দেখেছে বিবিসি।
আটলান্টিক মহাসাগর ও ক্যারিবীয় সাগরের মাঝের দ্বীপরাষ্ট্র সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিস। এই ক্যারিবীয় অঞ্চলেই প্রথম ব্রিটিশ উপনিবেশের গোড়া পত্তন হয়েছিল। কিন্তু স্বাধীনতার প্রায় ৪০ বছর পরও বিতর্ক রয়ে গেছে, দেশটি রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে ব্রিটিশ রাজার অধীনতা থেকে বেরিয়ে প্রজাতন্ত্রের পথে হাঁটবে কিনা।
দেশটিতে বেশিরভাগ মানুষই তাদের অভিমত প্রকাশ করতে ইচ্ছুক নয়। তবে যারা মত প্রকাশ করে তারাও দ্বিধান্বিত।
শার্লিন মার্টিন নামের এক অধিবাসী বলেন, তিনি আরও তথ্য জানতে চান। তবে রাজা তৃতীয় চার্লসের এই দেশের রাষ্ট্রপ্রধান থাকার সুবিধাটা কি সেটি তার প্রশ্ন। এই নারীর কথায়, 'ইংল্যান্ডের চেয়ে চীনা এবং তাওয়ানিরা আমাদেরকে বেশি দেখাশুনা করে। কাজেই রাজা থাকার দরকার কি আমি জানি না।'
বারবাডোসকে একসময় বলা হত ‘লিটল ইংল্যান্ড’। কিন্তু বারবাডোস ব্রিটিশ উপনিবেশ থেকে সম্পূর্ণ বেরিয়ে গিয়ে প্রজাতন্ত্র হয়ে যায় ২০২১ সালে। তৎকালীন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথকে আনুষ্ঠানিক সরকার প্রধানের পদ থেকে সরিয়ে প্রজাতন্ত্রের ঘোষণা দিয়েছিল দেশটি।
এরপর থেকে অন্য দেশগুলোও বিষয়টি নিয়ে ভেবে দেখতে শুরু করে। তবে রাষ্ট্রপ্রধানের পদ থেকে ব্রিটিশ রাজাকে সরাতে হলে দ্বীপদেশ কিটস অ্যান্ড নেভিসসহ সব ক্যারিবীয় দেশেই গণভোট আয়োজন করতে হবে।
অস্ট্রেলিয়ার সিডনির সড়কে হাঁটলে সেখানে চার্লসের রাজ্যাভিষেকের কোনও আমেজ চোখে পড়বে না। অনেকে আবার জানেই না রাজ্যাভিষেকটা কী। চার্লসের অভিষেক নিয়ে ৭৩ বছর বয়সী গ্রাহাম বলেন, 'আমি এ নিয়ে চিন্তাও করি না, এটি অপ্রাসঙ্গিক।'
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ আগেই বলেছিলেন, রাজতন্ত্র থেকে একদিন বেরিয়ে আসবে অস্ট্রেলিয়া। এটি অনিবার্যভাবেই হবে।
নিউজিলান্ডেও চিত্রটি একইরকম। নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ক্রিস হিপকিনস মনে করেন, একদিন তার দেশও রাজতন্ত্র থেকে বেরিয়ে আসবে।
কানাডাতেও রাজা চার্লস তার মা প্রয়াত রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মতো অতটা জনপ্রিয় নন। বিভিন্ন জনমত জরিপেও দেখা গেছে দেশটিতে রাজতন্ত্র থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার জন্য মানুষের আগ্রহ দিন দিনই বাড়ছে।
এপ্রিলে অ্যাঙ্গুস রেইড এর সর্বসাম্প্রতিক একটি জরিপের প্রকাশিত ফলে দেখা গেছে, বেশির ভাগ কানাডীয়- অর্ধেকের কিছু বেশি- চায় না অস্ট্রেলিয়া প্রজন্মর পর প্রজন্ম ধরে সাংবিধানিক রাজতন্ত্র চালু রাখুক।
ঢাকানিউজ২৪.কম /
আপনার মতামত লিখুন: