নিউজ ডেস্ক : রাজধানীর হাসপাতালগুলোতে বহু পরিবার এখনও স্বজনদের খুঁজছে। কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশ নিতে বাড়ি থেকে বিদায় নিয়ে ফেরেননি অনেকেই। নাম উঠেছে নিখোঁজের তালিকায়। বেঁচে আছেন কি না- জানা নেই কারও। ঢাকা মেডিকেলের মর্গে এখনও বেওয়ারিশ পড়ে আছে ৬টি মরদেহ। হতভাগ্যদের কারো কারো চেহারা এতোটাই বিকৃত যে মুখ দেখে শনাক্তের উপায়ও নেই।
কত মানুষ এই আন্দোলনে মারা গেছেন তার সঠিক সংখ্যা এখনও জানা যায়নি। বাংলাদেশের ইতিহাসে কোনো আন্দোলনে এত মৃত্যুর ঘটনা নজিরবিহীন। এখনও নিখোঁজ আছেন বহু মানুষ। পরিবার জানে না, কি ঘটেছে স্বজনের ভাগ্যে।
স্বজনরা জানান, মর্গে থাকা লাশগুলোর চেহারা বিকৃত হয়ে গেছে। শরীর ফুলে উঠেছে। চেনা যাচ্ছে না। তবুও পরনের পোশাক বা শরীরের অন্য কোনো চিহ্ন দেখে চেষ্টা করছেন খুঁজে পেতে।
হবিগঞ্জের এই পরিবারটি ঢাকা মেডিকেলের মর্গে এসেছেন রাব্বীর খোঁজে। ১৯ বছর বয়সি রাব্বী রাজমিস্ত্রীর কাজ করতেন মিরপুরে। দুই সহকর্মীর সঙ্গে ৫ জুলাই মিরপুর-১০ এ গিয়েছিলেন একদফা কর্মসূচিতে। সেদিন সহকর্মীরা বাসায় ফিরলেও সেই থেকে সন্ধান নেই রাব্বীর। রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতাল ঘুরে ঢাকা মেডিকেলের মর্গে পড়ে থাকা ৮টি লাশেও মেলেনি রাব্বীর মুখ।
এরকম শঙ্কা নিয়ে নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকা মেডিকেলে আসে আল মামুন আমানতের পরিবার। বেওয়ারিশ ৮টি লাশ দেখে ১০ দিন নিখোঁজ থাকা আমানতকে শনাক্ত করতে পারেন স্বজনরা। বাইং হাউসের এই কর্মকর্তাকে শুধু হত্যাই করা হয়নি, আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হয় গোটা শরীর।
কোটা আন্দোলন ঘিরে শুধু ঢাকা মেডিকেলের মর্গেই এখন পর্যন্ত ময়নাতদন্ত হয়েছে ১০৮টি মরদেহের। আর ১৫ আগস্ট পর্যন্ত মরদেহগুলোর কোনো ওয়ারিশ পাওয়া যায়নি। সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালেও পড়ে আছে একটি বেওয়ারিশ লাশ।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, আরও কয়েকদিন অপেক্ষার পর কেউ মরদেহ নিতে না এলে ৭টি লাশই বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করবেন তারা।
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: