• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২৩ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

খাগড়াছড়ির গাছে গাছে আমের মুকুল, চারদিকে মৌ-মৌ গন্ধ 


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ০৭ ফেরুয়ারী, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ০২:৪৫ পিএম
খাগড়াছড়ির গাছে গাছে
আমের মুকুল চারদিকে মৌ মৌ গন্ধ 

রিপন সরকার, খাগড়াছড়ি: শেষ হয়নি শীত, এখনো লাগেনি  ফাল্গুনের ছোয়া কিন্তু এরই মধ্যে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার সর্বত্র সৃজিত আম বাগানগুলোতে গাছে গাছে ফুটেছে মুকুল। চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে এই মুকুলের ঘ্রাণ। বাতাসে চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে  মৌ মৌ গন্ধ। আর এই মিষ্টি গন্ধ মানুষের মনকে বিমোহিত করে তুলেছে। সেই সাথে এইসব বাগানগুলোতে পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন মালিকরা। দেখছে আমের বাম্পার ফলনের স্বপ্ন।

এই অঞ্চলের প্রকৃতিতে এবছর শীতের প্রকোপ কিছুটা কম থাকায় বেশ আগেভাগেই মুকুলে মুকুলে ছেয়ে গেছে খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি, পানছড়ি, মহালছড়ি, মাটিরাংগা সহ বিভিন্ন  উপজেলার পারিবারিক, ব্যক্তি ও বানিজ্যিক ভাবে সৃজন করা ছোট-বড় আম বাগানগুলো। থোকা থোকা মুকুলের ভারে ঝুলে পড়েছে আম গাছের ডালপালা। আবহাওয়া অনুকূল থাকলে গেলো বছরের চেয়ে চলতি বছরে বেশি ফলন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এ জেলায়।

সরেজমিনে জেলা সদরের গোলাবাড়ি, পানছড়ির উল্টাছড়ি ইউনিয়নের ওমরপুর, আলীনগর, মুসলিম নগর, মানিকছড়ির বাটনাতলী, যোগ্যাছোলা, তিনটহরী ও মানিকছড়ি (সদর) ইউনিয়নের বিভিন্ন ছোট, বড় ও মাঝারি আকারের আম বাগানগুলো ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় সবকটি বাগানেই ঢালে ঢালে ঝুলছে আমের মুকুল। আন্ত সড়কের দু'পাশে ও প্রায় বাড়ির আঙ্গিনার আম গাছগুলোর সবুজ পাতা ঢেকে রয়েছে স্বর্ণালি মুকুলে। মুকুলগুলোতে এখন মৌমাছির গুঞ্জন। শীতের স্নিগ্ধতার মধ্যেই ফাগুলের মৃদু বাসন্তি হাওয়ায় দোল খাচ্ছে স্বর্ণালী মুকুল। আর এইসব বাগান ও মুকুলের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষি ও শ্রমিকরা। মুকুল রক্ষায় ও ভালো ফলন ফলাতে বিভিন্ন ক্ষতিকর পোকামাকড় দমন, কীটনাশক স্প্রে ও নানা পদ্ধতির মাধ্যমে কাজ করছে বাগান মালিকরা।

উপজেলার বাটনাতলী এলাকায় ২৭ একর টিলা ভূমিতে গড়ে তোলা উপজেলার সবচেয়ে বড় আম বাগানের মালিক মো. আবু তাহের জানান, ২০১১ সালে গড়ে তোলা তার বাগানে মোট ১২শ টির বেশি আম গাছ রয়েছে। যা থেকে ২০২১ সালে ৪০ লক্ষ টাকার আম বিক্রি করেছেন। গত বছর আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় বিক্রি হয়েছে ২০ লক্ষাধিক টাকা। আর এ বছর অনেক আগেভাগেই মুকুল এসেছে গাছগুলোতে। অন্যন্য বছরের তুলনা এবছর সবচেয়ে বেশি মুকুল এসেছে। তাই অধিক গুরুত্ব ও বিনিয়োগে চলছে নিয়মিত পরিচর্যা। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে উৎপাদন ও বিক্রিতে গেলো বছরগুলোকে ছাড়িয়ে যাবে এবছর।

পানছড়ির  ওমরপুর গ্রামের আম বাগান মালিক লিটন সরকার  জানান  গত দুই বছরের তুলনায় এ বছর আমের মুকুল ভালো হয়েছে ,আশা করছি ফলনও ভালো হবে। 

ক্ষুদ্র ও মাঝারি বাগান মালিকরা জানান, তুলনামূলকভাবে এবছর সবচেয়ে বেশি ও শতভাগ গাছে মুকুল এসেছে। মাঘের মাঝামাঝিতে বেশির ভাগ মুকুল আসায় ঝরে পড়ার আশঙ্কা কম এবং এগুলো স্থায়ী হবে। আগাম এমন বেশি মুকুল দেখার পর থেকে তাদের মন অনেকটা উৎফুল্ল। এই মুকুল টিকে থাকলে এবার বাম্পার ফলন পাওয়ার আশাবাদি তারা।

এ ব্যাপারে মানিকছড়ি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. হাসিনুর রহমান বলেন, উপজেলার গত মৌসুমে ৪৩০ হেক্টর টিলা ভূমিতে আমের চাষাবাদ হয়েছে। উৎপাদন হয়েছে প্রায় ২৬০০০ মেট্রিক টন। এ বছর আগে-বাগেই আম বাগানে মুকুলে ধরেছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার লক্ষমাত্রা আগের চেয়ে অন্তত ২০% বেশি হবে। তিনি আরও জানান, এই মূহুর্তে মুকুল ও গাছ পরিচর্চায় ভূল করলে ফলন বিপর্যয় হবে। আমের মুকুলের শত্রু হপার পোকা। এর আক্রমণ থেকে বাঁচাতে হলে, ইমিডা ক্লোরোপিট, প্রতি লিটার পানিতে ১মিলি বা আধা মিলি ঔষুধ মিশিশে ছিটাতে হবে। পাশাপাশি ছত্রাক নাশক (ম্যানকোজেব)ছিটালে আরও ভালো গাছে মুকুল আসা থেকে ফল পর্যন্ত কমপক্ষে ৭ বার ঔষধ দিতে হবে।

ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image