আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিনা বাধায় ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের শুরুতে অনেকটা সীমান্তবর্তী ছোট ছোট গ্রামগুলো দখলে নিয়ে নেয় রাশিয়া। খারকিভ শহর থেকে কিছুটা দূরে পাহাড়ে ঘেরা মালায়া রগন তারই একটি। রুশ সেনারা চলে গেলেও, গ্রামটিতে এখনো ফেরেননি বাসিন্দারা। চারদিকে ধ্বংসযজ্ঞের চিহ্ন। গেলে মনে হতে পারে এ যেন এক ভুতুড়ে গ্রাম।
খারকিভ শহর থেকে মালায়া রগনের দূরত্ব ২২ কিলোমিটার। রাশিয়া সামরিক অভিযান শুরুর পর এলাকাটিতে এখন আর কোনো বসতি নেই।
পরপর চার দফায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয় খারকিভের জনপ্রতিনিধি ব্যাচেস্লাভ আনাতোলিভিচের বাড়িতে। গোলার আঘাতে তার ব্যবহার করা গাড়িটিও ঝাঁজরা হয়ে যায়।
খারকিভের উপসংসদ সদস্য ব্যাচেস্লাভ আনাতোলিভিচ জানান, সামরিক সরঞ্জাম নিয়ে রাশিয়ান সৈন্যরা এই এলাকা দিয়েই অগ্রসর হয়েছিল। হাজারের বেশি সেনা সদস্য ছিল সেই ইউনিটে। তখন অবশ্য ইউক্রেনীয় সেনারা এদিকে ছিল না। তাই প্রতিরোধ ছাড়াই গ্রামটিতে তারা ধ্বংসযজ্ঞ চালায়।
তিনি বলেন, বাড়ির ভেতরের দিকে ট্যাংক হামলা চালানো হয়। আমার বাড়ি, গাড়ি আর কিছুই নেই। এমনকি গাড়ির ওয়ার্কশপেও বোমা হামলার চিহ্ন।
মালায়া রগন এলাকায় বর্তমানে শক্ত ঘাঁটি গড়েছে ইউক্রেনীয় সেনারা। সাময়িক স্বস্তি মিললেও নিজেদের বাসভূমে এখনো ফেরেননি বাসিন্দারা।
এদিকে ইউক্রেনের খারকিভে রুশ বাহিনীর দখলকৃত অঞ্চলে হামলা চালিয়ে বেশকিছু এলাকা শত্রুমুক্ত করার দাবি করেছে জেলেনস্কি বাহিনী। এর মধ্যেই বন্দরনগরী ওডেসায় ৬টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এতে বহু হতাহতের আশঙ্কা করা হচ্ছে। যুদ্ধবিমান ধ্বংসেরও পাল্টাপাল্টি দাবি করেছে মস্কো ও কিয়েভ।
শনিবার (৭ মে) খারকিভে রুশ বাহিনীর অবস্থান লক্ষ্য করে একের পর এক হামলা চালায় ইউক্রেনের সেনা সদস্যরা। বেশকিছু অঞ্চল রুশ বাহিনীর হাত থেকে মুক্ত করার দাবি করেছে তারা। অন্যদিকে রাশিয়ার দাবি, এদিন খারকিভের বোহোদুখিভ অঞ্চলে হামলা চালিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের সামরিক সরঞ্জামের একটি বিশাল মজুত ধ্বংস করা হয়েছে। খবর আল জাজিরার।
যুদ্ধবিমান ধ্বংস নিয়েও শনিবার (৭ মে) পাল্টাপাল্টি দাবি করেছে দেশ দুটি। ইউক্রেনের দাবি, একটি দ্বীপে রাখা রুশ যুদ্ধবিমানে হামলা চালিয়ে সেটা সাগরে ডুবিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ হামলার একটি স্যাটেলাইট ফুটেজও প্রকাশ করেছে তারা। তবে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এদিন ইউক্রেনের দুটি যুদ্ধবিমান, তিনটি হেলিকপ্টার এবং দুটি তুর্কি ড্রোন ধ্বংস করেছে রুশ সেনাবাহিনী।
বন্দরনগরী ওডেসায় আবারও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এতে বহু হতাহতের আশঙ্কা করা হচ্ছে। এছাড়া মারিউপোলের অবরুদ্ধ একটি কারখানা থেকে নারী, শিশুসহ সবাইকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানান ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। দীর্ঘ সময় ধরে সেখানে আটকে থেকে খাবার ও পানি সংকটে পড়েছিলেন ইউক্রেনের অনেক নাগরিক।
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: